তারা সবাই নগরীর হামজারবাগ এলাকার রহমানীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
Published : 10 Apr 2025, 03:23 PM
চট্টগ্রামে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েও শ্রুতি লেখক জটিলতায় কেন্দ্রে বসে সময় পার করলেন সাত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার এসএসসি পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনে চট্টগ্রাম নগরীর বাংলাদেশ মহিলা সমিতি (বাওয়া) উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা সবাই নগরীর হামজারবাগ এলাকার রহমানীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, নিয়ম না মেনে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা নিজেদের মত করে শ্রুতি লেখক ঠিক করেছেন; যারা কারণে শ্রুতি লেখকদের কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
হাবিবুল হক নামে এক পরীক্ষার্থীর মা শারমিন আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অষ্টম শ্রেণির উপরের শিক্ষার্থীরা শ্রুতি লেখক থাকতে পারেন না, সেটা আমাদের জানা ছিল না। স্কুল থেকেও আগে কিছু বলা হয়নি।
“যার কারণে আমরা নবম- দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শ্রুতি লেখক ঠিক করেছিলাম। কিন্তু গত সোমবার স্কুল থেকে বলা হয়েছে, তারা পারবে না। শ্রুতি লেখক হতে পারবে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।”
শারমিনের দাবি, বিগত বছরগুলোতে বোর্ড থেকে নবম/দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শ্রুতি লেখক হিসেবে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুয়ায়ী এবছর তারা শ্রুতি লেখক ঠিক করেছিলেন।
"আমরা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে বারবার অনুরোধ করার পরও তিনি শ্রুতি লেখকের বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করেননি। গতকাল আমরা শ্রুতি লেখক নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বোর্ডে অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু বোর্ড থেকে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি।”
এদিকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েও লিখতে না পারায় পরীক্ষার্থীদের কেউ কেউ বের হয়ে এসেছিলেন। শারমিন জানান, অভিভাবকরা প্রতিকার চেয়ে পরীক্ষার্থীদের নিয়ে দুপুরে জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়েছেন।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বোর্ডের অনুমতি ছাড়া শ্রুতিলেখক নিয়ে এ সাত শিক্ষার্থী কেন্দ্রে গিয়েছিলেন; যার কারণে কেন্দ্র সচিব তাদের প্রবেশের অনুমতি দিতে পারেননি।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, “আমাদের নীতিমালায় আছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শ্রুতিলেখকরা অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থী হতে হবে। শ্রুতিলেখক যারা থাকবেন- তারা যে ১৮ বছরের নিচে-এ বিষয়ে তাদের অভিভাবকদের এবং স্কুল কর্তৃপক্ষকে প্রত্যয়ন দিতে হয়।
“সেখানে তাদের ক্লাস বিবরণ থাকবে এবং শ্রুতি লেখক হিসেবে অংশ নিলে তাদের কোনো আপত্তি নেই- সে কথাটা লেখা থাকতে হয়।”
অধ্যাপক পারভেজ সাজ্জাদ বলেন, “পরীক্ষার্থীরা শ্রুতি লেখক হিসেবে যাদের নিয়ে এসেছিলেন তারা ইলেভেন- টুয়েলেভ ক্লাসের শিক্ষার্থী। আর সাত শ্রুতি লেখক- সবার প্রত্যয়ন একই হাতের লেখা; যার কারণে বিষয়টি নিয়ে আমাদের সন্দেহ হয়।”
তিনি বলেন, “তারা শ্রুতি লেখক হিসেবে যাদের বোর্ডে এনেছিলেন তাদের অন্য আরেকটি স্কুলের ছাত্র হিসেবে দেখিয়ে প্রত্যয়ন এনেছিলেন। আমরা সে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সাথে যোগাযোগ করেছি, তিনি জানিয়েছেন- শ্রুতি লেখক হিসেবে যাদের আনা হয়েছে- তারা তার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নয়।
"‘মানবিক’ কারণে স্কুল প্যাডে তাদের প্রত্যয়ন দিয়েছিলেন। পরে তিনি প্রত্যয়নটি লিখিতভাবে প্রত্যাহারও করে নিয়েছেন।”
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে রহমানীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জেবুন নেসা খানমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সাড়া দেননি।