বিকেএসপিতে জয়ের সুবাস পাচ্ছে সিলেট বিভাগ।
Published : 19 Oct 2022, 08:22 PM
একার চেষ্টায় দলকে টানলেন নাহিদুল ইসলাম, হাঁকালেন সেঞ্চুরি। তবু সতীর্থ ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় পারলেন না প্রতিপক্ষের রান টপকে যেতে। প্রথম ইনিংসে লিড পাওয়া বরিশাল মোহাম্মদ আশরাফুল, সোহাগ গাজীর ব্যাটে খুলনাকে বড় লক্ষ্য দেওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচের তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বরিশালের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৯৫ রান। ৬ উইকেট হাতে নিয়ে তারা এগিয়ে আছে ২৩০ রানে।
বরিশাল প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ২৪৮ রানে। জবাবে খুলনা ২১৩ রানে গুটিয়ে গেলে ৩৫ রানের লিড পায় তারা।
দলের তারকা ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার মিছিলে একাই বুক চিতিয়ে লড়েছেন নাহিদুল। দুই উইকেট হাতে নিয়ে খেলতে নেমে তৃতীয় দিন ৪৫ রান করেছে খুলনা। এর মধ্যে নাহিদুল একাই করেছেন ৪১ রান। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ১২৯ রানে থেমেছেন ২৯ বছর বয়সী এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
বরিশালের প্রথম ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করা ফজলে মাহমুদ রাব্বি (১৫) ও সালমান হোসেন ইমন (০) এবার তেমন কিছু করতে পারেননি। আবারও হতাশ করেছেন ওপেনার রাফসান আল মাহমুদ (১৭)।
ইনিংস সূচনা করতে নেমে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন আশরাফুল। সব মিলিয়ে ৮ ইনিংস পর পাওয়া ফিফটিতে ৫৫ রানে অপরাজিত আছেন তিনি। সোহাগ গাজী ৫ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কায় ৫৯ বলে করেছেন ৬৪ রান। এই দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৮৯।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন শেষে)
বরিশাল ১ম ইনিংস: ২৪৮
খুলনা ১ম ইনিংস: ৮২.১ ওভারে ২১৩ (দ্বিতীয় দিন শেষে ১৬৯/৮) (নাহিদুল ১২৯, আশিকুর ৩, হালিম ০*; কামরুল রাব্বি ১৭-৩-৩১-২, রুয়েল মিয়া ১৫.১-৩-৫২-৩, তানভির ২২-৫-৩৯-২, সালমান ৩-০-১৪-০, মনির ১১-২-২৫-০, সোহাগ ১৪-৪-৪৩-২)
বরিশাল ২য় ইনিংস: ৭০ ওভারে ১৯৫/৪ (রাফসান ১৭, আশরাফুল ৫৫*, ফজলে রাব্বি ১৫, সালমান ০, মইন ২৮, সোহাগ ৬৪*; আশিকুর ৮-৪-৮-০, জিয়াউর ৪-২-৫-০, শেখ মেহেদি ১৭-৭-৪৮-০, হালিম ১২-১-২০-০, মৃত্যুঞ্জয় ৮.৫-২-৩০-১, নাহিদুল ১০-৪-১৮-১, টিপু ৯.১-১-৩৩-১, মিঠুন ১-০-১৭-০)
তানজিমের ৫ উইকেট, জয়ের পথে সিলেট
বিকেএসপিতে স্পিনারদের দাপটের মাঝে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেট পেয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব। ঢাকার বিপক্ষে ৫৩ রান খরচায় ৫ উইকেট নিয়েছেন ১৯ বছর বয়সী এই পেসার। যার সুবাদে জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে সিলেট বিভাগ।
ম্যাচের তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে সিলেটের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১১০ রান। জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন আরও ১০৮ রান।
প্রথম ইনিংসে ঢাকার ১২৮ রানের জবাবে সিলেট করেছিল ১৬৭ রান। পরে দ্বিতীয় ইনিংসে ঢাকা অলআউট হয়েছে ২৫৬ রানে। ফলে সিলেটের সামনে লক্ষ্য ২১৮ রানের।
২ উইকেটে ৮৮ রান নিয়ে খেলতে নেমে দিনের প্রথম বলেই ফিরে যান ঢাকার রকিবুল হাসান। এক ওভার পরে বিদায় নেন সাইফ হাসান। দুজনকেই বিদায় করেন করেন তানজিম। হতাশ করেন প্রথম রাউন্ডে ৯০ রানের ইনিংস খেলা নাদিফ চৌধুরীও (৬)।
