রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশের পক্ষে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
Published : 14 Sep 2017, 09:49 PM
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের বাস্তুহারা রোহিঙ্গাদের জন্য বৃহস্পতিবার ভারতের ত্রাণ সামগ্রী হস্তান্তরের পর শ্রিংলা সাংবাদিকদের বলেন, “কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ সন্তোষজনক ফলাফল আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
“বাংলাদেশ ও মিয়ানমার এ বিষয়ে যুক্ত; ভারত সহযোগী (পার্টনার)। উদ্ভূত মানবিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের সমর্থন বাংলাদেশের সাথে আছে।”
চট্টগ্রামে ভারতের হাই কমিশনারের এই বক্তব্যের দিনই মিয়ানমারে চীনের রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে সে দেশের সরকারি সংবাদপত্র নিউ লাইট অব মিয়ানমার বলেছে, রাখাইনের সমস্যার বিষয়টি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে দেখছে বেইজিং।
এক সন্ত্রাসী হামলার পর রাখাইনে মিয়ানমারের সেনা অভিযানে নিপীড়নের শিকার হয়ে তিন সপ্তাহে ৪ লাখের মতো মুসলিম রোহিঙ্গা এরই মধ্যে শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে এসেছে।
এই নতুন ও পুরনো মিলিয়ে আট লাখ শরণার্থীকে নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে তাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ।
মিয়ানমারকে বাধ্য করতে ভারত ও চীনের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর জন্যও বাংলাদেশের অনেকে সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছেন।
শ্রিংলা বলেন, “আমরা মিয়ানমারকে কফি আনান অ্যাডভাইজরি কমিশনের প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছি। এজন্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক সহায়তার প্রস্তাবও করেছি, যাতে রাখাইনে বসবাসকারী সবাই সমানভাবে লাভবান হয়।”
রাখাইনে পরিস্থিতি শান্ত করতে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে থাকা শরণার্থীদের ফেরত নিতে মিয়ানমার সরকারকে সুপারিশ করেছে কফি আনান কমিশন।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে নিয়ে আসা ত্রাণ সামগ্রী বাংলাদেশের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের হাতে হস্তান্তর করেন শ্রিংলা।
চার লাখের মতো শরণার্থীর বাসস্থান, খাবার ও পোশাকের ব্যবস্থা করা যে বাংলাদেশের উপর যে চাপ হতে পারে, তা উপলব্ধির কথাও জানান প্রতিবেশী দেশটির হাই কমিশনার।
শরণার্থীদের যাতে কোনো ধরনের ‘অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তৈরিতে ব্যবহার’ করা না হয়, সে দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে আছি। এই মানবিক বিপর্যয়ে মানবিক সাহায্য নিয়ে আমাদের দুঃসময়ের বন্ধু ভারত পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও সরকারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান ওবায়দুল কাদের।
‘অপারেশন ইনসানিয়াত’ এর আওতায় চাল, ডাল, বিস্কুট, লবণ, চিনি, সাবান, মশারি ও গুঁড়ো দুধসহ বিভিন্ন ধরনের ৫৩ টনপণ্য ত্রাণ হিসেবে পাঠিয়েছে ভারত।
রোহিঙ্গাদের জন্য আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে ত্রাণের আরও কয়েকটি চালান বিমান ও জাহাজে করে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে বলে জানান হাই কমিশনার।