ওই দুঃসহ অভিজ্ঞতার পর নিজের মধ্যে লড়াকু মানসিকতার বিকাশ ঘটান ইংলিশ পেসার।
Published : 30 Jul 2023, 08:42 PM
ওভাল টেস্টের চতুর্থ দিন সকালে মিচেল স্টার্ককে পুল করে ছক্কা মারলেন স্টুয়ার্ট ব্রড। শেষ পর্যন্ত সেটিই হয়ে রইল ব্যাট হাতে তার পেশাদার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ বল। ইংলিশ পেসারের ক্যারিয়ারের শুরু দিকে এই ছক্কাই আলোড়ন তুলেছিল ক্রিকেট বিশ্বে। সেই অভিজ্ঞতা যদিও বড্ড তেতো; টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে তার এক ওভারে যে ৬ ছক্কা মেরেছিলেন যুবরাজ সিং। দুঃসহ সেই ঘটনা তাকে কীভাবে বদলে দিয়েছিল, বিদায় বেলায় তাই শোনালেন ব্রড।
২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডারবানে ভারতের বিপক্ষে সুপার এইটের ওই ম্যাচের আগেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের। ভারতের ইনিংসের শেষের আগের ওভারে ব্রডকে ৬ ছক্কা হাঁকান যুবরাজ। টি-টোয়েন্টিতে ওভারে ৬ ছক্কা হজম করা প্রথম বোলার হয়ে যান ব্রড।
তখনও পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়নি ব্রডের। সময়ের পরিক্রমায় তিনিই হয়ে ওঠেন টেস্ট ইতিহাসের সফল বোলারদের একজন। নাম লেখান অনেক রেকর্ড-অর্জনে।
স্রেফ দ্বিতীয় পেসার হিসেবে টেস্টে ৬০০ উইকেটের মাইলফলক তিনি স্পর্শ করেন চলতি অ্যাশেজে। ২০১৬ সালের পর ইংল্যান্ডের হয়ে সাদা বলে আর খেলেননি তিনি। তবু ১২১ ওয়ানডেতে উইকেট ১৭৮টি, ৫৬ টি-টোয়েন্টিতে শিকার ৬৫ উইকেট।
ওভালে শেষ টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে ৩৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার জানিয়ে দেন, চলমান টেস্টই তার পেশাদার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। পরে তার সংবাদ সম্মেলনে ওঠে ১৬ বছর আগে ওভারে ৬ ছক্কা হজমের প্রসঙ্গ। এটিকে ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবেই দেখেন তিনি।
“হ্যাঁ, অবশ্যই খুব কঠিন দিন ছিল সেটি। আমার বয়স কত ছিল, ২১ বা ২২? আমি অনেক কিছু শিখেছি, বুঝতে পারি যে, একজন আন্তর্জাতিক পারফরমার হিসেবে আমার মধ্যে খুব বেশি কিছু নেই। আমার প্রস্তুতিতে আমি তাড়াহুড়ো করতাম…আমার মনোযোগ ছিল না।”
“ওই অভিজ্ঞতার পরই আমি নিজের মধ্যে লড়াকু মানসিকতা গড়ে তোলার চেষ্টা শুরু করি। তারপরও, এমন কিছু না ঘটলেই ভালো হতো। মনকে বোঝাতে যেটা আসলে বেশি সাহায্য করেছে, সেটা হলো আমাদের জন্য ওই ম্যাচটি ছিল নিয়মরক্ষার। তাই আমার কখনও মনে হয়নি যে, আমিই আমাদেরকে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দিয়েছি। তবে ওই ঘটনা আমাকে আরও লড়াকু হিসেবে গড়ে তুলেছে এবং আমাকে অনেক বেশি এগিয়ে নিয়েছে।”
এক্ষেত্রে বেন স্টোকসের উদাহরণও টানলেন ব্রড। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে শেষ ওভারে স্টোকসের প্রথম ৪ বলে ৪ ছক্কা হাঁকিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জিতিয়েছিলেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েইট। সেই স্টোকসই পরে হয়ে যান ইংল্যান্ডের ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক।
“ক্যারিয়ারে বড় ধরনের উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেলে এবং স্টোকসির (বেন স্টোকস) মতো একজন খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারের দিকে তাকালে দেখা যায়, তিনিও এমন কিছু করেছেন। শেষ পর্যন্ত মূল কথাটা হলো ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা, খারাপ দিনগুলিকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ়তা। ১৫ বা ১৬ বছরে একটি বিষয় আমি নিশ্চিতভাবে বুঝতে পেরেছি যে, ক্রিকেটে ভালো দিনের চেয়ে খারাপ দিনগুলি বেশি হবে। তাই ভালোভাবে খারাপ দিনগুলির মোকাবেলা করতে হবে, যেন ভালো দিনগুলি বৃদ্ধি পায়।”