গ্রাহক নোমান ই খান আরও অভিযোগ করেন, সরদার বাহাদুর লেইন এলাকার অনেক বাসিন্দার কাছে পানি না থাকার পরও বিল হওয়ায় সেগুলো জমে বিভিন্ন জনের কাছে লাখ টাকাও বকেয়া হয়ে গেছে।
Published : 27 Dec 2023, 05:54 PM
লাইনে পানি না থাকার পরও প্রতি মাসে ওয়াসা থেকে বাসায় বিল পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রামের এক বাড়ি মালিক।
বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে চট্টগ্রাম ওয়াসার গণশুনানি ও মতবিনিময় সভায় এ অভিযোগ করেন দক্ষিণ খুলশী এলাকার সরদার বাহাদুর লেইনের বাড়ি মালিক নোমান-ই আলম খান।
তিনি বলেন, তার বাড়িসহ বেশকিছু বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ওয়াসার পুরনো লাইনে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে না। কিন্তু প্রতি মাসে ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা বিল করা হচ্ছে।
পাশাপাশি তিনি জানান, আগ্রাবাদ সিডিএ এলাকায় যেখানে বসবাস করেন সেখানে ওয়াসার নতুন লাইন স্থাপন করা হয়নি।
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম ফজলুল্লাহ বিভিন্ন অভিযোগ শুনে সেসবের উত্তর দেন।
চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে ওয়াসা পুরনো পানির লাইন সরিয়ে নতুন লাইন স্থাপন করা হয়েছে। জাইকার অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।
চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি ফজলুল্লাহ জানান, বেশিরভাগ জায়গায় জাইকার পাইপ স্থাপন করা হলেও কিছু কিছু জায়গায় করা সম্ভব হয়নি।
নতুন প্রকল্পে সেসব এলাকায় কয়েক মাসের মধ্যে নতুন লাইন স্থাপনের আশ্বাস দেন তিনি।
গ্রাহক নোমান ই খান আরও অভিযোগ করেন, সরদার বাহাদুর লেইন এলাকার অনেক বাসিন্দার কাছে পানি না থাকার পরও বিল হওয়ায় সেগুলো জমে বিভিন্ন জনের কাছে লাখ টাকাও বকেয়া হয়ে গেছে।
পাশাপাশি আগ্রাবাদ সিডিএ এলাকায় তিনি তার বাসায় দুর্গন্ধযুক্ত পানি পাওয়া এবং সরদার বাহাদুর লেইন এলাকা উঁচু হওয়ায় পানি সরবরাহ হয়না বলেও জানান।
অভিযোগ শুনে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল্লাহ বলেন, “পানি না পেলেও লাইন চার্জ হিসেবে একটি ফি দিতে হয়, এটা লাইন চার্জ না। বিষয়টি ওয়াসাকে জানালে তারা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেবে।”
সরদার বাহাদুর লেইনে কয়েক মাসের মধ্যে ট্যাঙ্ক স্থাপন করে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক করার আশ্বাস দিয়ে ওয়াসা তিনি বলেন, রেলওয়ের সাথে কথা হয়েছে সেখানে ট্যাঙ্ক স্থাপনের জন্য জায়গাও পাওয়া গেছে।
এদিকে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ নেই দাবি করে ফজলুল্লাহ বলেন, যদি কোনো স্থানে দুর্গন্ধযুক্ত পানি যায় তাহলে নমুনাসহ অভিযোগ করলে তারা ব্যবস্থা নেবেন।
সভায় ওয়াসার এমডি দাবি করেন, ২০০৯ সালে ৩৭ কোটি লিটার চাহিদার বিপরীতে ওয়াসার উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১২ কোটি লিটার। বর্তমানে ৪৮ কোটি লিটার চাহিদার বিপরীতে সক্ষমতা দাঁড়িয়েছে ৫৬ কোটি লিটার।
তিনি জানান, চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি উৎপাদন ব্যবস্থা আইএসও সনদ পেয়েছে, যেটি বাংলাদেশে আর কোনো সংস্থার নেই।
তিনি আরও দাবি করেন, পানির গুণগত মান ঠিক রাখতে প্রতিমাসে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে ২৪০টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়।
এছাড়াও ওয়াসার বাস্তবায়িত, বাস্তবায়নাধীন এবং প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
গণশুনানিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রকৌশল) বিষ্ণু কুমার সরকার, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) শাহিদা ফাতেমা চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম প্রমুখ।