আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত এবার দায়িত্বশীল ইনিংসে টানলেন দলকে। পরে সুইং বোলিংয়ে রাজশাহী রয়্যালসকে কাঁপিয়ে দিলেন মোহাম্মদ আমির, গড়লেন রেকর্ডও। অসাধারণ এক ইনিংসে লড়াই করলেন শোয়েব মালিক। তবে শেষ রক্ষা করতে পারেননি। রাজশাহীকে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ফাইনালে উঠেছে খুলনা।
Published : 13 Jan 2020, 07:30 PM
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম কোয়ালিফায়ারে সোমবার ২৭ রানে জিতেছে খুলনা। ১৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শেষ বলে ১৩১ রানে গুটিয়ে গেছে রাজশাহী।
দলকে ফাইনালে নেওয়ার পথে বিপিএলে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়লেন আমির। পাকিস্তানের বাঁহাতি এই বোলার ১৭ রানে নেন ৬ উইকেট। বিপিএলে এই প্রথম ৬ উইকেট পেল কোনো বোলার। ২০১২ সালে প্রথম আসরে দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে মোহাম্মদ সামির ৬ রানে ৫ উইকেট ছিল আগের সেরা।
৫৭ বলে সাত চার ও চার ছক্কায় ৭৮ রানে অপরাজিত থাকেন শান্ত। তার সঙ্গে পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি গড়া শামসুর রহমান একশর একটু বেশি স্ট্রাইক রেটে রান করেন। রান নেওয়ার সময় চোট পেয়ে ইনিংসের মাঝপথেই মাঠ ছাড়েন মুশফিকুর রহিম।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি খুলনার। তৃতীয় ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজ ও রাইলি রুশোকে ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ ইরফান। পয়েন্টে তাইজুল ইসলামের হাতে জীবন পাওয়া মিরাজ ধরা পড়েন স্লিপে, শূন্য রানে রুশো ক্যাচ দেন কামরুল ইসলাম রাব্বিকে।
পাওয়ার প্লেতে দুটি মেডেন ওভার খেলা খুলনা ৬ ওভারে তুলতে পারে ২ উইকেটে ৩২ রান। পরিস্থিতি হতে পারত আরও খারাপ। ৯ রানে আউট হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন শান্ত কিন্তু শোয়েব মালিকের ‘নো’ বলের জন্য বেঁচে যান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
প্রমোশন পেয়ে চারে নামা শামসুরের সঙ্গে ধীরে ধীরে জমে যায় শান্তর জুটি। রবি বোপারার বলে শামসুরের বিদায়ে ভাঙে ৭৮ রানের জুটি। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৩১ বলে করেন ৩২।
রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টায় ছিলেন মুশফিক। তবে ক্র্যাম্প বেশ ভোগাচ্ছিল তাকে। শেষ পর্যন্ত ১৬ বলে ২১ রান করে মাঠ ছেড়ে যান খুলনা অধিনায়ক।
৩৬ বলে ফিফটি করার পর রানের গতিতে দম দিতে পারেননি শান্ত। পরের ২১ বলে যোগ করেন কেবল ২৮ রান। শেষের দিকে একটি করে ছক্কা ও চারে ৫ বলে ১২ রানের ইনিংসে দলের রান দেড়শ পার করেন নাজিবউল্লাহ জাদরান।
আঁটসাঁট বোলিংয়ে ১৩ রানে ২ উইকেট নেন ইরফান। বোপারা ২৪ রানে নেন একটি।
রাজশাহীকে শুরুতেই নাড়িয়ে দেন আমির। দারুণ এক ডেলিভারিতে লিটন দাসকে বোল্ড করার পর একই ওভারে বিদায় করেন আফিফ হোসেন ও অলক কাপালীকে।
রবি বোপারাকে টিকতে দেননি রবি ফ্রাইলিঙ্ক। রানের খাতা খোলার আগেই রাসেলকে ফিরিয়ে দেন আমির। উইকেট শিকারে যোগ দেন শহিদুল ইসলামও। দ্রুত ফেরান ফরহাদ রেজাকে।
৩৩ রানে ৬ উইকেট হারানো দলটি প্রতিরোধ গড়ে মালিক ও তাইজুল ইসলামের ব্যাটে। শুরুতে একটু সময় নেওয়া মালিক পরে বড় শট খেলা শুরু করেন।
নিজের শেষ ওভারে ফিরে তাইজুলকে ফিরিয়ে ৭৪ রানের জুটি ভাঙেন আমির। পরে থামান মালিককে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান ৫০ বলে ১০ চার ও চার ছক্কায় ফিরেন ৮০ রান করে। এরপর বেশিদূর যায়নি রাজশাহীর ইনিংস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৫৮/৩ (শান্ত ৭৮*, মিরাজ ৮, রুশো ০, শামসুর ৩২, মুশফিক ২১ আহত অবসর, জাদরান ১২*, ইরফান ৪-১-১৩-২, আবু জায়েদ ২-০-২১-০, মালিক ৩-১-২৩-০, রাসেল ৪-০-৩৩-০, রাব্বি ২-০-২০-০, তাইজুল ২-০-২২-০, বোপারা ৩-০-২৪-১)
রাজশাহী রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৩১ (লিটন ২, আফিফ ১১, মালিক ৮০, কাপালী ০, বোপারা ১, রাসেল ০, রেজা ৩, তাইজুল ১২, রাব্বি ১১*, আবু জায়েদ ৭, ইরফান ০; আমির ৪-০-১৭-৬, ফ্রাইলিঙ্ক ৪-১-২৯-১, শফিউল ৪-০-৩৬-০, শহিদুল ৪-০-১৫-১, আমিনুল ৩-০-২৬-০, মিরাজ ১-০-৬-২)
ফল: খুলনা টাইগার্স ২৭ রানে জয়ী