টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দলে মাহমুদউল্লাহর জায়গা অবধারিতই মনে করেন খালেদ মাহমুদ, এমনকি টেস্ট ক্রিকেটেও অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানকে দেখতে চান এই বিসিবি পরিচালক।
Published : 01 Feb 2024, 07:56 PM
টেস্ট ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্ক আড়াই বছর আগেই চুকিয়ে ফেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলে সুযোগ পান না প্রায় দেড় বছর ধরে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে তার মেলবন্ধন আপাতত শুধু ওয়ানডে দিয়ে। তবে তার একসময়ের ‘মেন্টর’ ও বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদের মতে, এখনও তিন সংস্করণেই খেলার সামর্থ্য আছে মাহমুদউল্লাহর। আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের জায়গা অবধারিতই দেখেন তিনি।
খালেদ মাহমুদ যাকে সব সংস্করণের উপযুক্ত মনে করছেন, কয়েক মাস আগেও জাতীয় দলে তার জায়গা ছিল না কোনো সংস্করণেই। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপ দিয়ে তার ক্যারিয়ারে পুনরুজ্জীবন হয়েছে বলা চলে। গত সেপ্টেম্বরে দেশের মাঠে নিউ জিল্যান্ড সিরিজে মোটামুটি ভালো করে সুযোগ পান বিশ্বকাপ দলে। এরপর বাংলাদেশের চরম ব্যর্থতার বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন দলের সেরা পারফরমার।
বিশ্বকাপের পর চোটের কারণে মাঠের বাইরে থাকার পর ফরচুন বরিশালের হয়ে ফেরেন এই বিপিএলে। দলের প্রথম ম্যাচে দুই ছক্কায় ১৯ রানের ক্যামিও খেলে অপরাজিত থাকেন। পরের ম্যাচে দুটি করে চার ও ছক্কায় করেন ২৭ রান। পরের দুটি ম্যাচে ব্যর্থ হলেও সবশেষ ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে তিনি তান্ডব চালান ব্যাট হাতে। ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে ফিরে গিয়ে খেলেন ২৪ বলে ৫১ রানের ইনিংস।
বিপিএলের এই পারফরম্যান্সে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলেও ৩৮ ছুইঁছুইঁ এই ক্রিকেটারের জায়গা ফিরে পাওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। খালেদ মাহমুদের চোখে অবশ্য শুধু সাদা বলে নয়, সব সংস্করণেই এখনও যোগ্য অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।
বিপিএলে দুর্দান্ত ঢাকার কোচ এই বিসিবি পরিচালক সিলেটে বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, টেস্ট থেকে মাহমুদউল্লাহর বিদায় এখনও পোড়ায় তাকে।
"আমি সবসময় বলি, মাহমুদউল্লাহ তিন সংস্করণেই খেলার সামর্থ্য থাকা ক্রিকেটার। এখানে কোনো ভুল নেই। আমার খুবই একটা কষ্ট যে, মাহমুদউল্লাহ টেস্ট খেলে না। ও অবসর নিয়েছে, এটা আমি এখনও মানতে পারি না। আমি মনে করি যে, ওর এখনও টেস্ট খেলার সামর্থ্য আছে এবং বাংলাদেশের এরকম অভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটার টেস্টে আমাদের অনেক দরকার।"
"তবে, হয়তো ওর ব্যক্তিগত কারণে বা… যেহেতু বয়সও একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই একটা সংস্করণ ছেড়ে অন্য দুটি সংস্করণে বা সাদা বলের ক্রিকেটে মনোযোগ দেওয়া… এটাও একটা কারণ হতে পারে। সেদিক থেকে এটা রিয়াদেরই সিদ্ধান্ত।”
২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া মাহমুদউল্লাহ ২০২২ এশিয়া কাপের পর থেকে এই সংস্করণে বাংলাদেশ দলের বাইরে। সম্প্রতি বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে জায়গা পাওয়ার জোর দাবিদার অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।
জালাল ইউনুসের সঙ্গে একমত খালেদ মাহমুদও। এবারের বিপিএলে বরিশালের হয়ে মূলত ফিনিশারের ভূমিকা পালন করছেন মাহদউল্লাহ। জাতীয় দলে এখানে বহু বছরের ঘাটতি রয়ে গেছে এখনও। এই পজিশনেই মাহমুদউল্লাহর কোনো বিকল্প দেখেন না তিনি।
“অবশ্যই রিয়াদের যে অভিজ্ঞতা ও যে ছন্দে আছে, তাতে ওর পজিশনে ওকে চ্যালেঞ্জ করার মতো ক্রিকেটার নেই, যদি সত্যি কথা বলি। তাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রিয়াদ দলে অটো-চয়েস হতেই পারে। আমাদের সেভাবেই চিন্তা করতে হবে।"
এবারের বিপিএলের শুরুটা ভালো করেছেন আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমও। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরে যাওয়া এই ক্রিকেটার এখনও পর্যন্ত চলতি আসরে দুইশ রান করা একমাত্র ব্যাটসম্যান। ৫ ইনিংসে ৫০.৫০ গড় ও ১৩৩.৭৭ স্ট্রাইক রেটে করেছেন তিনি ২০২ রান।
মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকের পারফরম্যান্সকে তরুণদের জন্য প্রেরণা ও শিক্ষা বলে মনে করেন খালেদ মাহমুদ।
“রিয়াদ ও মুশফিক অনেক অভিজ্ঞ। ওরা সবকটি বিপিএলেই খেলেছে। আমি যেটা বলছি যে, ওদের পারফরম্যান্স ছোটদের জন্য প্রেরণাও হতে পারে যে, বড় ভাইরা যদি এই মানসিকতা ও তাড়না নিয়ে ক্রিকেট খেলতে পারে, সবার জন্যই শিক্ষা হতে পারে এটা।”