আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট ৭ উইকেটে জিতেছে সাকিব আল হাসানের দল।
Published : 07 Apr 2023, 10:08 AM
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২১৪
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৬৯
আয়ারল্যান্ড ২য় ইনিংস: (আগের দিন ২৭/৪) ১০৭ ওভারে ২৮৬/৮ (টেক্টর ৫৬, মুর ১৬, টাকার ১০৮, ম্যাকব্রাইন ৭০*, অ্যাডায়ার ১৩, হিউম ৯*; সাকিব ১৩-৪-২৬-২, তাইজুল ৩৮-১৫-৮৬-৪, মিরাজ ২৭-৬-৫৭-০, ইবাদত ১২-১-৩৬-১, শরিফুল ৮-১-৩৫-১, খালেদ ৭-২-৩৮-০)
বাংলাদেশকে হতাশায় ডুবিয়ে স্বপ্নময় এক দিন কাটানো আয়ারল্যান্ড এখন জয়ের কথাও ভাবতে পারছে। এক সময়ে ইনিংস ব্যবধানে হার এড়ানোই ছিল তাদের জন্য অনেক দূরের পথ। লরকান টাকারের সেঞ্চুরি এবং হ্যারি টেক্টর ও অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের ফিফটিতে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দেওয়ার পথে রয়েছে সফরকারীরা।
আগের দিন শেষ বেলায় ১৭ ওভার বোলিং করে ৪ উইকেট নিয়েছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন ৯০ ওভার বোলিং করে স্বাগতিকরা নিতে পেরেছে কেবল চার উইকেট!
তৃতীয় দিন শেষে সফরকারীদের রান ৮ উইকেটে ২৮৬।
বল হাতে বাংলাদেশকে ভোগানো অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইন খেলছেন ৭১ রানে। তার ১৪৪ রানের চমৎকার ইনিংস গড়া আর চার ও এক ছক্কায়। গ্রাহাম হিউম ব্যাট করছেন ৯ রানে। অবিচ্ছিন্ন নবম উইকেটে তারা ৫১ বলে গড়েছেন ২১ রানের জুটি।
দিনের পঞ্চম ওভারে প্রথমবার বল হাতে নিয়েই ব্রেক থ্রু এনে দিলেন ইবাদত হোসেন চৌধুরি। ওভারের দ্বিতীয় বলে উড়িয়ে দিলেন অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের অফ স্টাম্প।
ইবাদতের অফ স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথ ডেলিভারি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেছিলেন ম্যাকব্রাইন। বল তার ব্যাটের বাইরের কানা ফাঁকি দিয়ে আঘাত হানে অফ স্টাম্পে। ভাঙে ৭৭ বল স্থায়ী ২৪ রানের জুটি।
ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করা ম্যাকব্রাইন করেছেন ৭২ রান। ১৫৬ বলের ইনিংস সাজিয়েছেন ৮ চার ও ১ ছক্কায়।
১১২ ওভারে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ২৮৯ রান। তাদের লিড ১৩৪। উইকেটে দুই ব্যাটসম্যান গ্রাহাম হিউম ও বেন হোয়াইট।
অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের পর গ্রাহাম হিউমকেও আউট করলেন ইবাদত হোসেন। আগের দিনের স্কোরের সঙ্গে আর ৬ রান যোগ করতেই অলআউট আয়ারল্যান্ড।
ইবাদতের অফ স্টাম্পের বাইরের বল বেশ দূর থেকে অফ সাইডে খেলার চেষ্টা করেন হিউম। বল তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে।
