“দীর্ঘ সময় ধরে বারবার এখানে দুর্ঘটনা হচ্ছে, শুধু এখানে নয় এই সড়কের অন্য অংশেও। চট্টগ্রাম থেকে আমাদের কক্সবাজার যেতে হলে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লাগছে।”
Published : 02 Apr 2025, 06:57 PM
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার জাঙ্গালিয়ায় দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেখানকার সড়কের অসঙ্গতি চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক।
বুধবার বিকেলে ঘটনাস্থলে যান উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম এ সময় তার সাথে ছিলেন।
পরিদর্শনে গিয়ে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, "আজই সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সাথে এ বিষয়ে আলাপ করব। সড়কে কী অসঙ্গতি আছে তা সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের দেখতে বলেছি। তারা এখানে আছেন। উনারা দেখে দ্রুততম সময়ে করণীয় নির্ধারণ করে জানাবেন।"
দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেককে বিআরটিএ এর পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং সরকারিভাবে আরো ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, "যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চিকিৎসা বাবদ ১৫ হাজার টাকা করে ইতোমধ্যে দিয়েছি। বিআরটিএ এর পক্ষ থেকে তিন লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার জন্য যদি আরো প্রয়োজন হয় সরকার সেটাও দেবে।"
উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, "মর্মান্তিক, দুঃখজনক, বেদনাদায়ক এ ঘটনা আমাদের জাতিকে বিমর্ষ করেছে। আমরা স্বজনদের সাথে সমব্যথী।
"দীর্ঘ সময় ধরে বারবার এখানে দুর্ঘটনা হচ্ছে, শুধু এখানে নয় এই সড়কের অন্য অংশেও। চট্টগ্রাম থেকে আমাদের কক্সবাজার যেতে হলে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লাগছে। আর ঢাকার লোকেরা ফ্লাইটে করে আধা ঘণ্টায় কক্সবাজার পৌঁছাচ্ছে, এটা একটা ডিসক্রিমিনেশনও বটে। এগুলোরও অবসান হওয়া উচিত।"
তিনি বলেন, "আর এখানে যে বেপরোয়া গাড়ি চলছে, এগুলোর স্থান চিহ্নিত করে বিভিন্ন জায়গায় যথাযথ প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করা দরকার। সেটার জন্য সড়ক কর্তৃপক্ষ যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে, আমি বলে যাচ্ছি।"
বুধবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় চট্টগ্রামমুখী বাসের সাথে কক্সবাজারগামী একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলে মাইক্রোবাসে থাকা ৭ জন নিহত হয়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন এবং লোহাগাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন মারা যান।
এর আগে ঈদের দিন সকালে কাছাকাছি স্থানে বাস ও মিনিবাসের সংঘর্ষে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
গাড়ি চালক, সড়ক পরিবহন শ্রমিক নেতা, পুলিশম ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ওই অংশে পাহাড়ি উঁচু-নিচু সড়কে বেশ কিছু বাঁক আছে। এছাড়া লবণ ও মাটি বহনকারী ট্রাক চলাচলের কারণে সেখানে সড়ক পিচ্ছিল থাকে।
ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকদের বহনকারী যানবাহনের চালকরা এই সড়কে গাড়ি চালাতে অভ্যস্ত নন। ফলে তারা বাঁক ও ঢালু সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারান। অতিরিক্ত গতিও দুর্ঘটনার আরেক কারণ বলে পুলিশ মনে করছে।
পুরনো খবর
লোহাগাড়ার জাঙ্গালিয়ায় বারবার কেন দুর্ঘটনা?
লোহাগাড়ার দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে চার জন এক পরিবারের
চট্টগ্রামে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০