দেড়শ রান অনেক দূরের পথ: তামিম

“আর একটি উইকেট পেলেই তো…”, অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিক প্রশ্নটি কেবল শুরু করেছিলেন। মাঝপথেই থামিয়ে তামিম ইকবাল বললেন, “একটি নয়, আটটি!” জিততে হলে বাংলাদেশের চাই আরও আটটি উইকেট।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 August 2017, 01:45 PM
Updated : 29 August 2017, 07:13 PM

কিন্তু এই টেস্টের যা ধারা আর উইকেটের যা অবস্থা, তাতে একটি উইকেটের পতনই ডেকে আনতে পারে অস্ট্রেলিয়ার পতন। জুটি ভাঙলেই যে ধরা দেয় আরও কিছু উইকেট!

অস্ট্রেলিয়ান সংবাদকর্মীর প্রশ্নটি ছিল সেটি বুঝিয়েই। ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথের জুটি তৃতীয় দিনে তুলেছে ৮১ রান। চতুর্থ দিন সকালে বাংলাদেশের প্রথম লক্ষ্য, এই জুটি ভাঙা।

শেষ দিনে জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার দরকার ১৫৬ রান, বাংলাদেশের প্রয়োজন ৮ উইকেট।

জিততে হলে আরও ৮ উইকেট লাগবে সত্যি, তবে তামিমও মানছেন, একটি উইকেটই খুলে দিতে পারে বাকি সব উইকেটের পথ।

“এখানকার উইকেট খুবই অনুনমেয়। পরের মুহূর্তে কী হবে, কেউই বলতে পারবে না। কালকে নতুন দিন। অস্ট্রেলিয়ার সেরা দুই ব্যাটসম্যান কাল খেলতে নামবে। আমরা যদি দ্রুত তাদের একজনকে আউট করতে পারি, তাহলে ১৫০ রান এখনও অনেক দূরের পথ।”

“এখনও তাদের দেড়শ রান লাগবে। এই অবস্থায় আমরা তাদের কাজ কঠিন করে তুলতে পারি, আবার সহজও করে দিতে পারি। আমাদের চেষ্টা থাকবে, ওদের কাজটা কঠিন করে দেয়ার। এই দুই উইকেটের যে কোনো একটা যদি নিতে পারি, তাহলে ম্যাচটা আবার উন্মুক্ত হয়ে যাবে।”

 

তামিম যখন উইকেটে ছিলেন, সঙ্গে জুটিতে যখন ছিলেন মুশফিকুর রহিম, এক সময় মনে হচ্ছিলো আরও বড় লক্ষ্য দিতে পারবে বাংলাদেশ। কিন্তু প্যাট কামিন্সের অসাধারণ এক বলে ৭৮ রান করে ফেরেন তামিম। ননস্ট্রাইক প্রান্তে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রান আউট হন মুশফিক। পরে ৩৫ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ অলআউট হয় ২২১ রানে।

যে অবস্থায় ছিল দল, সেখান থেকে লিডটা আরও বড় না হওয়ায় খানিকটা হতাশ দল, জানালেন তামিম।

“এমনিতে রানটা কম না। এক দিন আগে হলেও ২৬০ রানের লক্ষ্য দিয়ে আমরা খুশি থাকতাম। কিন্তু আজকে আমাদের কাছে সুযোগ ছিলো লিড বাড়িয়ে তিনশর বেশি করার। ওইদিক দিয়ে কিছুটা হতাশ। ৩০০ হলে সুবিধা হতো।”

চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল দারুণ। ২৮ রানের মধ্যে ম্যাট রেনশ ও উসমান খাওয়াজাকে ফেরাতে পেরেছিল দল। এরপর ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান ওয়ার্নার ও স্মিথ। দিন শেষেও অপরাজিত দুজন।

তৃতীয় দিনের শেষটা ভালো না হওয়ায় সহ-অধিনায়ক দায় দিলেন বোলিংকে। জানালেন চতুর্থ দিনের করণীয়টাও।

“অস্ট্রেলিয়া আজ ভালো ব্যাটিং করেছে। আমরা খুব ভালো বোলিং করেছিলাম। তবে দুটি উইকেট নেওয়ার পর আমরা আরও ভালো বোলিং করতে পারতাম। আমাদের এখন ভালো জায়গায় বল করতে হবে। আজও আমরা আরও জায়গায় বল করতে পারতাম। আরও নিয়ন্ত্রিত বল করতে পারতাম। দিনটা আরো ভালো হতে পারত।”

“কাল যা করতে হবে, আমাদের ভালো জায়গায় বোলিং করতে হবে। উইকেটের জন্য নয়। ডট বলের জন্য যদি বল করি, চাপ দিতে থাকলে, উইকেট আসবে।”

এই টেস্ট অনেকটাই ফিরিয়ে আনছে মিরপুরে সবশেষ টেস্টের স্মৃতি। গত অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রায় একই লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ, ২৭৩। রান তাড়ায় বিনা উইকেট ইংলিশদের রান ছিল ১০০। সেখান থেকে এক সেশনে ১০ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় তারা ১৬৪ রানে।

সেই টেস্টকে অনুপ্রেরণা মানছেন তামিমও। তবে এটাও জানেন, আসল কাজটি করতে হবে মাঠেই।

“ইংল্যান্ডের ম্যাচটার মতোই পরিস্থিতি। ১৫০ রান হয়ত খুব বেশি মনে হচ্ছে না। তবে উইকেটের ধরন এমন, যে দুজন আছে তাদের একজন আউট হয়ে গেলে যে কোনো কিছু হতে পারে।”

“এরকম অনেক ম্যাচ দেখেছি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিও। তবে ইতিহাস দেখে চিন্তা করলে চলবে না। কাজটা করতে হবে আমাদের। যে দুজন উইকেটে আছে, তারা ওদের সেরা ব্যাটসম্যান। যত দ্রুত ওদের আউট করতে পারব, তত সুযোগ থাকবে আমাদের।”