অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট
চোট নিয়েও ব্যাটিংয়ে নামার পর গোটা লর্ডস যেভাবে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানিয়েছিল, তাতে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই এই অস্ট্রেলিয়ান স্পিনারের।
Published : 08 May 2024, 06:42 PM
পায়ের চোটে যাকে হাঁটতে হচ্ছিল ক্রাচে ভর দিয়ে, তাকেই পরে দেখা যায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ব্যাট হাতে ক্রিজে নামতে। মাস দশেক আগে অ্যাশেজের লর্ডস টেস্টে যখন এভাবে ব্যাটিংয়ে নামেন ন্যাথান লায়ন, গোটা স্টেডিয়াম দাঁড়িয়ে তালি দিয়ে অভিবাদন জানায় তাকে। ওই ঘটনায় তার একটি ভাবনাতেও পরিবর্তন এসেছে। অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার বলছেন, আগে ভাবতেন ইংল্যান্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চক্ষুশূল তিনি। এখন পেছনে ফিরে তাকিয়ে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই তার।
গত বছরের জুন-জুলাইয়ে লর্ডসে অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন ফিল্ডিংয়ের সময় টান লাগে লায়নের পায়ের পেশিতে। তখনই মাঠের বাইরে চলে যান তিনি। পরে আর বোলিং তো করতেই পারেননি, ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটতে হচ্ছিল তাকে। তবে চতুর্থ দিন অস্ট্রেলিয়ার শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামেন তিনি।
বর্তমানে ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে ইংল্যান্ডে থাকা লায়ন বিবিসির সঙ্গে আলাপচারিতায় ফিরে তাকালেন লর্ডস টেস্টের ওই মুহূর্তটির দিকে।
“আমার স্ত্রী, তার বাবা-মা এবং এক পারিবারিক বন্ধু, সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েছিল। ওই সময়ে এবং তারপরে আমার প্রতি যে সম্মান দেখানো হয়েছিল, তখন হয়তো তা বুঝতে পারিনি।”
“এটি এমন কিছু, পেছনে ফিরে তাকিয়ে এবং ভেবে আমি কৃতজ্ঞ। আমি সবসময় ভাবতাম ইংল্যান্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ আমাকে ঘৃণা করে।”
পায়ে টান লাগার পর গোসল করতে এবং পোশাক পরতে স্ত্রীর সাহায্য নিতে হয়েছিল লায়নের। তবে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে না নামার কথা তিনি কল্পনাও করেননি কখনও।
“ব্যাটিং করার ভাবনা আমার সবসময় ছিল। মানুষের বিভিন্ন কাজ থাকে এবং অসুস্থ হলেও তারা কাজ করতে যায়। আমার ব্যাটিং না করার কোনো বিষয় ছিল না। সবসময় ভাবনাটা ছিল এমন, যতই খারাপ অবস্থায় থাকি না কেন, আমি ব্যাটিংয়ে যাচ্ছি।”
ব্যাটিংয়ে নেমে শেষ জুটিতে মিচেল স্টার্কের সঙ্গে মিলে তিনি যোগ করেন ১৫ রান। একটি বাউন্ডারিও আসে তার ব্যাট থেকে। ম্যাচটি ৪৩ রানে জিতে সিরিজে ২-০তে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
লায়ন সিরিজে আর খেলতে পারেননি। ফিরে যান দেশে। অস্ট্রেলিয়াও আর জিততে পারেনি কোনো ম্যাচ। সিরিজ শেষ হয় ২-২ সমতায়। এমনকি ৩-২ ব্যবধানে হারতেও পারত অস্ট্রেলিয়া। বৃষ্টি তাদের বাঁচিয়ে দেয় ম্যানচেস্টার টেস্টে হার থেকে।
সিরিজের বাকি অংশে স্পষ্টভাবেই লায়নের অভাব বোধ করেছে অস্ট্রেলিয়া। ১২৯ টেস্টে ৫৩০ উইকেট শিকারি ৩৬ বছর বয়সী অফ স্পিনারের বিশ্বাস, তিনি থাকলে আরও দুটি ম্যাচ জিতত অস্ট্রেলিয়া, “আমার বিশ্বাস, আমি থাকলে অস্ট্রেলিয়া ৪-০ ব্যবধানে জিতত।”
ইংল্যান্ডের মাটিতে ২০২৭ সালের অ্যাশেজেও খেলার আশায় আছেন লায়ন। তখন তার বয়স হবে ৩৯ বছর।