ভালো শুরুর পর পথ হারাতে বসেছিল ভারত। চাপে পড়া দলকে কক্ষপথে ফেরান রবীন্দ্র জাদেজা। তার দারুণ ইনিংসে লড়াই করার পুঁজি পায় সফরকারীরা। বাকিটা সারেন বোলাররা। ভুবনেশ্বর কুমার, জাসপ্রিত বুমরাহদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ ঘরে তোলে রোহিত শর্মার দল।
Published : 09 Jul 2022, 11:04 PM
এজবাস্টনে শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৪৯ রানে জিতেছে ভারত। ১৭১ রানের লক্ষ্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে তারা থামিয়ে দিয়েছে স্রেফ ১২১ রানে।
প্রথম ম্যাচে ৫০ রানে জেতা দলটি তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে ২-০ ব্যবধানে। এনিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টানা চারটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল ভারত।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করা ভারত এই পুঁজি পায় মূলত জাদেজার ব্যাটিং নৈপুণ্যে। পাঁচ নম্বরে নেমে দলের বিপদে খেলেন অপরাজিত ৪৬ রানের কার্যকর ইনিংস।
শুরুতে ইংলিশদের নাড়িয়ে দেওয়া ভুবনেশ্বর জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ১৫ রান দিয়ে তার শিকার ৩ উইকেট। ১০ রান খরচায় দুটি করে প্রাপ্তি বুমরাহ ও যুজবেন্দ্র চেহেলের।
ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই জীবন পান রোহিত। ডেভিড উইলির বলে পয়েন্টে ভারত অধিনায়কের ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি জেসন রয়। এরপর ছাক্কায় ডানা মেলার আভাস দেন রোহিত।
টি-টোয়েন্টিতে জাতীয় দলের হয়ে প্রথমবার ওপেন করতে নেমে দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন রিশাভ পান্ত। তাদের দুইজনের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৪ ওভারে ৪৩ রান পায় ভারত।
অভিষিক্ত রিচার্ড গ্লিসনের বাউন্সারে রোহিতের বিদায়ে ভাঙে ৪৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৩১ রান করেন ভারত ওপেনার। পরের ওভারে পরপর দুই বলে বিরাট কোহলি ও পান্তকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান গ্লিসন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
ব্যর্থতার বৃত্ত যেন ভাঙতেই পারছেন না কোহলি। লম্বা সময় পর টি-টোয়েন্টি দলে ফেরা ভারতের সাবেক অধিনায়ক করেছেন স্রেফ ১ রান। উইকেটের পেছনে ধরা পড়েছেন চারটি চার ও এক ছক্কায় ২৬ করা পান্ত।
সূর্যকুমার যাদব (২ চারে ১৫) ও হার্দিক পান্ডিয়াকে (১ চারে ১২) পরপর দুই বলে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের আশা জাগান ক্রিস জর্ডানও। তার হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেওয়া দিনেশ কার্তিক কাটা পড়েন রান আউটে।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রাখেন জাদেজা। ৮৯ রানে ৫ উইকেট হারানো দলের রান বাড়াতে থাকেন তিনি দারুণ ব্যাটিংয়ে। গত ফেব্রুয়ারির পর জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে ২৯ বলের ইনিংসটি সাজান ৫ চারে।
দারুণ বোলিংয়ে ২৭ রানে ৪ উইকেট নেন জর্ডান। ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে গ্লিসনের শিকার ৩টি। ইংল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টি অভিষেকে যা দ্বিতীয় সেরা বোলিং। ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জন লুইসের ২৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট অভিষেকে ইংলিশদের রেকর্ড ।
লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন রয়। ভুবনেশ্বরের সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দিয়ে প্রথম স্লিপে ধরা পড়েন ইংলিশ ওপেনার। এই পেসারের পরের ওভারে কট বিহাইন্ড হয়ে যান জস বাটলার। রিভিউ নিয়ে প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে ফেরায় ভারত।
বুমরাহর স্লোয়ারে বোল্ড হয়ে যান বিস্ফোরক লিয়াম লিভিংস্টোন। হ্যারি ব্রুক পারেননি টিকতে। অনেকটা সময় উইকেটে কাটিয়ে বিদায় নেন দাভিদ মালানও। দুইজনই লেগ স্পিনার চেহেলের শিকার।
মইন আলি কিছুক্ষণ লড়াই চালান। ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৫ রান করে ফিরে যান তিনি পান্ডিয়ার বলে ক্যাচ দিয়ে। পরে উইলির ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৩ রানের অপরাজিত ইনিংসে কেবল হারের ব্যবধানই কমাতে পারে ইংল্যান্ড।
নটিংহ্যামে রোববার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ১৭০/৮ (রোহিত ৩১, পান্ত ২৬, কোহলি ১, সূর্যকুমার ১৫, হার্দিক ১২, জাদেজা ৪৬*, কার্তিক ১২, হার্শাল ১৩, ভুবনেশ্বর ২, বুমরাহ ০*; উইলি ৩-০-৩৫-০, কারান ৩-০-২৬-০, মইন ২-০-২৩-০, গ্লিসন ৪-১-১৫-৩, পার্কিনসন ২-০-২১-০, জর্ডান ৪-০-২৭-৪, লিভিংস্টোন ২-০-২৩-০)
ইংল্যান্ড: ১৭ ওভারে ১২১ (রয় ০, বাটলার ৪, মালান ১৯, লিভিংস্টোন ১৫, ব্রুক ৮, মইন ৩৫, কারান ২, উইলি ৩৩, জর্ডান ১, গ্লিসন ২, পার্কিনসন ০; ভুবনেশ্বর ৩-১-১৫-৩, বুমরাহ ৩-১-১০-২, হার্দিক ৩-০-২৯-১, হার্শাল ৪-০-৩৪-১, চেহেল ২-০-১০-২, জাদেজা ২-০-২২-০)
ফল: ভারত ৪৯ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ভুবনেশ্বর কুমার
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে ভারত