দক্ষিণ আফ্রিকা-পাকিস্তান সিরিজ
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ১০ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলেছে স্বাগতিকরা।
Published : 06 Jan 2025, 10:00 PM
আগের দিনের সেঞ্চুরিকে বেশিদূর টেনে নিতে পারলেন না শান মাসুদ। ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হলেন সালমান আলি আগা, মোহাম্মদ রিজওয়ানরা। সম্মিলিত চেষ্টায় ইনিংস পরাজয় এড়াতে পারলেও প্রতিপক্ষকে বড় লক্ষ্য দিতে পারল না পাকিস্তান। অল্প রান তাড়ায় অনায়াস জয় তুলে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
কেপ টাউন টেস্টে সোমবার ১০ উইকেটে জিতেছে প্রোটিয়ারা। পাকিস্তানের দেওয়া ৫৮ রানের লক্ষ্য ৪৩ বলে ছুঁয়ে ফেলেছে তারা।
প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার ৬১৫ রানের জবাবে মাত্র ১৯৪ রানে গুটিয়ে ফলো অনে পড়ে পাকিস্তান। সেখান থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে লড়াই করলেও, ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারল না তারা। ১ উইকেটে ২১৩ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করে সফরকারীরা গড়ে ৪৭৮ রানের ইনিংস।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে অনায়াসে ছোট লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২ ছক্কা ও ৪টি চারে ৩০ বলে ৪৪ রান করে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফেরেন ডেভিড বেডিংহ্যাম। ১৪ রানে অপরাজিত এইডেন মার্করাম।
দুই টেস্টের সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে ছাড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা। এনিয়ে টানা ৭টি টেস্ট জিতল তারা।
নতুন দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে দশম ওভারে খুররাম শাহজাদকে হারায় পাকিস্তান। মার্কো ইয়ানসেনের বাড়তি লাফানো বলে পয়েন্টে ধরা পড়েন ‘নাইটওয়াচম্যান’ শাহজাদ (৩ চারে ১৮)। ওই ওভারের শেষ বলে নতুন ব্যাটসম্যান কামরান গুলামের ক্যাচ নিতে পারেননি প্রথম স্লিপে থাকা বেডিংহ্যাম।
৪ রানে জীবন পাওয়া গুলাম উইকেটে থিতু হয়ে বিদায় নেন। ৪টি চারে ২৮ রান করা ব্যাটসম্যানের স্টাম্প ভেঙে দেন কাগিসো রাবাদা। ভাঙে শান মাসুদের সঙ্গে তার ৪৩ রানের জুটি।
আগের দিন সেঞ্চুরি করা মাসুদ পরে সাউদ শাকিলকে নিয়ে বাড়ান দলের রান। কিউনা মাফাকার বলে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিলে লাঞ্চের আগে শাকিলকেও ফেরাত পারত দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩ উইকেটে ৩১২ রান নিয়ে প্রথম সেশন শেষ করে পাকিস্তান।
দ্বিতীয় নতুন বল নেওয়ার ১১ বলের মধ্যে দুই থিতু ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেয় প্রোটিয়ারা। শাকিলকে বিদায় করে ৫১ রানের জুটি ভাঙেন রাবাদা। মাফাকার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে থামে মাসুদের ১৭ চারে গড়া ১৪৫ রানের চমৎকার ইনিংস।
চাপে পড়া দলের হাল ধরার চেষ্টা চালান রিজওয়ান ও সালমান। দুইজনে গড়েন ৮৮ রানের জুটি। ৪১ রান করা রিজওয়ানকে ফিরিয়ে জমে যাওয়া এই যুগলবন্দি ভাঙেন কেশাভ মহারাজ। অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার কয়েক ওভার পর ফিরিয়ে দেন ৫ চারে ৪৮ রান করা সালমানকেও।
প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা চালানো আমের জামালও (৭ চারে ৩৪) মহারাজের শিকার। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মির হামজাকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে দেন রাবাদা। ম্যাচের প্রথম দিনে চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়া ওপেনার সাইম আইয়ুব এবারও ব্যাটিংয়ে নামেননি।
দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট নেন রাবাদা ও মহারাজ। দুটি প্রাপ্তি মার্কো ইয়ানসেনের। দুই ম্যাচেই চমৎকার বোলিং করে সিরিজ সেরার পুরস্কার জিতে নেন এই পেসার।
রান তাড়ায় নেমে ষষ্ঠ বলে চার মেরে শুরু বেডিংহ্যামের আগ্রাসী ব্যাটিং। পরে তিনি ছক্কায় ওড়ান সালমানকে। আব্বাসকে ওভারে দুই চারের পর সালমানকে মারেন টানা চার ও ছক্কা। শাকিলকে চার মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ১২ টেস্টের ক্যারিয়ারে প্রথমবার ওপেন করতে নামা বেডিংহ্যাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৬১৫
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১৯৪
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: (ফলো অনের পর) ১২২.১ ওভারে ৪৭৮ (আগের দিন ২১৩/১) (মাসুদ ১৪৫, শাহজাদ ১৮, কামরান ২৮, শাকিল ২৩, রিজওয়ান ৪১, সালমান ৪৮, জামাল ৩৪, হামজা ১৬, আব্বাস ০*, সাইম আহত অনুপস্থিত; রাবাদা ২৫.১-২-১১৫-৩, ইয়ানসেন ২৪-০-১০১-২, মুল্ডার ১২-১-৩৮-০, মাফাকা ১৩-০-৪৭-১, মহারাজ ৪৫-৫-১৩৭-৩, মার্করাম ৩-০-১৪-০)
দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫৮) ৭.১ ওভারে ৬১/০ (বেডিংহ্যাম ৪৭*, মার্করাম ১৪*; আব্বাস ২-০-১৯-০, সালমান ৩-০-২৫-০, গুলাম ২-০-১৩-০, শাকিল ০.১-০-৪-০)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ১০ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ২ টেস্টের সিরিজ ২-০তে জয়ী দক্ষিণ আফ্রিকা
ম্যান অব দা ম্যাচ: রায়ান রিকেলটন
ম্যান অব দা সিরিজ: মার্কো ইয়ানসেন