৫৫ বলে ১৪ রান করেছেন হিউম। দ্বিতীয় ইনিংসে আয়ারল্যান্ড অলআউট ২৯২ রানে। জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৩৮।
চতুর্থ দিন সকালে সব মিলিয়ে ৯ ওভার খেলেছে আয়ারল্যান্ড। দিনের পঞ্চম ওভারে ম্যাকব্রাইনকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেক থ্রুও দেন ইবাদত।
ইবাদতের শিকার মোট ৩ উইকেট। তাইজুল ইসলাম নিয়েছেন ৪টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২১৪
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৬৯
আয়ারল্যান্ড ২য় ইনিংস: (আগের দিন ২৮৬/৮) ১১৬ ওভারে ২৯২ (ম্যাকব্রাইন ৭২, হিউম ১৪* হোয়াইট ০; সাকিব ১৩-৪-২৬-২, তাইজুল ৪২-১৬-৯০-৪, মিরাজ ৩০-৮-৫৮-০, ইবাদত ১৫-৩-৩৭-১, শরিফুল ৮-১-৩৫-১, খালেদ ৭-২-৩৮-০)
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ইনিংস সূচনা করেছিলেন তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে শান্তর জায়গায় নামলেন লিটন কুমার দাস।
প্রায় সাড়ে তিন বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ওপেনিংয়ে নামলেন তিনি। সবশেষ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেন করেন লিটন।
কিপার হিসেবে খেলা ম্যাচে এর আগে স্রেফ একবারই ইনিংস সূচনা করেন তিনি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পচেফস্ট্রুম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ইমরুল কায়েসের সঙ্গে নেমেছিলেন তিনি।
সব মিলিয়ে এর আগে দশবার ওপেনিংয়ে নামেন লিটন। তবে তার পরিসংখ্যান তেমন ভালো নয়। দশ ইনিংসে করেছেন মোট ১৫৩ রান। নেই কোনো ফিফটি। সর্বোচ্চ ৩৩ রান।
প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ওপেনিংয়ে নামলেও লিটন কুমার দাসের ব্যাটিংয়ে নেই কোনো জড়তা। ছক্কা-চারে শুরু করেছেন নিজের ইনিংস। সেটিও আবার প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের সেরা বোলার অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের বলে।
দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে স্ট্রাইক পান লিটন। ম্যাকব্রাইনের অফ স্টাম্প লাইনের বল ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে লং অন দিয়ে ছক্কা মারেন কিপার-ব্যাটসম্যান। পরের বলে স্কয়ার কাটে চার মারেন পয়েন্টের সামনে দিয়ে।
এর আগে প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে কভার ড্রাইভে চার মেরে দলের রানের খাতা খোলেন তামিম ইকবাল।
মার্ক অ্যাডায়ারের বাউন্সারে পুল করেছিলেন লিটন দাস। ব্যাটে-বলে হয়েছে ভেবেই হয়তো ব্রডকাস্টের ক্যামেরা চলে যায় স্কয়ার লেগের দিকে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই সেটির আবার ফিরতে হয় ক্রিজে। কারণ বল যে লেগেছে অফ স্টাম্পে!
