এ নিয়ে এরশাদ মাহমুদের দখলে থাকা প্রায় ১০০ একর জমি দখলমুক্ত করার তথ্য দিয়েছে বন বিভাগ।
Published : 28 Aug 2024, 08:42 PM
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের ভাই এরশাদ মাহমুদের দখলে থাকা আরও ৩০ একর জমি উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
এ নিয়ে তিন দিনে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় বন বিভাগের খুরুশিয়া রেঞ্জে এরশাদ মাহমুদের দখলে থাকা প্রায় ১০০ একর জমি দখলমুক্ত করার তথ্য দিল বন বিভাগ।
বন বিভাগের কর্মকর্তাদের দাবি, শুধু খুরুশিয়া রেঞ্জের চারটি বন বিটের অধীনে এরশাদ প্রায় ২১২ একর জমি দখল করেছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে এসব জমি দখল করে খামার, পুকুর, বাগান, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়।
বুধবার সকাল থেকে তৃতীয় দিনের মত বনের জমি উদ্ধারে অভিযানে নামে বন বিভাগ। বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলা অভিযানে বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া, খুরুশিয়া ও চট্টগ্রাম শহর রেঞ্জের ৪০ জন কর্মী ও শতাধিক শ্রমিক অংশ নেন।
এদিন রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া ইউনিয়নের দুধপুকুরিয়া বিট এলাকা থেকে প্রায় ৩০ একর বনের জমি উদ্ধার করা হয়। এসব জমি দখলে নিয়ে মালটা ও কাজু বাদামের বাগান গড়ে তোলা হয়। পাহাড়ি ছড়ার পানি আটকে তৈরি করা হয় বিশাল পুকুর।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের খুরুশিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন সময় ধীরে ধীরে পাহাড়ি বনের এই বিশাল এলাকা দখলে নেন এরশাদ মাহমুদ।
“অভিযানে গিয়ে আমরা দেখতে পাই বনের জমিতে পানি আটকে বিশাল পুকুর করে মাছের প্রজেক্ট গড়ে তোলা হয়েছে। নালা কেটে সেই পুকুরের পানি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
পাহাড়ি বনের ওই জমিতে প্রায় ৮-১০ হাজার মালটা ও কাজু বাদামের গাছ থাকার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, “বন বিভাগ বনে ফলদ গাছ লাগায় না। সেগুলো থাকলে আবার বহিরাগতরা গাছ নিতে বনে প্রবেশ করার আশঙ্কা থাকত। তাই গাছগুলো কাটা হয়েছে। আমরা নতুন করে সেখানে বনায়ন করব।”
এর আগে মঙ্গলবার পদুয়ার সুখবিলাস গ্রামে অভিযান চালিয়ে এরশাদের দখলে থাকা ১৫ একর জমি উদ্ধার করেছিল বন বিভাগ।
তারও আগে সোমবার ওই গ্রামের ৫০ একর জমি উদ্ধার করা হয়। সেখানে বনভূমি দখল করে গয়াল পালনের জন্য ছয়টি ঘর তৈরি করেছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাই।
পাশাপাশি রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কের পাশে দশমাইল এলাকায় বন বিভাগের ৫ একর জমি দখল করে মুক্তিযোদ্ধা পার্ক ও রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলা হয়। সেখানে তিনটি পুকুর, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক ও রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলা হয়েছিল, যা সোমবার উচ্ছেদ করে বন বিভাগ।
খুরুশিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আশরাফুল বলেন, “আমাদের রেঞ্জে খুরুশিয়া, পদুয়া, সুখবিলাস ও দুধপুকুরিয়া এই চার বিটের মোট ২১২ একর জমি দখল করেছিলেন এরশাদ মাহমুদ।
“এরমধ্যে যেসব জমিতে স্থাপনা ছিল তা গত তিন দিনে উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাকি জমিগুলোতে তেমন স্থাপনা নেই। আশাকরি দুয়েকদিনের মধ্যে বাকি জমিও দখলমুক্ত করা সম্ভব হবে।”
দীর্ঘদিন ধরে এসব জমি দখলে থাকলেও তা নিয়ে বন বিভাগ এর আগে মামলা করেনি। তবে খুরুশিয়া রেঞ্জের ২১২ একর জমি উদ্ধার করতে দখল উচ্ছেদের জন্য ২০২৩ সালে জেলা প্রশাসক বরাবরে চিঠি দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন এই বন কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, গত তিন দিনে যেসব জমি উদ্ধার হয়েছে এতদিন সেগুলো দখলে রাখা নিয়ে মামলা করা হবে শিগগির।
আরও পড়ুন