আইসিসি অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪
মেয়েদের বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন অ্যানেরি ড্রেকসেন, স্যাসকিয়া হোর্লি, ফ্রেয়া সার্জেন্ট ও শ্রেয়াঙ্কা পাতিল।
Published : 28 Dec 2024, 06:24 PM
টেস্ট ক্রিকেটে স্বপ্নের মতো একটি বছর কাটানো গাস অ্যাটকিনসনের সামনে দারুণ অর্জনের হাতছানি। ২০২৪ সালে আইসিসির ছেলেদের বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন ইংল্যান্ডের এই পেসার। সেরার লড়াইয়ে তার সঙ্গী শ্রীলঙ্কার কামিন্দু মেন্ডিস, ওয়েস্ট ইন্ডিজের শামার জোসেফ ও পাকিস্তানের সাইম আইয়ুব।
মেয়েদের বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যানেরি ড্রেকসেন, স্কটল্যান্ডের স্যাসকিয়া হোর্লি, আয়ারল্যান্ডের ফ্রেয়া সার্জেন্ট ও ভারতের শ্রেয়াঙ্কা পাতিল।
এই দুই সংক্ষিপ্ত তালিকা শনিবার প্রকাশ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থা।
গণমাধ্যম প্রতিনিধি, আইসিসি ভোটিং একাডেমি এবং সমর্থকদের ভোটে নির্বাচিত হবেন বিজয়ী। আইসিসির ওয়েবসাইটে ভোট দিতে পারবেন সমর্থকরা।
জানুয়ারির শেষ দিকে ঘোষণা করা হবে বিজয়ী।
গাস অ্যাটকিনসন (ইংল্যান্ড)
২০২৪ সালে ১১ টেস্টে ২২.১৫ গড়ে ৫২ উইকেট শিকার করেন অ্যাটকিনসন।
গত জুলাইয়ে লর্ডসে অভিষেক টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৭টিসহ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে সেরার স্বীকৃতি পান অ্যাটকিনসন। অভিষেক সিরিজে তিন টেস্টে তিনি উইকেট নেন মোট ২২টি।
পরের মাসে লর্ডসে ফিরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অ্যাটকিনসন সেঞ্চুরি করেন আট নম্বরে নেমে। পুরুষ ক্রিকেটার হিসেবে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে লর্ডসের তিন অনার্স বোর্ডেই (ইনিংসে ৫ উইকেট, ম্যাচে ১০ উইকেট ও ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি) নাম তোলার কীর্তি গড়েন তিনি। এজন্য দুই ম্যাচে তার লাগে স্রেফ ৪ ইনিংস (ব্যাটিং-বোলিং মিলিয়ে)।
ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬ টেস্ট মিলিয়ে তিনি শিকার করেন মোট ৩৪ উইকেট। পরে পাকিস্তান সফরে দুটি টেস্ট খেলে নেন ৬ উইকেট। বছরের শেষে নিউ জিল্যান্ড সফরে তিন টেস্টে ১২ উইকেট নেন ২৬ বছর বয়সী পেসার। ২০০৮ সালের পর প্রথমবার নিউ জিল্যান্ডে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় ইংল্যান্ড।
কামিন্দু মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা)
এই বছরে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৩২ ম্যাচে ৫০.০৩ গড়ে ১ হাজার ৪৫১ রান করেন কামিন্দু। সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল ছিলেন তিনি টেস্টে। ৯ টেস্টে ৭৪.৯২ গড়ে করেন ১ হাজার ৪৯ রান। যেখানে ৫টি সেঞ্চুরির পাশে ফিফটি ৩টি।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এক দশক পর শ্রীলঙ্কার টেস্ট জয়ে তার ছিল বড় অবদান। ওই সফরে তিন টেস্টে তিনি করেন ২৬৭ রান।
১৪৭ বছরের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রথম আট টেস্টের প্রতিটিতে পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলার কীর্তিও গড়েন তিনি।
