দেহ পচে যাওয়ায় মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারছেন না কর্মকর্তারা।
Published : 24 Dec 2024, 02:31 PM
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পারকি সমুদ্র সৈকতে ভেসে এসেছে কয়েকটি মৃত সামুদ্রিক কাছিম।
কয়েকদিন আগে এসব কাছিম মৃত অবস্থায় জোয়ারের সময় সৈকতে ভেসে আসে। বিষয়টি সোমবার জানতে পেরে সেখানে যান বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সদস্যরা।
কাছিমগুলো অলিভ রিডলি প্রজাতির হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে দেহ পচে যাওয়ায় মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারছেন না কর্মকর্তারা।
আনোয়ারার সাংবাদিক নুরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রোববার বিকেল থেকেই পারকি সৈকতের মূল পয়েন্টে পর্যটকরা মৃত কাছিম দেখেন। বেশ বড় আকারের সাতটির মত কাছিম সেখানে দেখা যায়।
পারকি সৈকতের দক্ষিণ অংশে টানেল সার্ভিস এরিয়ার পশ্চিম দিকে এবং লুসাই পার্ক সংলগ্ন অংশে এসব মৃত কাছিম দেখা যায়।
আনোয়ারার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. সমরঞ্জন বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কাছিমগুলো বেশ বড় আকারের। তবে পচে যাওয়ায় চামড়াও উঠে গেছে। গতকাল বিষয়টি বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে জানিয়েছি। এটা তাদের এখতিয়ার।”
চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের প্রতিনিধিরা গিয়ে তিনটি মৃত কাছিম পেয়েছে। সেগুলো পচে গেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ৪-৫ দিন আগে সেগুলো মৃত অবস্থায় জোয়ারে ভেসে এসেছে।
“এগুলো অলিভ রিডলি প্রজাতির কাছিম হবার সম্ভাবনা বেশি। তবে পারকি এলাকায় অলিভ রিডলির কোনো নেস্টিং গ্রাউন্ড নেই। ২০২০ সালেও পারকি সৈকতে একটি মৃত কাছিম ভেসে এসেছিল। জাহাজ বা ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে, ফিশিং ট্রলারের গিয়ারের সাথে লেগে আঘাত পেয়ে মৃত্যু হতে পারে বা ন্যাচারাল ডেথও হতে পারে।”
পচে যাওয়ায় কাছিমগুলোর মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ সম্ভব নয় জানিয়ে দীপান্বিতা ভট্টাচার্য বলেন, সেগুলো সৈকতে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।
“যেহেতু নেস্টিং গ্রাউন্ড নেই এবং মৃত অবস্থায় ভেসে এসেছে, তাই সাগরেই কোনো কারণে কাছিমগুলো মারা গেছে। পরে দেহ সৈকতে এসে আটকে ছিল।”
অলিভ রিডলি জাতের সামুদ্রিক কাছিমের ডিম পাড়ার মৌসুম নভেম্বর থেকে মার্চের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। এ সময়ে পূর্ণিমা বা অমাবস্যার সময় সৈকতে আসে মা কাছিম।
চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে কক্সবাজার সৈকতে ৯৫টি মৃত অলিভ রিডলি কাছিম পেয়েছিল বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বিওআরআই) সদস্যরা।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারবেশন অব নেচার (আইইউসিএন) এর লাল তালিকায় সংকটাপন্ন (vulnerable) হিসেবে চিহ্নিত এই প্রজাতি।
উষ্ণ মহাসাগরীয় অঞ্চলে, বিশেষ করে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগরে অলিভ রিডলি বা জলপাই রঙা সামুদ্রিক কাছিমের বাস।
জন্মের পর থেকে সারাজীবন উন্মুক্ত সাগরেই এরা থাকে। কিন্তু ডিম পাড়ার সময় হলে দল বেঁধে হাজারে হাজারে অলিভ রিডলি মা কাছিম ছুটে যায় জন্ম উপকূলের দিকে।
পুরনো খবর...
অলিভ রিডলি: বংশরক্ষার যাত্রা যখন মরণযাত্রা
কক্সবাজার সৈকতে ৫৬৬ ডিম দিয়ে সাগরে ফিরেছে পাঁচটি কাছিম
এক দিনে ১৮৯০ ডিম পেড়ে সাগরে ফিরল ১৭ 'অলিভ রিডলি'
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ২৪ মৃত কচ্ছপ