বিশ্বকাপের এই আসরে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ম্যাচটি উপহার দিল আইসিসির সহযোগী দুই দেশ। শেষ ওভারে গড়ানো ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ২ উইকেটে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে আয়ারল্যান্ড।
Published : 25 Feb 2015, 08:33 AM
বুধবার ব্রিসবেনের গ্যাবায় টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৭৮ রান করে আরব আমিরাত। জবাবে ৪ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য পৌঁছে যায় আইরিশরা।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই পল স্টার্লিংকে হারায় আয়ারল্যান্ড। ৬৮ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েন উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড ও এড জয়েস। তাদের চমৎকার জুটির পরও ৯৭ রানে প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে আয়ারল্যান্ড।
নায়াল ও’ব্রায়ানের সঙ্গে ৭৪ ও কেভিন ও’ব্রায়ানের ৭২ রানের দুটি চমৎকার জুটি দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান গ্যারি উইলসন।
মাত্র ২৫ বলে ৫০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে দলের জয়ে দারুণ অবদান রাখেন কেভিন। তবে ব্যক্তিগত ২৪ রানে কৃষ্ণ চন্দ্রনের হাতে তিনি জীবন না পেলে খেলার চিত্রটা ভিন্ন হতে পারতো।
কেভিনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে রান আর বলের সমীকরণটা সহজ হয়ে যায় আয়ারল্যান্ডের জন্য। তবে চার বলের মধ্যে জন মুনি ও উইলসনকে বিদায় করে শেষ ওভার পর্যন্ত আশা বাঁচিয়ে রেখেছিল আরব আমিরাত।
ম্যাচ সেরা উইলসনের ৬৯ বলে খেলা ৮০ রানের চমৎকার ইনিংসটি ৯টি চার সমৃদ্ধ। অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে উইলসন বিদায় নেয়ার সময় ১৫ বলে ১২ রান প্রয়োজন ছিল আয়ারল্যান্ডের।
তবে বাকি কাজটুকু সহজেই সারেন আলেক্স কুসাক ও জর্জ ডকরেল। তাদের দৃঢ়তায় চার বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় আয়ারল্যান্ড।
আরব আমিরাতের আমজাদ জাভেদ ৩ উইকেট নেন ৬০ রানে।
এর আগে আন্দ্রি ব্যারেঙ্গারের সঙ্গে ৪৯ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দলকে ভালো সূচনা এনে দেন আমজাদ আলি। ব্যারেঙ্গারের বিদায়ের পর ছোটখাটো এক ধসে চাপে পড়ে আরব আমিরাত। বিনা উইকেটে ৪৯ থেকে দলটির স্কোর দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৭৮ রান।
২১তম ওভারের শেষ বলে ক্রিজে আসেন শাইমান আনোয়ার। পঞ্চম উইকেটে খুররম খানের সঙ্গে ৪৭ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন তিনি। খুররমের বিদায়ের পর রোহান মোস্তফা তাকে দ্রুত অনুসরণ করলে আবার চাপে পড়ে আরব আমিরাত।
১৩১ রানে ছয় উইকেট হারানো আরব আমিরাত লড়াইয়ের পুঁজি গড়ে আনোয়ার ও জাভেদের রেকর্ড জুটির সৌজন্য। বিশ্বকাপে সপ্তম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন এই দুই জনে।
আনোয়ার-জাভেদের ১০৭ রানের জুটি ভাঙার কৃতিত্ব ম্যাক্স সরেনসেনের।
সপ্তম উইকেটে বিশ্বকাপে আগের সর্বোচ্চ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের রিডলি জ্যাকবস ও রামনরেশ সারওয়ানের। ২০০৩ সালের আসরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৮ রানে জুটি গড়েছিলেন তারা।
জাভেদ ফিরে গেলেও দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন আনোয়ার। ৪৯তম ওভারে ফেরার আগে প্রথম ওয়ানডে শতকে পৌঁছান এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ৮৩ বলে খেলা তার ১০৬ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংসটি গড়া ১০টি চার ও ১টি ছক্কায়।
আয়ারল্যান্ডের স্টার্লিং, কুসাক, সরেনসেন ও কেভিন দুটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সংযুক্ত আরব আমিরাত: ৫০ ওভারে ২৭৮/৯ (আমজাদ ৪৫, ব্যারেঙ্গার ১৩, কৃষ্ণ ০, খুররম ৩৬, স্বপ্নিল ২, আনোয়ার ১০৬, মুস্তফা ২, জাভেদ ৪২, নাভেদ ১৩, তৌকির ২*, গুরুগে ০*; স্টার্লিং ২/২৭, কুসাক ২/৫৪, সরেনসেন ২/৬০, কেভিন ২/৬১)
আয়ারল্যান্ড: ৪৯.২ ওভারে ২৭৯/৮ (পোর্টারফিল্ড ৩৭, স্টার্লিং ৩, জয়েস ৩৭, নায়াল ১৭, বালবারনি ৩০, উইলসন ৮০, কেভিন ৫০, মুনি ২, কুসাক ৫*, ডকরেল ৭*; জাভেদ ৩/৬০, তৌকির ২/৩৮, নাভেদ ২/৬৫, গুরুগে ১/২১)
ম্যাচ সেরা: গ্যারি উইলসন।