পুল করলেও লিটনের ব্যাটে লাগেনি বল। ব্যাট ফাঁকি দিয়ে প্রথমে লাগে তার হেলমেটে। পরে বাহুতে লেগে পড়ে ব্যাটের ওপর। ব্যাট থেকে সেটি গিয়ে আঘাত করে অফ স্টাম্পে। এমন অদ্ভুভাবেই শেষ হলো লিটনের ইনিংস।
দীর্ঘ দিন পর ইনিংস সূচনা করতে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন লিটন। প্রথম দুই বলে মারেন ছয় ও চার। আউট হওয়ার এক বল আগেও দারুণ লফটেড ড্রাইভে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে চার মারেন তিনি।
কিন্তু অদ্ভুত বোল্ডে লিটনের নান্দনিক ইনিংসটি বড় হলো না। ১৯ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ২৩ রান। নতুন ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত।
৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩২ রান। জয়ের জন্য প্রয়োজন আর ১০৬ রান। তামিম ইকবাল খেলছেন ৮ রানে।
ব্যাটিংয়ে নামার পর থেকেই অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের বিপক্ষে খুব একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। শেষ পর্যন্ত ফিরলেন এই অফ স্পিনারের বলেই।
ম্যাকব্রাইনের অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে আরও বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারি দ্বিধা নিয়ে জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলার চেষ্টা করেছিলেন শান্ত। বল তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে জমা পড়ে স্লিপে থাকা অ্যান্ড্রু বালবার্নির হাতে।
আইরিশ অধিনায়ক ক্যাচটি পরিষ্কারভাবে নিয়েছেন কি না তা নিয়ে সংশয় ছিল আম্পায়ারদের। সফট সিগনাল 'নট আউট' দিয়ে তারা এই সিদ্ধান্ত পাঠান থার্ড আম্পায়ারের কাছে।
বেশ লম্বা সময় ধরে কয়েকটা অ্যাঙ্গেল থেকে রিপ্লে দেখে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলে দেন থার্ড আম্পায়ার। কোনো অ্যাঙ্গেল থেকেই অবশ্য নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ ছিল না বল সরাসরি ফিল্ডারের হাতে গিয়েছিল। প্রথম ইনিংসে খালি হাতে ফেরা শান্ত এবার ৯ বলে ১ চারে করেন ৪ রান।
শান্তর বিদায়ে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই দৃষ্টিনন্দন কভার ড্রাইভে চার মারেন মুশফিকুর রহিম।
৮ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৪৭ রান। জয়ের জন্য প্রয়োজন ৯১ রান। তামিম ইকবাল অপরাজিত ১১ রানে।
দ্রুত সময়ের মধ্যে দুই উইকেট হারানোর পর পাল্টা আক্রমণের পথে হেঁটে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। তাকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন তামিম ইকবাল। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েছে বাংলাদেশ।
১৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৮৯ রান। জয়ের জন্য প্রয়োজন আর ৪৯ রান। মুশফিক ৫ চারে ১৯ বলে ২৯ ও তামিম ২ চারে ৪৮ বলে ২৪ রানে অপরাজিত।
দিনের শুরুতে স্রেফ ৬ রানের মধ্যে আয়ারল্যান্ডের বাকি দুই উইকেট নিয়ে ১৩৮ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।
রান তাড়ায় নাজমুল হোসেন শান্তর জায়গায় ওপেনিংয়ে নামেন লিটন কুমার দাস। প্রথম দুই বলে ছক্কা-চারে ইনিংস শুরু করেন তিনি। তবে অদ্ভুতভাবে বোল্ড হয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরেন ১৯ বলে ২৩ রান করে।
তিনে নেমে টিকতে পারেননি শান্ত। তৃতীয় আম্পায়ারের প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তে ৪ রান করে ফেরেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ৪৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
তবে উইকেটে গিয়ে প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের আভাস দেন মুশফিক। বিরতির আগপর্যন্ত একই অভিপ্রায়ে খেলে যান তিনি। স্কয়ার কাট, কভার ড্রাইভ, সুইপ, রিভার্স সুইপে সাবলীল ব্যাটিং করেছেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান।
