দুই ওপেনারের গড়ে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে সেঞ্চুরি করলেন সৌম্য সরকার। ফিফটি এলো সালমান হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেনের ব্যাট থেকে। রানের পাহাড় গড়ল ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। শেষ বেলায় বল হাতে ঝলক দেখালেন হাসান মুরাদ। তানজিদ হাসানের লড়াই থামিয়ে জাগালেন ইনিংস ব্যবধানে জয়ের আশা।
Published : 14 Dec 2021, 05:54 PM
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বিসিবি উত্তরাঞ্চলের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৭২ রান। এর তিনটি নিয়েছেন তরুণ বাঁহাতি স্পিনার মুরাদ।
অধিনায়ক মার্শাল আইয়ুব খেলছেন ২৮ রানে। নতুন ব্যাটসম্যান মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন এখনও রানের খাতা খুলতে পারেননি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) প্রথম রাউন্ডে হার এড়াতে ৫ উইকেট নিয়ে পুরো দিন কাটিয়ে দিতে হবে উত্তরাঞ্চলকে। মোহাম্মদ মিঠুন ও মিজানুর রহমানের পর সৌম্যর সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৩৪৪ রানের লিড নেওয়া মধ্যাঞ্চলকে আবার ব্যাটিংয়ে পাঠাতে তাদের করতে হবে আরও ১৭২ রান।
২ উইকেটে ৪৩০ রান নিয়ে মঙ্গলবার খেলা শুরু করে মধ্যাঞ্চল। প্রথম থেকেই দ্রুত তোলে দলটি। দিনের সপ্তম ওভারে সানজামুল ইসলামের বলে বদলি ফিল্ডার আকবর আলির হাতে ক্যাচ দেন সালমান। ততক্ষণে সৌম্যর সঙ্গে তার জুটি ছুঁয়েছে একশ, তার হয়ে গেছে ফিফটি।
৫৪ বলে ৪০ রান নিয়ে দিন শুরু করা সালমান ফিরেন ৫৩ রানে। ভাঙে ১১০ রানের জুটি।
৭৭ বলে ফিফটি ছুঁয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন সৌম্য। ক্রিজে গিয়েই বোলারদের ওপর চড়াও হন মোসাদ্দেক। দ্রুত জমে যায় তাদের জুটি। তৃতীয় দিনের উইকেটেও ছিল না বোলারদের জন্য তেমন কিছু। দ্রুত এগোতে থাকে মধ্যাঞ্চলের রান।
ততক্ষণে ফিফটির কাছে পৌঁছে যান মোসাদ্দক। তাই ইনিংস ঘোষণা করতে আরেকটু অপেক্ষা করেন অধিনায়ক শুভাগত হোম চৌধুরি। নাঈমের বলে সিঙ্গেল নিয়ে মোসাদ্দেক পঞ্চাশে যেতেই ৩ উইকেটে ৫৬৩ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে মধ্যাঞ্চল।
বড় ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা উত্তরাঞ্চল শুরুতেই হারায় পারভেজ হোসেনকে। বাঁহাতি এই ওপেনারকে এলবিডব্লিউ করে দেন রবিউল হক।
আরেক ওপেনার তানজিদ খেলতে থাকেন আস্থার সঙ্গে। প্রমোশন পেয়ে তিনে নামা তানবীর হায়দারের সঙ্গে তার জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে উত্তরাঞ্চল। চমৎকার এক ডেলিভারিতে ৭৮ রানের জুটি ভাঙেন মুরাদ। স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া বল জায়গায় দাঁড়িয়ে ডিফন্স করার চেষ্টায় স্লিপে শুভাগতর হাতে ধরা পড়েন তানবীর।
নাঈমের সঙ্গে আরেকটি জুটিতে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তানজিদ। আশা জাগিয়েও দ্বিতীয় সেঞ্চুরির নাগাল পাননি বাঁহাতি এই ওপেনার। মুরাদকে স্লগ করার চেষ্টায় ফিরে যান বোল্ড হয়ে। ১১৭ বলে খেলা তার ৯০ রানের ইনিংসে ১১ চারের পাশে ছক্কা একটি।
সহজাত সাবধানী ব্যাটিংয়ে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন নাঈম। হঠাৎ কি হলো, শেষ বেলায় মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরিকে পুল করে ধরা পড়েন মুকিদুল ইসলামের হাতে। সে সময় অমন শটের কোনো প্রয়োজন ছিল না।
প্রমোশন পেয়ে ছয়ে নেমে মাত্র ৬ বল টিকেন সানজামুল। মুরাদের বেশ বাইরের বল তাড়ার চেষ্টায় বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান হন কটবিহাইন্ড। বাকি সময়ে আর কোনো ক্ষতি হতে দেননি মার্শাল ও মাহিদু। চতুর্থ দিনে তাদের সামনে অপেক্ষা করছে কঠিন লড়াই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস: ২১৯
মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস: ১৩০.১ ওভারে ৫৬৩/৩ ডি. (আগের দিন শেষে ৪৩০/২) ১৩০.১ ওভারে ৫৬৩/৩ (সৌম্য ১০৪*, সালমান ৫৩, মোসাদ্দেক ৫০*; শফিকুল ২৪-২-১১১-০, নোমান ২২-২-৯৪-১, আরিফুল ১০-০-৪৪-০, সানজামুল ৩৯-৩-১৬৮-১, আমিনুল ১১-২-৫৫-০, তানবীর ৪-০-১৭-০, নাঈম ২০.১-১-৬১-১)
উত্তরাঞ্চল ২য় ইনিংস: ৫৮ ওভারে ১৭২/৫ (তানজিদ ৯০, পারভেজ ১২, তানবীর ১৮, নাঈম ১৮, মার্শাল ২৮*, সানজামুল ০, মাহিদুল ০*; রবিউল ১১-৪-২১-১, মৃত্যুঞ্জয় ৩-১-১৪-১, শুভাগত ১১-১-৪৪-০, মুকিদুল ১০-১-৩০-০, সৌম্য ৫-০-১৮-০, মুরাদ ১৮-৮-৩৯-৩)