বিপর্যয়ে দাঁড়িয়ে মিলারের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে তিন অঙ্কের জাদুকরী ছোঁয়া পেলেন ডেভিড মিলার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2023, 01:26 PM
Updated : 16 Nov 2023, 01:26 PM

প্যাট কামিন্সের স্লোয়ার ডেলিভারি ডিপ মিড উইকেট দিয়ে চালিয়েই এর ঠিকানা বুঝে গেলেন ডেভিড মিলার। বল সীমানা পেরিয়ে যেতেই তিনি দিলেন গর্জন। ব্যাট ঘুরিয়ে করলেন প্রাথমিক উদযাপন। এরপরই যেন কাজ আরও বাকি বুঝতে পেরে নীরব হয়ে গেলেন তিনি। সেই কাজ অবশ্য করতে পারেননি। পরের বলেই ধরেন ড্রেসিং রুমের পথ। তবে এর আগেই চাপের মুখে খেলেন রেকর্ডময় এক ইনিংস। 

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ওপরের সারির ব্যাটসম্যানদের পুরোপুরি ব্যর্থতার দিন বুক চিতিয়েই লড়াই করলেন মিলার। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে খেললেন টুর্নামেন্টের ইতিহাসেই দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা ইনিংসগুলোর একটি। ছয় নম্বরে নেমে ১১৬ বলে তিনি করলেন ১০১ রান।

৮ চার ও ৫ ছক্কায় সাজানো ইনিংসটি বিশ্বকাপের নক আউটে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা। ২০১৫ আসরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮২ রান করেছিলেন ফাফ দু প্লেসি। সেটি ছাড়িয়ে এবার বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টের নক আউট ম্যাচে ছয় বা তার নিচে নেমে সেঞ্চুরি করা প্রথম ব্যাটসম্যানও হলেন ৩৪ বছর বয়সী মিলার।

ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে তিনি যখন ব্যাটিংয়ে নামেন স্রেফ ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন কঠিন বিপদে দক্ষিণ আফ্রিকা। স্বভাববিরুদ্ধ ধীর ব্যাটিংয়ে তিনি সামাল দেন শুরুর চাপ। অন্য প্রান্তে হাইনরিখ ক্লসেন আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করায় কিছুটা সহজ হয় মিলারের কাজ।

পঞ্চম উইকেটে মিলার-ক্লসেনের জুটিতে আসে ৯৫ রান। দলকে একশ পার করার পর ট্র্যাভিস হেডের এক ওভারে ফেরেন ক্লসেন ও মার্কো ইয়ানসেন। আর কোনো স্বীকৃত ব্যাটসম্যান না থাকায় তখন একা বনে যান মিলার। 

সেখান থেকে পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নেন মারকুটে এই ব্যাটসম্যান। ৭০ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে তার লাগে আর ৪৫ বল। ছয় সেঞ্চুরির তিনটিই তিনি করলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।  

বিশ্বকাপে মিলারের এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন তিনি। মাঝের ১৯ ইনিংসে দুইবার ফিফটি পেলেও শতক ছোঁয়া হয়নি তার। 

মিলারের সেঞ্চুরির সঙ্গে ক্লসেনের ৪৭ রানের ইনিংসে ২১২ রানের পুঁজি পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের আর কেউ ২০ রানও করতে পারেনি।

অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক। কামিন্স, জশ হেইজেলউড, হেড ধরেছেন ২টি করে শিকার। নতুন বলে দুর্দান্ত বোলিং করা হেইজেলউড ৮ ওভারে তিন মেডেনসহ স্রেফ ১২ রান খরচ করেছেন।

প্রোটিয়াদের এই ইনিংসে যেন ফিরে এলো ১৯৯৯ বিশ্বকাপের স্মৃতি। ওই আসরের সেমি-ফাইনালে আগে ব্যাট করে ২১৩ রান করে অস্ট্রেলিয়া। পরে দক্ষিণ আফ্রিকাও থামে ২১৩ রানে। ম্যাচ টাই হওয়ায় সুপার সিক্সে শ্রেয়তর নেট রান রেটের সৌজন্য ফাইনালের টিকেট পায় অস্ট্রেলিয়া।