আমার দলকে ভালোবাসি, আমার দেশের মানুষের হাসি ভালোবাসি : মুস্তাফিজ

৪ উইকেট নিয়ে ৪ বছর পর ওয়ানডেতে ম্যাচ সেরা হয়ে অভিজ্ঞ পেসার বললেন, এভাবেই নিজের সেরাটা দিয়ে সবার মুখে হাসি ফোটাতে চান তিনি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2023, 03:14 AM
Updated : 15 May 2023, 03:14 AM

৪ বছর পর ওয়ানডেতে ম্যান অব দা ম্যাচের পুরস্কার! এমন নয় যে, মাঝের সময়টায় দলের জয়ে অবদান রাখেননি কখনও। তবে চেনা সেই মুস্তাফিজুর রহমানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না অনেক দিন ধরেই। অবশেষে জ্বলে উঠলেন তিনি পুরনো দিনগুলিকে বর্তমানে ফিরিয়ে এনে। দুর্দান্ত বোলিংয়ে দলকে জেতালেন। তিনি হাসলেন, তিনি হাসালেন। পাশাপাশি শোনালেন প্রত্যয়, এভাবেই নিজের সেরাটা দিয়ে হাসি ফোটাতে চান সবার মুখে। 

একসময় সীমিত ওভারে বাংলাদেশের পেস আক্রমণের মূল অস্ত্র ছিলেন মুস্তাফিজ। সেই তিনি এখন ধার ও ধারাবাহিকতা হারিয়ে দলেই অনিয়মিত। এই দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও সফলতম পেসার তিনি। কিন্ত আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে একাদশেই সুযোগ পাননি। তা নিয়ে প্রশ্নও ওঠেনি খুব একটা। দল তার অভাব তেমন বোধ করেনি। শেষ ম্যাচেও একাদশে জায়গা পেলেন মূলত দল ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে পেসারদের খেলাচ্ছে বলে। 

তার ভেতরে কি দহন হচ্ছিল? কোনো জেদ বা তাড়না অনুভব করছিলেন! বলা কঠিন। তবে যেভাবেই হোক, বল হাতে দেখা গেল সেই সেরা সময়ের মুস্তাফিজকে। প্রথম স্পেলে দলকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিলেন। শেষ স্পেলে তো ছিলেন দুর্দান্ত।

হ্যারি টেক্টরকে ফিরিয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত যখন বহুকাঙ্ক্ষিত ব্রেক থ্রু এনে দেন দলকে, এরপর প্রয়োজন ছিল দ্রুত আরও কয়েকটি উইকেট। শান্তর ওই ওভার শেষেও ৮ ওভারে লাগত কেবল ৪৯ রান। লর্কান টাকার দুর্দান্ত খেলছিলেন তখনও। মুস্তাফিজ দলের সেই চাওয়া মেটান নিখুঁতভাবে। পরপর দুই ওভারে কার্টিস ক্যাম্পার ও বিপজ্জনক জর্জ ডকরেলকে ফেরানোর পর নিজের শেষ ওভারে থামান ফিফটি করা টাকারকে। 

৩-০-৯-৩, মুস্তাফিজের এই স্পেলই দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় জয়ের দিকে। সব মিলিয়ে ৪৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা।

ওয়ানডেতে সবশেষ সেরার স্বীকৃতি পেয়েছিলেন তিনি সেই ২০১৯ সালের মে মাসে, বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। 

ম্যাচ সেরার পুরস্কার বিতরণী আয়োজনেও দেখা গেল সেই পুরনো মুস্তাফিজকে। ছোট ছোট করে মজার উত্তর। শেষ স্পেলে বল হাতে নেওয়ার সময় দলকে জেতানোর বিশ্বাস ছিল কি না, এই প্রশ্নে আত্মবিশ্বাসী জবাব, “আমার তো এটা নরমালই… সবসময়ই তো করি!”

শেষ ম্যাচে মাঠে নেমে দারুণ কিছু করবেন, এই ভাবনা আগের দিন থেকেই তার ছিল বলে দাবি করলেন, “এক দিন আগে থেকেই আমি ভাবছিলাম যে ৫ উইকেট নেব।” 

ম্যাচ সেরার ৭৫০ ডলার দিয়ে কী করবেন, ধারাভাষ্যকার অ্যালান উইলকিন্সের মজার এই প্রশ্নে হাসিমুখে মুস্তাফিজ বললেন, “শপিং করব…।” 

ম্যাচ শেষের এই চটকদার পর্ব শেষে নিজের মনের কথা মুস্তাফিজ প্রকাশ করলেন সামাজিক মাধ্যমে। 

“আমার দলকে আমি ভালোবাসি। আমার দেশের মানুষের মুখের হাসি ভালোবাসি। চেষ্টা করব নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য এবং বারবার আপনাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য।”