চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের বড় দুই প্রকল্প শিগগিরই শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।
Published : 08 Feb 2018, 06:42 PM
বৃহস্পতিবার রেডিসন ব্লু বে ভিউ হোটেলে আয়োজিত রিহ্যাব ফেয়ারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, বাংলাদেশের দীর্ঘতম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ মার্চ মাসে শুরু হয়ে যাবে।
“চট্টগ্রামের অভিশাপ জলাবদ্ধতা। ফ্লাইওভার দুই বছর পর করলেও কিছু আসবে যাবে না। জলাবদ্ধতা নিরসন করতে না পারলে জনগণ ক্ষমা করবে না। তাই সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করলাম আমাকে সহযোগিতা করুন। তারা রাজি হয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে এ কাজ শুরু করব।”
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগে বিরোধিতার মুখে পড়া এবং জলাবদ্ধতা প্রকল্প নিয়ে ‘অনেক বাধা ও ষড়যন্ত্র’ ছিল বলে জানান তিনি।
আবদুচ ছালাম বলেন, ব্যাংকক থেকে চট্টগ্রামে আসতে লাগে দুই ঘণ্টা। আর বিমানবন্দর থেকে শহরে ঢুকতে লাগে তিন ঘণ্টা। যে গার্মেন্টস ব্যবসার শুরু চট্টগ্রামে তা এখানে এখন নিম্নমুখী।
“এর একটি মাত্র কারণ উন্নত ও নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকা। যখন উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা করার জন্য প্রকল্প নিই তখন অনেকে মানববন্ধন করে।”
ক্ষোভ জানিয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, “চট্টগ্রামে চেম্বারসহ অনেক ট্রেড বডি। তখন আমার পাশে কাউকে দাঁড়াতে দেখি না। আমি একা।
“চট্টগ্রামের ৩০টি পোশাক শিল্প কারখানায় পাঁচজন করে দেড়শ জন মালিক আর ৫০ জন বায়ার। সব মিলিয়ে দুইশ জন। তারা মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে আর লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান করে। তাদের জন্য তিন হাজার কোটি টাকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রয়োজন কি না?”
আবদুচ ছালাম বলেন, যারা এর বিরুদ্ধে বলছেন তারা তো একজনেরও কর্মসংস্থান করেনি। কিন্তু তখন ব্যবসায়ী ভাইয়ের কেউ এগিয়ে এসে কথা বলে না।
জলাবদ্ধতা বিষয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, “প্রতি বছর অনুষ্ঠান করে খাল খনন চলতে থাকে। কিন্তু অভিশাপ থেকে মুক্তি হয় না। এটা আমার কাজ নয়, সিডিএর আওতায় পড়ে না।
“কিন্তু এ সমস্যার সমাধানে দায়িত্বও আসল আমার উপর। তা নিয়েও অনেক ষড়যন্ত্র, অনেক বাধা। এটা ৫৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প। এটা ৮০০০ কোটি টাকায় চলে যাবে। খাল খনন, খাল ও ড্রেন পরিষ্কারে এবার হাত দেব। খালের পাড়ে রাস্তা, প্রতিরক্ষা দেয়াল, সেতু, জলাধার, সিল্ট ট্রেপ, নতুন ড্রেনের নির্মাণ কাজ হবে পরের মৌসুমে।”
২০১৬ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের অন্য পাঁচটি প্রকল্পের সাথে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
লালখান বাজার থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণে ব্যয় হবে দুই হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা।
৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকায় নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয় গত বছরের ৯ অগাস্ট।
‘রিহ্যাবের সমস্যা সমাধান করুন’
সিডিএ চেয়ারম্যান পদে ‘আর বেশিদিন’ নেই জানিয়ে দ্রুত রিহ্যাব চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধান করে নিতে আবাসন ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আবদুচ ছালাম।
তিনি বলেন, “এই পদে আমি ছয় বার আছি। আর বেশিদিন নেই। সিডিএকে বাদ দিয়ে আপনাদের ব্যবসা করা সম্ভব না। সিডিএতে যে সমস্যা তা সমাধানে সরকারের পদক্ষেপ প্রয়োজন নেই। এখানে যারা আছেন তারাই যথেষ্ট।
“আমি যাওয়ার আগে আপনাদের সকল সমস্যার সমাধান করে যেতে পারলে খুশি হব। একটা সাব কমিটি করুন। তারা সিডিএর সাথে সমস্যা সমাধান করবে।”
তিনি বলেন, “আপনারা ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার, নকশা অনুমোদন এবং সব আবাসন প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় আনার কথা বলেছেন। মার্চের মধ্যেই এগুলো সমাধান সম্ভব।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামীন কাজল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রিহ্যাব চট্টগ্রাম অঞ্চলের চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী।
মেলা চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।