আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠন করা যতটা সহজ মনে হয়েছিল, বাস্তবে তা করতে গিয়ে অনেক কঠিন মনে হয়েছে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের কাছে। বারবার প্রতিশ্রুতির পরও এটা দাঁড় করাতে না পারায় নিজেদের ব্যর্থতা তিনি মেনে নিচ্ছেন। পাশাপাশি আরও একবার আশা দেখিয়ে বলছেন, এখন একটি পথরেখা তারা পেয়েছেন।
Published : 26 Aug 2021, 08:14 PM
বিসিবির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) শেষে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এই মেয়াদে নিজেদের ব্যর্থতার প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন বিসিবি সভাপতি।
নাজমুল হাসানের নেতৃত্বধীন দ্বিতীয় মেয়াদের কমিটির এটিই ছিল প্রথম ও শেষ এজিএম। প্রতিবছর হওয়ার নিয়ম থাকলেও প্রায় চার বছর পর হলো এবারের এজিএম। এবারের আগে সবশেষ হয়েছিল ২০১৭ সালের ২ অক্টোবর। ওই এজিএমের পরের মাসেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন নাজমুল হাসান। তার দ্বিতীয় দফার এই মেয়াদ শেষ হতে চলেছে।
এজিএমের পর সংবাদ সম্মেলনে এই মেয়াদে নিজেদের অনেক সাফল্যের গল্প শোনালেন বিসিবি সভাপতি। কোন কোন জায়গায় তারা ব্যর্থ, এই প্রশ্নে তিনি বললেন, “একটা তো রিজিওনাল ক্রিকেট, আমাদের ব্যর্থতা। যেভাবে ভেবেছিলাম, আমরা করতে পারিনি এই টার্মের মধ্যে….।”
আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা নিয়ে বিসিবি কর্তাদের প্রতিশ্রুতি চলে আসছে বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার আগে থেকেই। কিন্তু সারা দেশে ক্রিকেট ছড়িয়ে দেওয়ার মৌলিক এই কাজটি করেনি কোনো বোর্ডই। নাজমুল হাসান সভাপতির দায়িত্বে আছেন ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে। প্রথমে সরকার মনোনীত হিসেবে এক বছর, এরপর নির্বাচিত হিসেবে আরও প্রায় ৮ বছর। নানা সময়ে তিনিও বলেছেন এটি বাস্তবায়ন করার কথা। কিন্তু হয়নি তেমন কিছুই।
২০১৮ সালের এপ্রিলে তিনি বলেছিলেন, এক মাসের মধ্যে শুরু হবে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার কার্যক্রম। সেই এক মাস আর শেষ হয়নি। ওই বছরের জুনে আবার তিনি বলেন, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট ও রংপুর বিভাগে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠন করার লক্ষ্যে আঞ্চলিক ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তারা দ্রুত কাজ শুরু করবেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, সেসবের কিছুই হয়নি।
এখন বিসিবি সভাপতি বলছেন, তারা দুটি বিভাগে পরীক্ষামূলক কাজ শুরু করেছেন এবং অন্যান্য জায়গায়ও করবেন।
“রিজিওনাল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন আমরা যতটা সহজ ভেবেছিলাম, করতে গিয়ে ততটা সহজ মনে হয়নি। আমরা দুটি জায়গায় টেস্ট কেস হিসেবে কমিটি করে শুরু করেছি, একটি চট্টগ্রাম, আরেকটি সিলেট। কী কী সমস্যার সম্মুখিন আমরা হতে পারি, তা দেখার জন্যই এই কমিটি। সেটা মোটামুটি শেষ।”
“আজকে উনাদেরকে (কাউন্সিলরদের) জানাতে পারলাম, এই দুটিকে পাইলট স্টাডি হিসেবে নিয়ে আমরা যা দেখছি, তাতে এটা করা সম্ভব। আমরা এখন অন্যান্য জায়গায়ও করে ফেলতে পারি। গঠনতন্ত্র ও নিয়মকানুন কী হবে, আমরা তাদের কাছে পৌঁছে দেব।”
এটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কোন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে, সেটিরও একটি ধারণা দিলেন বিসিবি সভাপতি।
“কিছু সমস্যা আছে, যা আমাদের আগে ধারণা ছিল না। রিজিওনাল ক্রিকেটের মাঠ কোথায়? ডিসি থাকবে ওটার প্রধান? এখন তো ডিএসএ আছেই, ওটাই কি রাখছি? ওটাই কি রিজিওনাল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন নাম করে দিলে হবে? তাহলে ডিসি কোথায় যাবে? মাঠগুলি কার হাতে? খেলাগুলো চালাবে কে? যতটা সিম্পল মনে হয় বাইরে থেকে, ততটা নয়।”
“ওটা করতে গেলে যে অবকাঠামো দরকার, মৌলিক ভিত্তি দরকার, সেটিই করছি আমরা এখন। ওই দুই জায়গায় করে আমরা অভিজ্ঞতা পেয়েছি। এটা এতটা সহজ নয়। নতুন করে সাজাতে হয়েছে। ফরম্যাট নতুন করে করতে হয়েছে।”
কোভিড মহামারীর কারণে লম্বা সময় কাজ বন্ধ ছিল বলেও দাবি করলেন নাজমুল হাসান।
“গত দুই বছর কোভিডের কারণে আর সেভাবে আগায়নি। আগে তো ইজিএম করতে হবে। এজিএমই তো করতে পারছিলাম না। ইজিএম করে অনুমোদন করাতে হবে, কাজ আছে। তবে এখন আমরা বলতে পারি, এখন যে জায়গায় আছি, তাতে আত্মবিশ্বাস নিয়ে এটা করতে পারি। তবে বেশ কিছু বিনিয়োগ দরকার।”