আইরিশদের উড়িয়ে নিজেদের কাজ করে রাখল নিউ জিল্যান্ড

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে নিজেদের শেষ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সহজেই জিতেছে কেন উইলিয়ামসনের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Nov 2022, 07:28 AM
Updated : 4 Nov 2022, 07:28 AM

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যাট হাতে দলকে সামনে থেকে পথ দেখালেন কেন উইলিয়ামসন। স্ট্রাইক রেট নিয়ে আলোচনায় থাকা নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক উপহার দিলেন দারুণ এক ইনিংস। সঙ্গে বাকিদের টুকটাক অবদানে বড় সংগ্রহ গড়ল তারা। পরে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আয়ারল্যান্ডকে সহজেই হারাল কিউইরা।

অ্যাডিলেইডে শুক্রবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের জয় ৩৫ রানে। ১৮৫ রানের পুঁজি গড়ে আইরিশদের তারা থামিয়ে দেয় ১৫০ রানে। 

এই জয়ে এক নম্বর গ্রুপ থেকে সেমি-ফাইনালের দৌড়ে নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করে রাখল নিউ জিল্যান্ড। এখন চেয়ে থাকতে হবে গ্রুপের বাকি দুই ম্যাচের দিকে। কারণ, তাদের সমান ৭ পয়েন্ট করে হতে পারে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডেরও। তখন বিবেচনায় আসবে রান-রেট, যেখানে এখন পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে উইলিয়ামসনের দল। 

তিনে নেমে ৩ ছক্কা ও ৫ চারে ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন উইলিয়ামসন। ক্যারিয়ারের ষোড়শ ফিফটিতে তিনিই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। 

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নিউ জিল্যান্ড দ্বিতীয় ওভারেই হারাতে পারত উইকেট। মিড-অফে ডেভন কনওয়ের ক্যাচ নিতে পারেননি হ্যারি টেক্টর। 

চতুর্থ ওভারে গ্যারেথ ডেলানির ওপর চড়াও হন ফিন অ্যালেন। চার বলে মারেন তিন চার। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারকে ছক্কার পর চার হাঁকিয়ে পরের বলেই মিড অফে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন বিস্ফোরক এই ওপেনার (১৮ বলে ৩২)। ভাঙে ৫২ রানের উদ্বোধনী জুটি। 

১ রানে জীবন পাওয়া কনওয়ে ও উলিয়ামসন এরপর টানেন দলকে। দুইজনের ৪৪ রানের জুটি শেষ হয় ধুঁকতে থাকা কনওয়ের বিদায়ে। 

মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলেই ডেলানিকে ছক্কায় ওড়ান গ্লেন ফিলিপস। পরের ওভারে ব্যারি ম্যাককার্থিকে মারেন টানা দুটি চার। তাকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি লেগ স্পিনার ডেলানি। 

এক প্রান্তে নিজের মতো খেলে যান উইলিয়ামসন। ফিওন হ্যান্ডকে চার-ছক্কা মারা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান পরে দুই চার হাঁকান জর্জ ডকরেলকে। ম্যাককার্থিকে স্লগ সুইপে ছক্কায় উড়িয়ে স্পর্শ করেন ফিফটি। পরের দুই বলে মারেন চার ও ছক্কা। 

১৮ ওভার শেষে কিউইদের রান তখন ৩ উইকেটে ১৭৩। দুইশ করা খুব সম্ভব। কিন্তু পরের ওভারে তিন বলে উলিয়ামসন, জেমস নিশাম ও মিচেল স্যান্টনারের ফিরিয়ে টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করেন জশ লিটল। 

অস্ট্রেলিয়া আসরে দ্বিতীয় ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক করা ষষ্ঠ বোলার এখন এই পেসার। শেষ দুই ওভারে আয়ারল্যান্ড দেয় কেবল ১২ রান। 

রান তাড়ায় আয়ারল্যান্ডের শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। অ্যান্ডি বালবার্নি ও পল স্টার্লিংয়ের উদ্বোধনী জুটিতে ৮ ওভারে ৬৮ রান তুলে ফেলেছিল তারা। 

কিন্তু টানা তিন ওভারে তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকে যায় আইরিশরা। স্যান্টনারকে কাট করার চেষ্টায় বোল্ড হয়ে যান ৩ ছক্কায় ৩০ রান করা বালবার্নি। বাঁহাতি এই স্পিনার পরের ওভারে ফেরান টেক্টরকে। মাঝের ওভারে ইশ সোধিকে সুইপ করে বোল্ড ১ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৭ রান করা স্টার্লিং। 

এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে আয়ারল্যান্ড। এতে লক্ষ্যের ধারেকাছেও যেতে পারেনি বালবার্নির দল। ৪৭ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারায় তারা। এই হারে এখানেই শেষ হয়ে যায় আসরে তাদের পথচলা। 

নিউ জিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন লকি ফার্গুসন। দুটি করে প্রাপ্তি টিম সাউদি, স্যান্টনার ও সোধির। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৮৫/৬ (অ্যালেন ৩২, কনওয়ে ২৮, উইলিয়ামসন ৬১, ফিলিপস ১৭, মিচেল ৩১*, নিশাম ০, স্যান্টনার ০, সাউদি ১*; লিটল ৪-০-২২-৩, অ্যাডায়ার ৪-০-৩৯-১, ম্যাককার্থি ৪-০-৪৬-০, ডেলানি ৪-০-৩০-২, হ্যান্ড ২-০-২২-০, ডকরেল ২-০-১৮-০) 

আয়ারল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৫০/৯ (স্টার্লিং ৩৭, বালবার্নি ৩০, টাকার ১৩, টেক্টর ২, ডেলানি ১০, ডকরেল ২৩, ক্যাম্পার ৭, হ্যান্ড ৫, অ্যাডায়ার ৪, ম্যাককার্থি ৬*, লিটল ৮*; বোল্ট ৪-০-৩৮-০, সাউদি ৪-০-২৯-২, ফার্গুসন ৪-০-২২-৩, স্যান্টনার ৪-০-২৬-২, সোধি ৪-০-৩১-২) 

ফল: নিউ জিল্যান্ড ৩৫ রানে জয়ী 

ম্যান অব দা ম্যাচ: কেন উলিয়ামসন