অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি অধিনায়কের মতে, অস্ট্রেলিয়ান বোলিং আক্রমণের চ্যালেঞ্জের জবাব ভালোভাবেই দিতে পেরেছে ইংল্যান্ডের ‘বাজবল।’
Published : 18 Aug 2023, 01:21 PM
একদল আঁকড়ে ধরেছে প্রথাকে। চিরায়ত পথে হেঁটেই খুঁজেছে সাফল্যের ঠিকানা। আরেক দল ভরসা রেখেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ভেলায় এগিয়ে যাওয়ার কৌশলে। এবারের অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের পুরো বিপরীত ঘরানার ক্রিকেটের তুমুল লড়াই দারুণ উপভোগ করেছেন রিকি পন্টিং। সিরিজের ২-২ ফলাফলকে উপযুক্ত বলেই মনে করেন তিনি। তবে ইংল্যান্ডের ‘বাজবল’ ক্রিকেটের জয়গান অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি এই অধিনায়কের কণ্ঠেও। বাজবলের জবাব খুঁজে অস্ট্রেলিয়ানরা কখনও কখনও নাকাল হয়েছে বলেও মনে করেন পন্টিং।
তুমুল আলোড়ন জাগানো এই সিরিজে প্রথম দুই টেস্ট জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। প্রথাগত ঘরানার ক্রিকেট খেলে সিরিজ জয়ের দুয়ারে চলে যায় তারা। ইংল্যান্ডের বাজবল তখনও পর্যন্ত মনে হচ্ছিল অনেকটা অকার্যকর। তবে এরপর বাজবল দিয়েই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। তৃতীয় টেস্ট জিতে নেয় তারা। চতুর্থ টেস্টে বৃষ্টিতে প্রায় দুই দিনের খেলা ভেস্তে না গেলে হয়তো জিতত তারাই। এরপরও হাল না ছেড়ে শেষ টেস্ট জিতে ইংলিশরা সিরিজ শেষ করে সমতায়।
ধারাভাষ্যকার হিসেবে খুব কাছ থেকেই এবারের অ্যাশেজ দেখেছেন পন্টিং। এসইএন রেডিওর ‘তাসি ব্রেকফাস্ট’ শো-তে তিনি শোনালেন সেই অভিজ্ঞতা, যেখানে সঞ্চালকদের একজন ছিলেন আরেক সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক টিম পেইন।
পন্টিং অকপটেই বললেন, অ্যাশেজে এবার বাজবল দিয়ে ইংল্যান্ড ভালো বিপাকে ফেলেছিল অস্ট্রেলিয়াকে।
“পুরো বিপরীত ঘরানার দুটি দলে খেলা দেখাটা ছিল দারুণ অভিজ্ঞতা। বাজবল নিয়ে অনেক আলোচনা ছিল এবং ইংল্যান্ড কোন পথ বেছে নেবে, অস্ট্রেলিয়ার এই মানের বোলিং আক্রমণের সামনে তাদের বাজবল টিকতে পারবে কি না, এসব আলোচনা ছিল। পেছন ফিরে তাকিয়ে আমার মনে হয়, (বাজবল) সম্ভবত তা পেরেছে। বিভিন্ন সময় এটি (বাজবল) অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের, কোচদের এবং অধিনায়ককে মাথা চুলকাতে বাধ্য করেছে যে, কীভাবে এটির জবাব দেবে।”
ওভালে শেষ টেস্টে বল বদলানোর বিতর্কটি নিয়ে অবশ্য তখন থেকেই সোচ্চার পন্টিং। নিজের সেই ভাবনায় এখনও অটল এই ব্যাটিং গ্রেট।
“আমার মনে হয়, এই সিরিজে ২-২ বেশ ন্যায্য ফল। যদিও কিছুটা বিতর্কের অবকাশ আছে শেষ টেস্টে বল বদলানো নিয়ে। যেভাবে এটা হয়েছে, ইংল্যান্ডকে তা বাড়তি সুবিধা উপহার দিয়েছে, যা তাদের পাওয়া উচিত ছিল না। তবে সিরিজজুড়ে যে পর্যায়ের ক্রিকেট হয়েছে, তাতে ২-২ সম্ভবত উপযুক্ত ফলই।”
পন্টিংয়ের মতে, ২-০তে পিছিয়ে থাকার পরও ইংলিশ টপ অর্ডারের আগ্রাসী ব্যাটিং সিরিজে বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। বিশেষ করে, আলাদা করে বললেন তিনি ক্রলির কথা।
“আমার মনে হয়, তাদের টপ অর্ডার ব্যাটিং (পার্থক্য গড়ে দিয়েছে)… তাদেরকে থামাতে মানিয়ে নিয়ে ধুঁকতে হয়েছে আমাদের। প্রতিটি ইনিংসেই বেন ডাকেট ও জ্যাক ক্রলি যেভাবে শুরু করে, ইংল্যান্ডকে তা সত্যিকার অর্থেই উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়ান বোলিং আক্রমণকে শুরুতেই চাপে ফেলে দিয়েছে। মোমেন্টাম যখন এভাবে গড়ে উঠেছে, অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য ফিরে আসা কঠিন ছিল।”
“জ্যাক ক্রলিকে অনেক কৃতিত্ব দিতেই হবে। সবচেয়ে বেশি চাপে থেকে এই সিরিজ শুরু করেছিল সে। ম্যানচেস্টারে ১৮০ রানের যে ইনিংস সে খেলেছে, টেস্ট ম্যাচে যতটা ভালো ব্যাটিং দেখা যায়, ততটাই ভালো ছিল তা… যেটা বলেছি, প্যাট কামিন্স ও তার দল ভেবে পায়নি যে কীভাবে ক্রলির সামনে বল করবে।”