যৌতুকের জন্য স্ত্রী হত্যায় স্বামীর ফাঁসির রায়

২০১৮ সালের ২০ এপ্রিল দুপুরে পারভেজের স্ত্রী রোকেয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

চট্টগ্রামে ছয় বছর আগে যৌতুকের জন্য শ্বাসরোধে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।

চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মো. জাকির হোসেন বুধবার এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিত মো. পারভেজ (৩১) চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার চুড়ামনি গ্রামের মো. সোলায়মানের ছেলে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নিখিল কুমার নাথ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আসামি পারভেজ রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিল। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, পারভেজ ছিলেন ইটভাটার পিকআপ চালক। ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রোকেয়া বেগমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

বিয়ের সময় রোকেয়ার পরিবার পারভেজকে তিন লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছিল। এরপরও বিভিন্ন সময় তিনি স্ত্রীর কাছে টাকা দাবি করতেন।

টাকার জন্য পারভেজ নির্যাতন করলে রোকেয়া বিষয়টি তার ভাই মহিউদ্দিনকে জানান। এরপর মহিউদ্দিন আরো এক লাখ টাকা দেন। তাতেও সন্তুষ্ট ছিলেন না পারভেজ। আরো দুই লাখ টাকা যৌতুকের জন্য রোকেয়াকে তিনি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ২০ এপ্রিল দুপুরে পারভেজ টেলিফোনে রোকেয়ার মাকে বলেন, তিনি রোকেয়াকে লাঠি দিয়ে মেরেছের। ওই খবর পেয়ে রোকেয়ার বড় বোন মোস্তফা বেগম পারভেজকে ফোন করলে পারভেজ তাকে বলেন, রোকেয়ার ‘স্ট্রোক’ করেছে।

এরপর রোকেয়ার মা, বোন ও জেঠিমা পারভেজের বাড়িতে গিয়ে দেখেন, রোকেয়ার লাশ খাটের উপর শোয়ানো। তার গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগও দেখতে পান তারা।

এর আগেই পারভেজ বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। এরপর স্থানীয় চৌকিদার পুলিশকে ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় রোকেয়ার ভাই মহিউদ্দিন বাদী হয়ে পারভেজের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ওই মালায় পুলিশ অভিযোগপত্র দিলে বিচার কাজ শুরু হয়।

সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত বুধবার পারভেজকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিল।