প্রতিপক্ষের উইকেট পড়লে তাৎক্ষনিক উত্তেজনা তো থাকেই! তাই ‘হাই ফাইভ’ বা ‘হ্যান্ডশেক’ হয়ে যাচ্ছে হয়তো মনের অজান্তেই। পরমুহূর্তেই অনেকে বুঝতে পারছেন ভুল। পরস্পরের মুষ্টিবদ্ধ হাতে আলতো টোকা কিংবা কনুইয়ে কনু্ই ছোঁয়াতেও দেখা গেল অনেক সময়। সব মিলিয়ে রোববার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতা-সচেতনার রেশ যেমন ছিল, তেমনি অনভ্যস্ততার কারণে ছিল শঙ্কার চিত্রও।
Published : 15 Mar 2020, 06:31 PM
টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিন সব দলের কোচ, অধিনায়ক, ম্যানেজারদের নিয়ে সভায় করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্ক থাকার ও সচেতন হওয়ার কথা বিস্তারিত জানিয়ে দেয় লিগের আয়োজক ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস। প্রথাগত করমর্দনে নিরুৎসাহিত করা হয়। দেওয়া হয় আরও কিছু নির্দেশনা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে রোববার পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের মুখোমুখি হয়েছিল আবাহনী লিমিটেড। আবাহনী অধিনায়ক মুশফিক জানালেন, ম্যাচের আগেও তাদেরকে দেওয়া হয় সতর্কতামূলক পরামর্শ।
“হ্যান্ডশেক করতে নিষেধ করা হয়েছে। পানি পানের বিরতিতে একটু দূরে দূরে থাকতে বলা হয়েছে সবাইকে। সবাই চেষ্টা করছে নিদের্শনা অনুসরণ করতে। পানির বোতলও প্রত্যেকে আলাদা ভাবে পান করছে। আমরা চেষ্টা করছি সচেতন থেকে খেলার।”
তারপরও করমর্দন, হাই ফাইভ দেখা গেছে বেশ কবারই। পিঠ চাপড়ে দেওয়া তো ছিলই। মুশফিক সেঞ্চুরি করার পরই গিয়ে জড়িয়ে ধরেন আরেক প্রান্তের ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেন।
মুশফিক বললেন, বরাবরের চলে আসা এই অভ্যাসগুলো বদলাতে সবার একটু সময় লাগবে।
“মাঝে মাঝে আমরা সবাই ভুলে যাই। এখনও অভ্যস্ত হইনি সবাই। তবে এটি নিয়ে সবাই একটু শঙ্কিত। চেষ্টা করছি যতটুকু সচেতন ও সতর্ক থাকা যায়।”
ঘরোয়া ক্রিকেটের ম্যাচে এমনিতেই দর্শক কম হয়। মিরপুরে খেলা হলে তবু কয়েকশ দর্শক নিয়মিত থাকে। বড় দলের খেলা বা বড় তারকার ম্যাচ থাকলে দর্শক আরেকটু বাড়ে। রোববার তারকারাজির দল আবাহনীর ম্যাচেও সাকুল্যে দর্শক ছিলেন নানা সময় মিলিয়ে ৩০ থেকে ৫০ জন।
কারণ অনুমিতই। নিজেদের সতর্কতার পাশাপাশি ক্রিকেট অনুসারী ও সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করলেন মুশফিক।
“অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে দেখেছি (গত শুক্রবার), মাঠে দর্শক কেউ নেই। বল গ্যালারিতে যাচ্ছে, লকি ফার্গুসন (নিউ জিল্যান্ডের ফাস্ট বোলার) নিজে গিয়ে বল কুড়িয়ে আনছে। সেখানে বাংলাদেশের মানুষ তো ক্রিকেট পাগল। তারা যেন সচেতন থাকেন। গ্যালারিতে বসলেও যেন দূরত্ব বজায় রাখেন। মাস্ক ব্যবহার যেন করেন সবাই।”
“একজনের হলে অন্যজন আক্রান্ত হতে পারে। আমি মনে করি, তাদের অবশ্যই সচেতন থাকা উচিৎ। তারা যদি আমাদের ভালোবাসতে পারে, আমাদেরও তাদেরকে ভালোবাসা উচিৎ। আমার অনুরোধ থাকবে, সবাই যেন সচেতন থাকেন।”
ম্যাচ শেষে চিরায়ত চিত্রে খুব বেশি বদল দেখা গেল না। দুই দলের ক্রিকেটাররা লাইন ধরে হাত মেলালেন প্রায় সবাই। দু-একজন কেবল মুষ্ঠিবদ্ধ হাত বা কনুই মেলালেন। সব মিলিয়ে বাস্তবতা পরিষ্কার, এত সচেতনতার পরও দীর্ঘদিনের অভ্যাস বদলাতে সময় লাগবে আরও। ঝুঁকির জায়গা তাই থেকেই যাচ্ছে।