“রোববার থেকে কোনো সতর্কতা নয়, কঠোর অবস্থানে থেকে নিয়মিত মামলা করা হবে।”
Published : 08 May 2024, 09:14 PM
রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘিরে প্রতিদিনের অসহনীয় যানজট থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশ বলছে, মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে বনানীর কাকলী পর্যন্ত কোনো যাত্রী ওঠানামা করতে দেওয়া হবে না।
এমন কঠোর অবস্থানের কারণে বাস টার্মিনালের আশপাশের রাস্তার ওপর দিন-রাত যেসব বাস রাখা হতো, সেগুলো এখন না থাকায় ওই এলাকার চেহারা পাল্টে গেছে বলে পুলিশের দাবি।
মহাখালী ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার আরিফুর রহমান রনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তারা এখন কঠোর অবস্থানে গেছেন, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
“আমরা চেষ্টা করছি সকলের সহযোগিতা নিয়ে মহাখালীকেন্দ্রীক যানজট চিরতরে দূর করতে।”
রাস্তার ওপর যেসব বাস রাখা হতো, সেগুলো গেল কোথায়- এমন প্রশ্নে ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, মালিকপক্ষ এসব বাস এখন সংশ্লিষ্ট জেলাতে রাখছে। ঢাকায় যাত্রী নামিয়ে দিয়ে সেগুলো আবার চলে যাচ্ছে।
ট্রাফিক-গুলশান দক্ষিণের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এ এস এম হাফিজুর রহমান বলেছেন, মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকার দীর্ঘদিনের যানজট নিরসনে উদ্যোগ নেওয়ার আগে টার্মিনালে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বাস, রাস্তার পাশে অবৈধ পার্কিং, টার্মিনালের ইনগেট ও আউটগেটে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব, টার্মিনালের সামনে অপ্রয়োজনীয় ইউটার্ন, সীমিত এলাকায় অতিরিক্ত তেল ও গ্যাসের পাম্প, এক্সপ্রেসওয়ে থেকে মহাখালীতে নামার র্যাম্পসহ স্থাপনসহ বেশকিছু সমস্যা চিহ্নিত করা হয়।
“এসব সমস্যার বিষয়ে মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারিত স্টপেজ ছাড়া যাত্রী ওঠানামা বন্ধ করা, যত্রতত্র বাস রাখার বিষয়ে তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বন্ধ করতে বলা হয়। এগুলো না করলে কঠোর অবস্থানে থেকে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়।”
বাস বে’ ছাড়া লোকাল বাস যেমন দাঁড়াবে না, তেমনি দূরপাল্লার বাসগুলোও নির্দিষ্ট স্টপেজ ছাড়া দাঁড়াবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো বন্ধের জন্য চালকদের এখন সতর্ক করার পাশপাশি কিছু মামলা করা হচ্ছে। রোববার থেকে কোনো সতর্কতা নয়, কঠোর অবস্থানে থেকে নিয়মিত মামলা করা হবে।”
এরই মধ্যে ফলাফল আসতে শুরু করেছে জানিয়ে হাফিজুর রহমান বলেন, “মহাখালী বাস টার্মিনালের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকপক্ষও যানজট নিরসনে বেশ আগ্রহী হওয়ায় তারা স্বেচ্ছাসেবক নিযুক্ত করেছেন। এসব কারণে অভূতপূর্ব পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে।
“মহাখালী বদলে দেওয়ার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ যথেষ্ট।”
এই কর্মকর্তার দাবি, এই এলাকার মূল সড়কে যানজট যেমন কমেছে তেমনি উধাও হয়েছে যত্রতত্র পার্কিং। শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে মহাখালী বাস টার্মিনাল, রেলগেট, আমতলী ও কাকলী পর্যন্ত এলাকায়। ফলে দৃশ্যত ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে যান চলাচলে গতি বেড়েছে।
এদিকে মহাখালী বাস টার্মিনালের পেছনে কিছু জায়গা অব্যবহৃত থাকার বিষয়টি নিয়ে ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান বলেছেন, ওই জায়গা মহাখালী টার্মিনালের সঙ্গে একীভূত করার বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সহকারী কমিশনার আরিফুর রহমান রনি বুধবার রাতে বলেন, “সিটি করপোরেশন এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করেছে। পেছনের জায়গা টার্মিনালে একীভূত হয়ে গেলে যেসব বাস টার্মিনালের বাইরে রাস্তায় থাকত সেগুলো এখন এই নতুন জায়গায় রাখার সুযোগ তৈরি হবে।”