৭৮ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ইংলিশ স্পিনারদের মধ্যে টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া ডেরেক আন্ডারউড।
Published : 15 Apr 2024, 11:03 PM
ওপারে পাড়ি জমিয়েছেন ডেরেক আন্ডারউড। ৭৮ বছর বয়সে মারা গেছেন ইংল্যান্ডের স্পিনারদের মধ্যে টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া এই ক্রিকেটার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বিবৃতি দিয়ে শোক প্রকাশ করেছে লিখেছে, “ডেরেক আন্ডারউড দেশের সর্বকালের সেরা স্পিনারদের একজন হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।”
টেস্ট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা বাঁহাতি স্পিনারদের একজন মনে করা হয় আন্ডারউডকে। তর্কসাপেক্ষে ইংল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসের সেরা স্পিনার বলা যায় তাকে। ৮৬ টেস্টে ২৯৭ উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ৬০ ম্যাচে ২৫৫ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে অফ স্পিনার গ্রায়েম সোয়ান। এই সংস্করণে ইংলিশ স্পিনারদের মধ্যে দুইশ উইকেট আছে আর কেবল মইন আলির, ৬৮ ম্যাচে ২০৪টি।
টেস্টে ইংলিশদের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারির তালিকায় আন্ডারউড আছেন ষষ্ঠ স্থানে। সবার ওপরে টেস্ট ইতিহাসের সফলতম পেসার জেমস অ্যান্ডারসন (৭০০)।
১৯৬৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় আন্ডারউডের। ক্যারিয়ারের সবশেষ টেস্ট খেলেন তিনি ১৯৮২ সালে, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। দেশের হয়ে ২৬টি ওয়ানডে খেলে নেন ৩২ উইকেট।
১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৭৩ সালের অগাস্ট পর্যন্ত আইসিসির টেস্ট বোলারদের র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ছিলেন আন্ডারউড। এই সংস্করণে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন তিনি ১৯৭৪ সালে, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫১ রান দিয়ে নেন ৮ উইকেট।
সত্তর দশকের শেষভাগে কেরি প্যাকারের ওয়ার্ল্ড সিরিজে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয় আন্ডারউডকে। ১৯৮২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ‘রেবেল ট্যুর’ এ না গেলে ইংল্যান্ডের হয়ে আন্ডারউডের উইকেটসংখ্যা আরও বাড়ত।
নিখুঁত লাইন-লেংথের জন্য আলাদা পরিচিতি পাওয়া আন্ডারউডের বলে বেশ গতিও ছিল। তিনি সবচেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর ছিলেন বৃষ্টিস্নাত উইকেটে। সতীর্থদের কাছে ‘ডেডলি’ নামে পরিচিত ছিলেন আন্ডারউড।
১৯৬৮ সালের অ্যাশেজ সিরিজের শেষ ম্যাচটি আন্ডারউডের ক্যারিয়ারের স্মরণীয় টেস্ট। বৃষ্টিবিঘ্নিত সেই ম্যাচের মাঠ খেলার উপযোগী করে তুলতে অবদান রেখেছিলেন দর্শকেরা। সেদিন ২৭ বলের মধ্যে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে একাই হারিয়ে দেন আন্ডারউড। ম্যাচ শেষ হতে স্রেফ ৬ মিনিট বাকি থাকতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংলিশরা।
আন্ডারউডের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের পুরোটা কাটে কাউন্টি দল কেন্টে। ১৭ বছর বয়সে এই সংস্করণে পথচলা শুরু করেন তিনি। ক্লাবটির হয়ে তিন দশকে (১৯৬৩ থেকে ১৯৮৭) ৯০০ এর বেশি ম্যাচ খেলেন এই স্পিনার। ১৯.০৪ গড়ে উইকেট নেন ২ হাজার ৫২৩টি।
১৯৮৭ সালে ক্রিকেটকে বিদায় বলা আন্ডারউড দুটি ওয়ানডে কাপ ও তিনটি করে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ, ন্যাশনাল লিগস এবং বেনসন ও হেজেস কাপ জেতেন। ১৯৮১ সালে এমবিই স্বীকৃতও পান তিনি।
খেলোয়াড়ি জীবন শেষে ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবে কাজ করেন আন্ডারউড। ২০০৬ সালে তাকে কেন্টের ক্লাব সভাপতি করা হয়। দুই বছর পর মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) প্রেসিডেন্টও হন তিনি। ২০০৯ সালে আইসিসি হল অব ফেমে জায়গা পান এই ইংলিশ ক্রিকেটার।