৫১১ রানের লক্ষ্যে ছুটে ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে বাজে অবস্থায় বাংলাদেশ।
Published : 24 Mar 2024, 05:00 PM
সিলেট টেস্টে ব্যাটে-বলে বাজে পারফরম্যান্সের বিব্রতকর পরাজয়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ। শেষ ইনিংসে ৫১১ রানের লক্ষ্যে ছুটে পঞ্চাশ ছোঁয়ার আগেই হারিয়েছে তারা ৫ উইকেট।
ধানাঞ্জায়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসের জোড়া শতকে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১৮ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে লঙ্কানরা এগিয়ে ছিল ৯২ রানে।
প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা ধানাঞ্জায়া ও কামিন্দু দ্বিতীয় ইনিংসেও করেন পুনরাবৃত্তি। প্রথম ইনিংসে দুজনই করেছিলেন ১০২। এবার ধানাঞ্জায়া করেন ১৭৯ বলে ১০৮। আট নম্বরে নেমে ১৬ চার ও ৬ ছক্কায় ২৩৭ বলে ১৬৪ রান করেন কামিন্দু।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ রোববার দিন শেষ করে ৫ উইকেটে ৪৭ রানে।
৫ উইকেট নিয়ে ২১১ রানে এগিয়ে থেকে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে শ্রীলঙ্কা। নাইটওয়াচম্যান বিশ্ব ফার্নান্দো আউট হয়ে যান আগের দিনের দুই রানের সঙ্গে আর দুই রান যোগ করে।
পরের উইকেটের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা হয় অনেকটা সময়। প্রথম সেশনে আর কোনো উইকেট পড়েনি। ধানাঞ্জায়া ও কামিন্দুর জুটিতে শ্রীলঙ্কার লিড ছুটতে থাকে চারশর পানে।
৯৪ রানে ধনাঞ্জায়ার গ্লাভস ছুঁয়ে বল জমা পড়ে লিটন কুমার দাসের গ্লাভসে। কিন্তু বাংলাদেশের কিপার আবেদনই করেননি।
১৬৪ বলে শতরান স্পর্শ করেন ধানাঞ্জায়া। ১২ সেঞ্চুরি এই ম্যাচ শুরু করা ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি এখন ১৪টি।
সেঞ্চুরির পরপর দ্বিতীয় নতুন বলে সহজ ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তবে শরিফুল ইসলামের বলে সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি নাহিদ রানা। তবে একটু পরই লঙ্কান অধিনায়ক বিদায় নেন মেহেদী হাসান মিরাজের অতি নিরীহ এক শর্ট বলে ক্যাচ দিয়ে।
প্রথম ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি জুটি গড়া দুজন এবার যোগ করেন ১৭৩ রান।
এরপর প্রাবাথ জায়াসুরিয়াকে নিয়ে ৬৭ রানের জুটি গড়েন কামিন্দু। ক্যারিয়ারের আগের ১০ টেস্টে যার সর্বোচ্চ ছিল ১৬ রান, সেই জায়াসুরিয়া এবার করেন ২৫।
কামিন্দুর শতরান আসে ১৭১ বলে। ২০২২ সালে অভিষেক টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একমাত্র ইনিংসে ৬১ রান করার পর আর সুযোগ পাচ্ছিলেন না তিনি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৬১.২৪ গড়ে প্রায় চার হাজার রান করা ব্যাটসম্যান এবার দলে ফিরেই করলেন জোড়া সেঞ্চুরি।
পরপর দুই বলে জায়াসুরিয়া ও লাহিরু কুমারাকে ফিরিয়ে লঙ্কান ইনিংস শেষের কাছে নিয়ে যান মিরাজ। কিন্তু শেষ জুটিতেও বাংলাদেশকে যথেষ্ট যন্ত্রণা দেন কামিন্দু। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলের লিড পাঁচশ পার করান তিনি।
শেষ পর্যন্ত কামিন্দুর বিদায়েই শেষ হয় ইনিংস। শেষ জুটিতে আসে ৫২ রান, তাতে কামিন্দুর অবদানই ৪৮।
বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে। প্রথম ওভারে শূন্য রানে ফেরেন মাহমুদুল হাসান জয়। পরের ওভারে বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে দেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। একই পথ ধরেন পড়ে জাকির হাসান ও শাহাদাত হোসেনও।
৩৭ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর নেমে প্রথম বলেই ডাউন দা উইকেটে গিয়ে অবিশ্বাস্য এক শট খেলে উইকেট ছুড়ে আসেন লিটন কুমার দাস।
মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলাম এরপর দিনে বাকি সময় কাটিয়ে দেন কোনোরকমে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন শেষে):
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ২৮০
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৮৮
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: (আগের দিন ১১৯/৫) ১১০.৪ ওভারে ৪১৮ (ধানাঞ্জয়া ১০৮, ভিশ্ব ৪, কামিন্দু ১৬৪, জায়াসুরিয়া ২৫, কুমারা ০, রাজিথা ৪*; শরিফুল ২১-২-৭৫-১, খালেদ ১৮-২-৪৬-১, নাহিদ ২০-১-১২৮-২, তাইজুল ২০.৪-২-৭৫-২, মিরাজ ২৯-৮-৭৪-৪, মুমিনুল ১-১-০-০, শান্ত ১-০-৫-০)।
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫১১) ১৩ ওভারে ৪৭/৫ (জয় ০, জাকির ১৯, শান্ত ৬, মুমিনুল ৭*, শাহাদাত ০, লিটন ০, তাইজুল ৬*; ভিশ্ব ৭-৩-১৩-৩, রাজিথা ৩-০-১৯-১, কুমারা ৩-১-৬-১)।