একার লড়াইয়ে দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার শুভাগত হোম চৌধুরী। সেঞ্চুরির আশা জাগালেও তাকে করতে দেননি তানজিম। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ১৫২ বলে ৮৯ রানের ইনিংস খেলেন শুভাগত। এটি তার প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের ৩৩তম ফিফটি।
পরে রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই তৌফিক খান তুষার ও আসাদুল্লা আল গালিবের উইকেট হারায় সিলেট। অমিত হাসানকে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন অভিজ্ঞ ওপেনার ইমতিয়াজ হোসেন। তবে দলীয় ৬৯ রানে ফিরে যান অমিত (২৩)।
এরপর আর বিপদ ঘটতে দেননি অধিনায়ক জাকির হাসান ও ডানহাতি ওপেনার ইমতিয়াজ। দিন শেষে ইমতিয়াজ ৪২ ও জাকির অপরাজিত রয়েছেন ২০ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন শেষে)
ঢাকা ১ম ইনিংস: ১২৮
সিলেট ১ম ইনিংস: ১৬৭
ঢাকা ২য় ইনিংস: ৮৪.৪ ওভারে ২৫৬ (দ্বিতীয় দিন শেষে ৮৮/২) (সাইফ ১৮, রকিবুল ২৫, তাইবুর ৯, শুভাগত ৮৯, নাদিফ ৬, মাহিদুল ২৩, সুমন ১৫, নাজমুল অপু ৬*, এনামুল ০; খালেদ ১৬-৪-৩৭-০, আবু জায়েদ ১৩.৪-১-৪১-২, নাবিল ২৫-৪-৫৬-২, তানজিম ১৬-৩-৫৩-৫, ১৪-৪-৫৪-১)
সিলেট ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২১৮) ৩৮ ওভারে ১১০/৩ (ইমতিয়াজ ৪২*, তৌফিক ১২, আসাদুল্লাহ আল গালিব ০, অমিত ২৩, জাকির ২০*; সুমন ৭-১-২২-২, নাজমুল অপু ১৬-৩-৪৭-০, তাইবুর ৪-১-৭-১, শুভাগত ৫-০-১৭-০, সাইফ ৪-৩-২-০, এনামুল ২-১-৩-০)
শেষ দিনে হারের শঙ্কায় ঢাকা মেট্রো
প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ঢাকা মেট্রো। ইনিংস পরাজয় এড়ানোর ভালো সম্ভাবনাও জাগিয়েছে তারা। তবে, শেষ দিনে হারের শঙ্কাও উঁকি দিচ্ছে দলটির সামনে।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ১৯১ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে ঢাকা মেট্রো। রাজশাহীর চেয়ে এখনও ৪১ রানে পিছিয়ে তারা।
প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৩৪ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ঢাকা মেট্রো। জবাবে মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরিতে ৩৬৬ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় রাজশাহী, পায় ২৩২ রানের বিশাল লিড।
প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ সাদমান ইসলাম এবার ৫২ রান করেছেন। তবে আবারও ব্যর্থ ঢাকা মেট্রোর অধিনায়ক নাইম শেখ (২)।
পঞ্চম উইকেটে ৮৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছেন মার্শাল আইয়ুব ও জাহিদুজ্জামান খান। অভিজ্ঞ মার্শাল ৫৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ৫১ রান নিয়ে শেষ দিন ব্যাট করতে নামবেন।
চলতি জাতীয় লিগের প্রথম সেঞ্চুরিতে ১০৮ রান নিয়ে শুরু করা মুশফিক দিনের দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান। ২৪৬ বলে ১১০ রান করেন তিনি। ফরহাদ রেজার ব্যাট থেকে আসে ৬৩ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন শেষে)
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ১৩৪
রাজশাহী ১ম ইনিংস: ১৩৬.৩ ওভারে ৩৬৬ (দ্বিতীয় দিন শেষে ৩৩৩/৬) (মুশফিকুর রহিম ১১০, ফরহাদ ৬৩, তাইজুল ১২, শফিকুল ৯*, নাহিদ ৪; আবু হায়দার ২৭-৬-৫৮-১, গালিব ২৭-২-৭০-৩, মানিক ১২-০-৩৯-০, শরিফউল্লাহ ৩৬.৩-৫-৮১-২, রাকিবুল ৩২-৫-১০৩-২, শামসুর ২-০-২-০)
ঢাকা মেট্রো ২য় ইনিংস: ৬৫ ওভারে ১৯১/৪ (মাহফিজুল ৫, সাদমান ৫২, নাইম শেখ ২, শামসুর ১৭, মার্শাল ৫৯, জাহিদুজ্জামান ৫১; নাহিদ ১৫-৩-৫১-১, শফিকুল ৯-০-৩২-০, তাইজুল ২৩-৫-৬৯-২, ফরহাদ ৮-১-১৮-০, মেহেরব ১-০-৬-০, তৌহিদ ৯-২-১৩-১)