প্রথম স্তরের শেষ রাউন্ডে মঙ্গলবার ঢাকাকে ৯ উইকেটে হারিয়ে অপরাজিত থেকে জাতীয় ক্রিকেট লিগের শিরোপা জিতেছে খুলনা।
খুলনার এটি সপ্তম শিরোপা। ২০১৫-১৬ মৌসুম থেকে টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দলটি। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা সংখ্যায় খুলনার পাশে বসেছিল রাজশাহী। এক মৌসুম পরেই শিরোপা জয়ের রেকর্ড আবারও নিজেদের করে নিলো খুলনা।
এবার রাজশাহীর হয়েছে উল্টো অভিজ্ঞতা। শেষ রাউন্ডের ম্যাচে রংপুরের কাছে হেরে প্রথম স্তর থেকে দ্বিতীয় স্তরে নেমে গেছে তারা।
শেষ দিনের দ্বিতীয় সেশনে ১১৭ রানের লক্ষ্যে নেমে এনামুল হকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সহজেই জয় মুঠোবন্দী করে খুলনা।
শেষ ম্যাচে না খেললেও শিরোপা জয়ের পথে আগের ম্যাচগুলোতে বড় ভুমিকা ছিল খুলনার নিয়মিত অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাকের। তার অনুপস্থিতিতে দলের নেতৃত্ব পাওয়া নুরুল হাসান এই ম্যাচে খেলেছেন হার না মানা দেড়শ রানের ইনিংস।
জুটি ভাঙে লাঞ্চেরও প্রায় ঘণ্টা খানেক পর। ৯৯ রানে দাঁড়িয়ে রান আউট হন রকিবুল। এরপর দ্রুত গুটিয়ে যায় ঢাকা। শেষ ৪ উইকেট হারায় ৫ রানে। দ্বিতীয় দিন সতীর্থ আরাফাত সানির গায়ে হাত তোলার দায়ে নিষিদ্ধ হওয়ায় ব্যাট করতে পারেননি শাহাদাত হোসেন।
৩২১ মিনিট আর ২২৭ বলের ইনিংসে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন রকিবুল। ১৪৮ বলে ৫টি চারে আরাফাত সানি জুনিয়র করেন ৫৩ রান। পঞ্চম উইকেটে দুজনে গড়েন ১২৫ রানের জুটি।
আগের দিন দ্রুত তিন উইকেট নেওয়া জিয়াউর এদিন নেন দুটি। শেষ ব্যাটসম্যান নাজমুল ইসলামকে তুলে নিয়ে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ ৫ উইকেটের কোটা।
পেস অলরাউন্ডার ৫ উইকেট পেলেন ১১ বছর পর। সবশেষ ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে টানা দুই ম্যাচে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই রবিউল ইসলাম রবিকে হারায় খুলনা। তবে অমিত মজুমদার ও এনামুলের ব্যাটে সহজেই লক্ষ্যে পৌঁছায় তারা।
শেষ দিকে ঝড় তোলা এনামুল ৭৬ বলে চারটি করে ছক্কা ও চারে ৭৯ রানে অপরাজিত থাকেন। অমিত অপরাজিত ছিলেন ৩৩ রানে।
৫ ম্যাচে ১৯.৬৭ গড়ে ৩১ উইকেট নিয়ে এবারের আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার রাজ্জাক।
ছয় ম্যাচে তিনটি করে জয় ও ড্রয়ে খুলনার পয়েন্ট ৩৯.৮১। চার ড্র ও এক জয়ে ২৪.৩৯ পয়েন্ট নিয়ে রানার্সআপ ঢাকা। এক জয় ও দুই ড্রয়ে ২১.৪৬ পয়েন্ট নিয়ে তিনে থেকে লিগ শেষ করেছে রংপুর। এক জয় ও দুই ড্রয়ে ১৮.৬৫ পয়েন্ট পাওয়া রাজশাহী নেমে গেছে দ্বিতীয় স্তরে।
দ্বিতীয় স্তরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথম স্তরে উঠে এসেছে সিলেট বিভাগ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা ১ম ইনিংস: ২৭৯
খুলনা ১ম ইনিংস: ১২৮ ওভারে ৩৭৯
ঢাকা ২য় ইনিংস: (আগের দিন ১০২/৫) ৮৬.৩ ওভারে ২১৬ (উত্তম ৪, মজিদ ৫, শফিউল ০, রকিবুল ৯৯, তাইবুর ১, শুভাগত ৪২, আরাফাত সানি জুনিয়র ৫৩, অনিক ০, নাজমুল ০, শহিদ ০, শাহাদাত (নিষিদ্ধ); জিয়াউর ২৩.৩-৯-৪৪-৫, রুবেল ০.২-০-৩-০, মইনুল ১৪.৪-৩-৪০-১, নাহিদুল ৩০-৫-৭৪-২, টিপু ১৪-৩-৩৭-০, রবি ৪-১-৬-০)
খুলনা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১১৭ )২৫.৪ ওভারে ১১৭/১ (রবি ২, এনামুল ৭৯*, অমিত ৩৩*; নাজমুল ১২-০-৪৯-১, শুভাগত ৫-১-২১-০, শহীদ ৪-০-১৯-০, উত্তম ৩.৪-১-১৬-০, মজিদ ১-০-১০-০)
ফল: খুলনা ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: নুরুল হাসান