চোটের কারণে আলিস আল ইসলাম ফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়ায় চিটাগং কিংসের সম্ভাবনায় লেগেছে বড় চোট।
Published : 08 Feb 2025, 10:01 AM
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ক্রিজে গিয়ে শেষ বলের বাউন্ডারিতে দলকে জেতালেও পায়ের চোট বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে আলিস আল ইসলামের জন্য। কোয়ালিফায়ার ম্যাচে চিটাগং কিংসের নায়ক হলেও ফাইনালে খেলা হয়নি এই স্পিনারের। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে শিরোপার লড়াইয়ে তার অভাব প্রবলভাবেই অনুভব করেছে চিটাগং।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে চিটাগংকে জেতান আলিস। এর দুই বল আগে দ্রুত রান নেওয়ার চেষ্টায় বাম পায়ে আঘাত লাগে তার। এক উইকেট পড়ার পর দলের প্রয়োজনে সেদিন আবার নামেন ব্যাটিংয়ে। কিন্তু ওই চোটে ফাইনাল থেকে ছিটকে যান আলিস।
উইকেটসংখ্যায় দলের দ্বিতীয় সেরা বোলারকে ছাড়া খেলতে নেমে ফাইনালে বরিশালের বিপক্ষে ১৯৪ রানের পুঁজি নিজেও শিরোপা নিজেদের করতে পারেনি চিটাগং। শুরুতে তামিম ইকবালের তাণ্ডব পরে কাইল মেয়ার্সের ঝড়ো ইনিংস আর শেষে রিশাদ হোসেনের ক্যামিওতে তিন বল আগে ম্যাচ জিতে যায় শিরোপাধারীরা।
চিটাগংয়ের সামনে হাতছানি ছিল দুইশ ছাড়িয়ে যাওয়ার। ষোড়শ ওভারে তানভির ইসলামের বলে তিনটি ছক্কা মেরে ২২ রান নেন গ্রাহাম ক্লার্ক ও পারভেজ হোসেন। ১৬ ওভার শেষে ১ উইকেটে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ১ উইকেটে ১৬৩ রান। কিন্তু পরের ৪ ওভারে আর ৩১ রান করতে পারে তারা।
দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা সৈয়দ খালেদ আহমেদ অবশ্য কারও পারফরম্যান্সের দিকে আঙুল তুলছেন না। বরং তার আক্ষেপ আলিসের না থাকায়।
“দিন শেষে আমরা হেরে গেছি। এখানে কাউকে দোষ দেব না যে রান হয়নি বা হতে পারত। এই রানও আমাদের ডিফেন্ড করা উচিত ছিল। আমাদের একটা বড় ক্ষতি হয়ে গেছে যে আলিস খেলতে পারেনি। ও খেলতে পারলে হয়তো চিত্রটা অন্যরকম হতো।”
বড় রান তাড়ায় বরিশালকে প্রত্যাশামাফিক শুরুটা এনে দেন তামিম ইকবাল। পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৭ রান পায় বরিশাল। মাত্র ২৪ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি ওপেনার।
খালেদের মতে, ওই জায়গায় চিটাগংয়ের বড় অস্ত্র হতে পারতেন ১৩ ইনিংসে ওভারপ্রতি সাড়ে ছয়ের কম রান খরচ করে ১৫ উইকেট নেওয়া আলিস।
“আমার মনে হয়, আলিসকে আমরা পাওয়ার প্লেতে মিস করেছি। পাওয়ার প্লেতে বরিশালের রান হয়ে গেছে। আলিস থাকলে সেটা নাও হতে পারতো। আমি বিশ্বাস করি না যে, রান কম হয়ে গেছে। আমার মতে, যথেষ্ট রান ছিল বোর্ডে। আমরা (বোলিংয়ে) ডেলিভার করতে পারিনি।”
তবু শেষ দিকে ম্যাচ জমিয়ে তোলে চিটাগং। তাওহিদ হৃদয় ও মুশফিকুর রহিমকে দুই ওভারে আউট করেন নাঈম ইসলাম। শেষ তিন ওভারে বরিশালের বাকি থাকে ২৫ রান। তখন তিন বলের মধ্যে মেয়ার্স ও মাহমুদউল্লাহকে আউট করে ফের দলের সবার মধ্যে আশা জাগান শরিফুল ইসলাম।
পরে রিশাদের দুই ছক্কায় বিপদ পাশ কাটিয়ে নিরাপদের বন্দরে তরী ভেড়ায় বরিশাল। শেষের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে পাওয়ার প্লের বোলিংকেই বড় দায় দেন খালেদ।
“মেয়ার্স যখন আউট হয়েছে, আমি শরিফুলকে বলছিলাম যে, ‘তুই ম্যাচ জেতাবি।’ আরেকটা উইকেট নিলে... এক বল পরই রিয়াদ ভাইকে আউট করে দিয়েছে। আমার বিশ্বাস চলে এসছিল যে ম্যাচটা জিতে যাব। ওইখানে কিছু ভুল হয়ে গেছে।”
“আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী বল করতে পারিনি। শুরুতেই ভুল হয়ে গেছে। পাওয়ার প্লেতে তামিম ভাইকে পরিকল্পনা অনুযায়ী বল করতে পারিনি। মুখের ওপর বল দিয়ে ফেলেছি। এটা আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে গেছে। পাওয়ার প্লেতে আরেকটু ভালো বল করলে হয়তো ম্যাচটা আমাদের হাতে থাকত।”