কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রে ভোটার কম, এজেন্ট ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বলেন, তার কেন্দ্রে কাপ-পিরিচের কোনো এজেন্ট তিনি দেখেননি।

ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের বাইরের পরিবেশ উৎসবমুখর থাকলেও কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। এর মধ্যেই এক চেয়ারম্যান প্রার্থী তার এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া ও কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন।

কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আলতাফ হোসেন বিপ্লব অভিযোগ করে বলেন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ও জিঞ্জিরার একাংশের ভোটকেন্দ্রগুলো থেকে সকালে তার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। অনেক কেন্দ্রে ভেতরে তার এজেন্টেদের ঢুকতেই দেওয়া হয়নি।

তার প্রতিদ্বন্দ্বী ও বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের (আনারস প্রতীক) লোকজন এসব করছেন বলে অভিযোগ তার।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এবার এই দুজনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শাহীন আহমেদ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং আলতাফ হোসেন কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সব বুথে আনারস প্রতীকের শাহীন আহমেদের এজেন্টদের উপস্থিতি থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থীর কোনো এজেন্ট নেই।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের কোনো বুথেই আলতাফ হোসেনের কোনো এজেন্ট পাওয়া যায়নি।

এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নুরুল আমিন বলেন, “এই কেন্দ্রের সাতটি বুথে কাপ-পিরিচের কোনো এজেন্ট আমি দেখিনি। তবে সব বুথেই আনারস প্রতীকের এজেন্ট ছিল।”

এছাড়াও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী (তালা প্রতীক) ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. মনির হোসেনও তার এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

তিনি বলেন, “আমার এজেন্টদের কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রের বাইরে থেকেই এজেন্টদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহীন আহমেদ বলেন, “কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী নিশ্চিত পরাজয় জেনে আমার ও আমার কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ তুলেছেন। তার অভিযোগ সত্য নয়।”

ভোটারের উপস্থিতি ছিল খুবই কম

বুধবার সকাল থেকে কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র, ধর্মসুর কেন্দ্র, রামেরকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, চুনকুটিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রসহ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, সকালে কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি ছিল খুবই কম।

লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে না কাউকেই। এক দুইজন করে আসছে আর ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের উপস্থিতি কিছুটা বাড়লেও তা আশানুরূপ ছিল না।

কেরানীগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ২২৫টি ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ৫১১টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এ উপজেলায় ১২টি ইউনিয়নের ভোটার ৬ লাখ ১৪ হাজার ৭৮১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ১৭ হাজার ১৭ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ৯৭ হাজার ৭৫৬ জন। এ ছাড়া হিজড়া ভোটার আছেন ৮ জন।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সুমন মিয়া বলেন, “কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলার তথ্য আমরা পাইনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”