টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
নেপালকে গুঁড়িয়ে দেওয়া বোলিংয়ে রেকর্ড বইয়ে পাতা ওলট পালট করলেন তানজিম হাসান।
Published : 17 Jun 2024, 10:50 AM
কুশাল ভুর্তেলের ব্যাটের কানায় লেগে প্রথম বলেই বাউন্ডারি ‘হজম’ করলেন তানজিম হাসান। এরপর টানা ১৯ বলে তার বিপক্ষে ব্যাট থেকে রান নিতে পারল না নেপাল! বিপরীতে পড়ল ৩টি উইকেট। স্পেলের শেষ বলে তানজিম ধরলেন আরও এক শিকার। একইসঙ্গে গড়লেন একগাদা রেকর্ড।
তানজিমের আগুনে বোলিংয়ের দিন ব্যাটসম্যানদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেন মুস্তাফিজুর রহমানও। দুই পেসারের উজ্জ্বল পারফরম্যান্সে মাত্র ১০৬ রানের পুঁজি নিয়েও অনায়াস জয়ে সুপার এইটে নাম লেখাল বাংলাদেশ। তানজিমের মতো দলগতভাবেও বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেসব রেকর্ড
১০৬
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এর চেয়ে কম রান করে জয়ের নজির নেই আর কোনো। চলতি আসরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১১৩ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকার ৪ রানে জয় ছিল আগের রেকর্ড।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর এর চেয়ে কম রান করে জয় আছে দুটি। ২০১৪ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৬ রান করে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০৫ রান করে জিতেছিল জিম্বাবুয়ে।
৩
চার ম্যাচে ৩ জয়ে সুপার এইটে নাম লেখাল বাংলাদেশ। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, এর আগে কখনও এক বিশ্বকাপে তিনটি ম্যাচ জিততে পারেনি তারা!
২০১৪, ২০১৬, ২০২১ ও ২০২২ আসরে দুইটি করে ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ।
৮৫
১০৭ রানের লক্ষ্যে মাত্র ৮৫ রানে গুটিয়ে যায় নেপাল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর এটি। ২০১৪ সালে আফগানিস্তানকে ৭২ রানে অলআউট করেছিল তারা।
৩
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এক ম্যাচে দুই দলেরই অলআউট হওয়ার তৃতীয় ঘটনা এটি। এর আগে ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান এবং ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কা-নিউ জিল্যান্ড ম্যাচে দুই দলই গুটিয়ে গিয়েছিল।
১০৬
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশের বিপক্ষে কোনো পূর্ণ সদস্য দেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। ২০১৪ সালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৮৮ রানে অলআউট হয়েছিল ইংল্যান্ড।
৪/৭
চার ওভারের স্পেলে দুই মেইডেনসহ মাত্র ৭ রানে ৪ উইকেট নেন তানজিম। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা বোলিং এটি। ২০১৬ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান।
৭
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পুরো ৪ ওভার বোলিং স্পেলে বাংলাদেশের সবচেয়ে কম রান খরচের রেকর্ড এটি। একই ম্যাচে মুস্তাফিজুর রহমান নেন ৭ রানে ৩ উইকেট। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৭ রান দিয়েছিলেন রিশাদ হোসেন।
২
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে এক ম্যাচে দুটি মেডেন নিলেন তানজিম। সব মিলিয়ে এই কীর্তিতে বিশ্বের ষষ্ঠ বোলার তিনি।
এছাড়া আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে দুই মেডেন করা তৃতীয় বাংলাদেশী বোলার তানজিম। আগের দুজন নাজমুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদ।
৩
তানজিমের দুটি ছাড়াও মুস্তাফিজ করেন আরেকটি মেডেন ওভার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই প্রথম এক ম্যাচে একাধিক মেডেন ওভার করলেন বাংলাদেশের বোলাররা।
সব মিলিয়েও এক ম্যাচে ৩ মেডেন বাংলাদেশের রেকর্ড। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষেও ৩টি মেডেন করেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা।
২১
তানজিমের ২১ বলে কোনো রানই নিতে পারেননি নেপালের ব্যাটসম্যানরা। বিশ্বকাপে এক ম্যাচে কোনো বোলারের সবচেয়ে বেশি ডট বলের রেকর্ড এটি।
একই ম্যাচে মুস্তাফিজ করেন ২০টি ডট বল। এছাড়া চলতি আসরে ২০টি ডট বলের কীর্তি গড়েন ওটনিল বার্টম্যান, ট্রেন্ট বোল্ট, লকি ফার্গুসন, মোহাম্মদ আমির, ফ্রাঙ্ক সুবুগা, আদিল রাশিদ ও টিম সাউদি।
এর আগে ২০১০ সালে কেমার রোচ ও ২০১২ সালে আজান্থা মেন্ডিসও ২০টি করে ডট বল করেন। তাদের সবাইকে ছাপিয়ে গেলেন তানজিম।
২
নিজেদের চার ওভারের স্পেলে মাত্র ৭ রান করে খরচ করেন তানজিম ও মুস্তাফিজ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পুরো ৪ ওভারের স্পেলে বাংলাদেশের দুই বোলারের দশ রানের কম খরচের প্রথম ঘটনা এটি।