জিমি নিশামের তাণ্ডবে বিপিএল ইতিহাসের খরুচে বোলিংয়ের তালিকায় সবার ওপরে উঠে গেল মুশফিক হাসানের নাম।
Published : 26 Feb 2024, 08:02 PM
মুশফিক হাসানের অফ স্টাম্পের বাইরে লো ফুল টস ডেলিভারি ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চার পেলেন জিমি নিশাম। ওই বাউন্ডারিতে ওভার শুরুর পর তরুণ পেসারের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দিলেন কিউই অলরাউন্ডার। ওভারে আরও একটি চারের সঙ্গে তিন ছক্কা হজম করলেন মুশফিক। তার নাম লেখা হয়ে গেল অনাকাঙ্ক্ষিত এক রেকর্ডে।
নিশাম টর্নেডোর সামনে পড়ে ৪ ওভারে মুশফিক খরচ করেছেন ৭২ রান। বিপিএলের সব আসর মিলিয়ে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান খরচের রেকর্ড এটি।
শেষ ওভারেই তিনি দিয়েছেন ২৭ রান। সব মিলিয়ে ৮ চার ও ৫টি ছক্কা হজম করেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের তরুণ পেসার। যার বেশিরভাগই এসেছে নিশামের ব্যাট থেকে।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে এই রেকর্ড গড়লেন মুশফিক। তিনি দেদার রান বিলিয়ে দেওয়ায় বিব্রতকর রেকর্ড থেকে মুক্তি পেলেন আল আমিন হোসেন। চলতি আসরেই কুমিল্লা বিপক্ষে ৪ ওভারে ৬৯ রান দেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অভিজ্ঞ পেসার।
বিপিএলে এক ইনিংসে ৬০ রান খরচের নজির আছে আর একটি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে চট্টগ্রামের নাসির হোসেন ৪ ওভারে দেন ৬০ রান।
সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে এক ইনিংসে মুশফিকের চেয়ে বেশি রান খরচের ঘটনা আছে ৭টি। বিশ্বরেকর্ডটি গড়েছেন ইংল্যান্ডের লেগ স্পিনার ম্যাটি ম্যাককিয়েরনান। ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে সমারসেটের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৮২ রান দেন ডার্বিশায়ারের লেগ স্পিনার।
আগের তিন ম্যাচে দারুণ বোলিং করেন মুশফিক। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষা নিয়ে তিনি ধরেন ৬ শিকার। এই রংপুরের বিপক্ষেই লিগ পর্বের ম্যাচে ৪ ওভারে স্রেফ ১৮ রানে তিনি নেন ৩ উইকেট। যা তার ছোট্ট টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং।
একই দলের বিপক্ষে পরের লড়াইয়ে এবার মুদ্রার অন্য পিঠ দেখলেন ২১ বছর বয়সী পেসার। সপ্তম ওভারে আক্রমণে আসা মুশফিককে চতুর্থ বলে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা ওড়ান নিশাম। পরে ত্রয়োদশ ওভারে পুনরায় বোলিংয়ে এলে প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি মারেন কিউই তারকা।
একই ওভারে তাকে চার ও ছক্কা মারেন নিকোলাস পুরান। প্রথম দুই ওভারে মুশফিকের খরচ ৩৪ রান।
শেষের দিকে আবার মুশফিকের হাতে বল দেন লিটন কুমার দাস। অষ্টাদশ ওভারে তাকে শুধু একটি চার মারতে পারেন নুরুল হাসান সোহান। সেই সাহস থেকেই হয়তো শেষ ওভারেও নিশামের সামনে মুশফিককে আনেন লিটন। কিন্তু এবার বুমেরাং হয় কুমিল্লা অধিনায়কের সিদ্ধান্ত।
চার মেরে ওভার শুরুর পর দ্বিতীয়টিতে কোমর উচ্চতার নো বলে আরেকটি বাউন্ডারি মারেন নিশাম। পরের দুই বলে ছক্কা মেরে নব্বইয়ে পৌঁছে যান তিনি। এক বল পর আরেকটি ছক্কা মেরে জাগান সেঞ্চুরির সম্ভাবনা। তবে ওভারের শেষ বলে আর কাঙ্ক্ষিত বাউন্ডারি খুঁজে নিতে পারেননি নিশাম।
সব মিলিয়ে মুশফিকের ১৬ বলে ৪টি করে চার-ছক্কায় ৪৭ রান নেন নিশাম। পাঁচ নম্বরে নেমে অপরাজিত ইনিংসে ৮ চার ও ৭ ছক্কায় ৪৯ বলে তিনি করেন ৯৭ রান। শুরুর ধাক্কা সামলে ৬ উইকেটে ১৮৫ রানে পৌঁছায় রংপুর।