জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছেন বিচারকরা।
Published : 12 Dec 2020, 01:37 PM
শনিবার সকালে নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইন সংলগ্ন পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সামনের সড়কে মানববন্ধনে অংশ নেন বিচারকরা।
এরপর সেখান থেকে মিছিল নিয়ে তারা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে যান। সেখানে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন।
এই কর্মসূচি পালনের ব্যাখ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান বলেন, “বিচারক হলেও আমরা মানুষ। তাই আজ হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে যখন জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙা হচ্ছে।”
চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, “বিচারকরা একইসাথে বিচারক, তারা বিচার করবে এবং একইসাথে দেশের নাগরিক। নাগরিক হিসেবে বিচারকের একটি দায়িত্ব আছে এই প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হওয়ার।”
‘জাতির পিতার সম্মান, রাখবো আমরা অম্লান’ স্লোগান নিয়ে ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম জেলা কমিটি’র ব্যানারে মানববন্ধন করে বিচারকরা।
জেলা ও দায়রা জজ ইসমাইল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “চট্টগ্রামের একশ বিচারক আজকের এই প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয়েছেন। তারা দেশ এবং জাতিকে জানাতে চাচ্ছে যে বিচারকেরা শুধু বিচার করে না, তারা প্রতিবাদ মিছিলেও অংশ নিতে জানে।
“জাতির জনকের প্রশ্নে বিচারকদের সামনে কোনো আপস নাই। সংবিধান জাতির জনকের এই সম্মান অক্ষুন্ন রাখার জন্য আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছে।”
এই কর্মসূচিতে চট্টগ্রাম জেলা, মহানগর ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতসহ বিভিন্ন আদালতের বিচারকরা অংশ নেন।
শিল্পকলা একাডেমির প্রতিবাদ সমাবেশে মহানগর দায়রা জজ আশফাকুর রহমান বলেন, “গত কয়েকদিনে দেশে একটা ন্যাক্কারজনক উদ্যোগ ও তার প্রতিক্রিয়া দেখেছি আমরা। যেটা আমাদের সবাইকে নাড়া দিয়েছে। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার মত ধৃষ্টতা দেখিয়েছে একটি মৌলবাদী গ্রুপ।
“এই ধরনের প্রতিক্রিয়াশীল গ্রুপ পৃথিবীর যে দেশেই কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, তারা শুধু দেশের নয় ইসলামের ক্ষতি করেছে সবচেয়ে বেশি। তারা জানে না, তাদের জানা কত কম। ইসলামের সবচেয়ে সুন্দর বৈশিষ্ট্য যেখানেই তা গেছে প্রচারের জন্য সেখানকার কৃষ্টি সংস্কৃতিকে ধারণ করে নিয়েছে। কিন্তু এখন কিছু মৌলবাদী গ্রুপ বুঝতেই চাইছে না। ইসলাম প্রচারিত ও প্রসারিত হয়েছে সৌন্দর্যের মধ্যে। কুপমুণ্ডুক কিছু মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে ইসলামের।”
তিনি বলেন, “যখন খুব ছোট ছিলাম, দেখতাম এলাকায় যারা দুষ্টু ছিল, বাবা-মা বলত মাথা ঠাণ্ডা করার জন্য মাদ্রাসায় দাও। এই করতে করতে মাদ্রাসা লাইনটা আমরা শেষ করে ফেলেছি। আমরা আমাদের মেধাবী সন্তানদের এখানে দিই না। একারণে এখন যাদের পাচ্ছি তারা ক্ষতি ছাড়া কোনো উপকার করছে না।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন।