৫৫ বছর সুলাল চৌধুরী স্থানীয়ভাবে কবিরাজি চিকিৎসা দিতেন। আজাদী বাজারে অভয়া ঔষধালয় নামে একটি দোকান ছিল তার।
Published : 03 Jul 2024, 02:28 PM
আট বছর আগে চট্টগ্রামের রাউজানে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে এক ব্যক্তিকে খুনের ঘটনায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এইচ এম শফিকুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মিঠু চৌধুরী, সুমন চৌধুরী, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. এরশাদ হোসেন। এদের মধ্যে মো. দেলোয়ার হোসেন ছাড়া বাকিরা পলাতক।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত সুদ্বীপ চৌধুরী রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার আরেক আসামি ইলিয়াস ইলুকে খালাস দিয়েছে আদালত।
মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী সুদীপ কান্তি নাথ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে ২০১৬ সালের ২৫ জুন রাতে বাড়ি ফেরার সময় সুলাল চৌধুরীকে কুপিয়ে খুন করে লাশ ডোবায় ফেলে দেয় আসামিরা৷
“মামলার ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রায় দেন। রায়ে চার আসামির মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অন্য এক আসামিকে খালাসের আদেশ দেওয়া হয়েছে।”
নিহত সুলাল চৌধুরী (৫৫) রাউজানের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চিকদাইর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় আজাদী বাজারের অভয়া ওষুধালয় নামের ফার্মেসির মালিক ছিলেন এবং কবিরাজ ছিলেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬ সালের ২৫ জুন রাত ৯টার দিকে নিজ দোকান থেকে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নোয়াজিশপুর-চিকদাইর সড়কের প্রিয়তোষ চেয়ারম্যান বাড়ির পশ্চিমে ব্রিজের পাশে আসামিরা সুলাল চৌধুরীর উপর হামলা করেন।
ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুলালের গলায়, মাথায় ও পিঠে কুপিয়ে ব্রিজের উত্তর পাশের ডোবায় ফেলে চলে যান হামলাকারীরা। স্থানীয়রা রাত ১০টার দিকে রাস্তার উপর রক্তের দাগ, এক জোড়া স্যান্ডেল ও একটি রক্তাক্ত মোবাইল ফোন সেট দেখতে পায়।
নিহত সুলালের ছেলে সৌরভ চৌধুরী মামলার এজাহারে বলেছেন, “বাবা বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি করে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাবার স্যান্ডেল ও মোবাইল সেটটি দেখতে পাই। পরে পাশের ডোবায় বাবার মৃতদেহ দেখতে পাই।”
খবর পেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে পুলিশ ডোবা থেকে লাশ উদ্ধার করে।
পরে পুলিশ তদন্ত শেষে ছয় আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, মামলার আসামি মিঠু চৌধুরীর সঙ্গে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ ছিল সুলাল চৌধুরী।
আসামিদের মধ্যে সুদ্বীপ চৌধুরী ও রিকশাচালক ইলিয়াস ইলু আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।