Published : 08 Apr 2025, 12:43 AM
হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা চট্টগ্রামের আলোচিত ‘সন্ত্রাসী’ ছোট সাজ্জাদকে সঙ্গে নিয়ে রাউজান ও বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় মাইকিং করেছে পুলিশ।
সোমবার নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় ও আগের দিন রোববার রাতে রাউজানের কদলপুরে ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি করে’ মাইকিং করা হয়। তবে ওই ঘটনার ভিডিও নিয়ে আলোচনা তৈরি হওয়ার পর পুলিশ বলছে, অভিযান থেকে ফেরার পথে লোকজন ভিড় করলে তাদের সরাতে মাইকিং করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওতে দেখা যায়, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, মাথায় হেলমেট, হাতকড়া ও কোমড়ে দড়ি বেঁধে সাজ্জাদকে ঘোরানো হচ্ছে। তার চারপাশে ছিল থানা পুলিশ ও সোয়াট টিমের সদস্যরা।
বিকালে বায়েজিদ এলাকায় তাকে নিয়ে মাইকিং করেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুল ইসলাম। মাইকে তাকে বলতে শোনা যায়, “চাঁদাবাজ-সন্ত্রসীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। কোথাও সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ দেখলে তাদের ঘেরাও করে পুলিশকে খবর দেবেন।”
রোববার রাতেও রাউজানের কদলপুরে একইভাবে মাইকিং করে পুলিশ। সেখানে মাইকে বলা হয়, “কমিশনার স্যারের নির্দেশে আপনাদের এলাকার সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেউ সন্ত্রাসী কার্যক্রম করলে তার পরিণতি সাজ্জাদের মত হবে।”
ভিডিও ছড়ানোর পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। খোদ পুলিশেরই এক কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন সময়ে পুলিশ বড় বড় আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে অভিযানে যেত, যা কেউ জানত না। কিন্তু এ ধরনের কাজ অতীতে কখনো হয়নি।
আসামিকে এভাবে প্রকাশ্যে রাস্তায় হাঁটিয়ে মাইকিং কতটুকু যৌক্তিক, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তবে চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব হোসাইন বলেন, তারা মাইকিং করতে নয়, সাজ্জাদকে নিয়ে অভিযানে গিয়েছিলেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ওসি বলেন, “সাজ্জাদকে নিয়ে অভিযানের কথা শুনে লোকজন তাকে দেখতে ভিড় জমায়। লোকজন সরাতে মাইকিং করা হয়েছে।”
গত ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা শপিং মলে চট্টগ্রামের আলোচিত ‘সন্ত্রাসী’ ছোট সাজ্জাদকে ধরে পুলিশে দেয় লোকজন। সেসময় তাকে চান্দগাঁও থানার একটি খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ মামলাতে রোববার তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছে চট্টগ্রামের আদালত। আর এ দিনই চট্টগ্রামে জোড়া খুনের ঘটনায় ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত ৩০ মার্চ ভোরে নগরীতে প্রাইভেট কার ধাওয়া করে দুইজনকে গুলিয়ে চালিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় মামলার বাদীর অভিযোগ, ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর 'পরিকল্পনায়' ওই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ায় ওই হত্যাকাণ্ড চালানো হতে পারে বলে তাদের ধারণা।
গত জানুয়ারিতে ফেইসবুক লাইভে এসে প্রকাশ্যে থানার ওসিকে পেটানোর হুমকি দেওয়ার দুই দিনের মাথায় ছোট সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল পুলিশ।
আরও পড়ুন-
চট্টগ্রামে জোড়া খুনের মামলায় ছোট সাজ্জাদ গ্রেপ্তার, অন্য মামলায়
চট্টগ্রামে জোড়া খুনের ঘটনায় দুইজন গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে প্রাইভেট কার থামিয়ে গুলি করে ২ জনকে হত্যা
'ছোট সাজ্জাদ ও স্ত্রীর পরিকল্পনায়' গাড়িতে জোড়া খুন: নিহতের মা