শামার জোসেফ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
বছরের শুরুতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জোসেফের পথচলা শুরু হয় টেস্ট দিয়ে। গায়ানার নিভৃত গ্রাম থেকে উঠে আসা ক্রিকেটার অ্যাডিলেইডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেকের দিন ব্যাট হাতে ১১ নম্বরে নেমে কার্যকর ইনিংস খেলার পর প্রথম ইনিংসে নেন ৫ উইকেট। প্রথম ক্যারিবিয়ান বোলার হিসেবে টেস্ট অভিষেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঁচ উইকেটের স্বাদ পান তিনি।
ওই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারলেও ব্রিজবেনে পরের টেস্টে দলের জয়ের নায়ক তিনিই। ১৯৯৭ সালের পর প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় ক্যারিবিয়ানরা। দুই ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে সিরিজ-সেরার পুরস্কারও জেতেন জোসেফ।
সব মিলিয়ে ২০২৪ সালে ৮ টেস্টে ২৬.৭৫ গড়ে তিনি নেন ২৯ উইকেট। ইনিংসে পাঁচ উইকেটের স্বাদ পান তিনবার।
এছাড়া এই বছরে ৯টি টি-টোয়েন্টিতে তার উইকেট ১০টি, একটি ওয়ানডেতে উইকেট ১টি।
সাইম আইয়ুব (পাকিস্তান)
এই বছর তিন সংস্করণেই ধারাবাহিকভাবে আলো ছড়ান সাইম। বিশেষ করে ওয়ানডেতে তার পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত। ৯ ওয়ানডেতে ৩ সেঞ্চুরিতে ৬৪.৩৭ গড়ে ৫১৫ রান করেন এই ওপেনার।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিন ম্যাচের সিরিজে তিনি সেঞ্চুরি করেন দুটি। প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে কোনো ওয়ানডে সিরিজে সবকটি ম্যাচ হারে প্রোটিয়ারা।
এর আগে অস্ট্রেলিয়া সফরেও ভালো করেন সাইম। ২২ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় পাকিস্তান।
এই বছর ৬ ওয়ানডেতে বোলিং করে ৫টি উইকেটও পান সাইম।
এছাড়া এই বছর ৭ টেস্টে ২৬ গড়ে তিনি করেন ৩৬৪ রান। ১৯টি টোয়েন্টিতে ১৪৩.৬৭ স্ট্রাইক রেটে করেন ২৭৫ রান।
অ্যানেরি ড্রেকসেন (দক্ষিণ আফ্রিকা)
এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার এবছরে ১৭টি টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট হাতে ১৬১ রান করার পাশাপাশি হাত ঘুরিয়ে উইকেট নেন ৫টি। ৪ ওয়ানডেতে রান করেন ৭০, উইকেট নেন ৬টি। আর ২ টেস্টে করেন ৬০ রান।
স্যাসকিয়া হোর্লি (স্কটল্যান্ড)
এই বছরে ওয়ানডে অভিষিক্ত অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার ৫ ম্যাচে ৬৯ গড়ে রান করেন ২৭৬। প্রথম স্কটিশ ক্রিকেটার হিসেবে উইমেন’স ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন তিনি। হাত ঘুরিয়ে উইকেট নেন ৯টি।
বছরে ১০টি টি-টোয়েন্টি খেলে ১৪২ রান করার পাশাপাশি তিনি উইকেট নেন ৩টি।
ফ্রেয়া সার্জেন্ট (আয়ারল্যান্ড)
১৮ বছর বয়সী অফ স্পিনার এই বছরে ১১ ওয়ানডেতে উইকেট নেন ১৩টি। বছরে নিজের প্রথম ম্যাচে তিনি ২৯ রানে ৩ উইকেট নেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। আর বছরে ৯ টি-টোয়েন্টিতে তার প্রাপ্তি ৭ উইকেট।
শ্রেয়াঙ্কা পাতিল (ভারত)
২২ বছর বয়সী অফ স্পিনার সাদা বলে আলো ছড়ান বছরজুড়ে। ১৩ টি-টোয়েন্টিতে তিনি উইকেট নেন ১৫টি। আর ২টি ওয়ানডেতে নেন ৪ উইকেট।