অন্য প্রান্তে তামিম খেলেছেন রয়েসয়ে। মুশফিকের সঙ্গে তার অবিচ্ছিন্ন জুটিতে এসেছে ৪৯ বলে ৪৬ রান।
সাবলীল ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিচ্ছেন মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল। এরই মধ্যে তৃতীয় উইকেট জুটিতে পঞ্চাশ রান যোগ করে ফেলেছেন দুজন। দলীয় সংগ্রহ ছুঁয়েছে ১০০।
১৯ ওভারে বাংলাদেশের বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১০০ রান। ওভারপ্রতি পাঁচের বেশি করে রান তুলছে বাংলাদেশ। এর বড় কৃতিত্ব মুশফিকের। ওয়ানডে সিরিজের মতো দ্রুতগতিতেই রান তুলছেন তিনি।
জুটির পঞ্চাশ হতে লেগেছে ৬২ বল। যেখানে মুশফিকের অবদান ৩৪ রান, তামিমের ১৫। মার্ক অ্যাডায়ারকে ফাইন লেগ দিয়ে চার মেরে জুটির পঞ্চাশ পূরণ করেন মুশফিক। পরের বলে চার মেরে দলকে পৌঁছে দেন ১০০ রানে।
আগের ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মুশফিক এবার জাগিয়েছেন ফিফটির সম্ভাবনা। ৭ চারে ২৮ বলে ৩৮ রান করে ফেলেছেন তিনি। তামিম খেলছেন ৫৮ বলে ২৬ রান নিয়ে।
বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের সামনে পড়া পায়ের ছাপগুলো বেশ ভোগাচ্ছে অভিজ্ঞ ওপেনারকে। তাই কোনো ঝুঁকি না নিয়ে মুশফিককে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
শুরু থেকেই সাবধানী ব্যাটিং করছিলেন তামিম ইকবাল। কিন্তু লেগ স্পিনার আসতেই যেন ঘটল মনোযোগে ব্যাঘাত। আলগা এক ডেলিভারিতে বড় শট খেলতে গিয়ে বিলিয়ে এলেন উইকেট।
বেন হোয়াইটের লং হপ ডেলিভারি পুল করে ছক্কা মারার চেষ্টা করেছিলেন তামিম। কিন্তু ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে বল উঠে যায় আকাশে। ওয়াইড মিড অন থেকে অনেকটা পথ দৌড়ে মিড উইকেটের কাছাকাছি জায়গা থেকে দারুণ ক্যাচ নেন মারে কমিন্স। ভাঙে ৭৪ বল স্থায়ী ৬২ রানের জুটি।
৬৫ বলে ৩ চারে ৩১ রান করেন তামিম। পাঁচ নম্বরে নামা নতুন ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক। ৫৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে এ নিয়ে তৃতীয়বার পাঁচে নামলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
অন্য প্রান্তে মুশফিকুর রহিম খেলছেন ৩৯ রানে। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১০৯ রান।
প্রথম ইনিংসে পায়ের পেছন দিয়ে বোল্ড হয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরেছিলেন মুমিনুল হক। দ্বিতীয় ইনিংসেও ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাটিং করছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এবার লরকান টাকারের ব্যর্থতায় অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন।
অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে বেরিয়ে যাওয়া বলে ক্রিজ ছেড়ে বড় শট খেলার চেষ্টা করেন মুমিনুল। পরাস্ত হন টার্নে, এতে স্টাম্পিংয়ের সুযোগ পান টাকার।
কিন্তু বলটি গ্লাভসেই নিতে পারেননি আইরিশ কিপার। ফলে ৫ রানে বেঁচে যান মুমিনুল।
ওই ওভারের তৃতীয় বলে মিড উইকেটের দিকে খেলতে গিয়ে লিডিং এজ হয় তার। অল্পের জন্য মিড-অন ফিল্ডারের সামনে পড়ায় সে দফায়ও কোনো বিপদ ঘটেনি।
২২ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১১২ রান। জয়ের জন্য প্রয়োজন আর ২৬ রান। মুশফিকুর রহিম খেলছেন ৪০ রানে।
দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় ইনিংসেও সাবলীল মুশফিকের ব্যাট। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে এবার করলেন ফিফটি। এই প্রথম একই টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি ও ফিফটি করলেন মুশফিক।
৪৩ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারেন মুশফিক। এই ধারা ধরে রাখেন ইনিংসের বাকি অংশেও। সব মিলিয়ে ৭ চারে ৪৭ বলে পূরণ করেন ফিফটি।
টেস্ট ক্যারিয়ারে মুশফিকের ২৬তম ফিফটি এটি। তার ব্যাটে ভর করে জয়ের খুব কাছে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ। আর প্রয়োজন স্রেফ ৭ রান।
লরকান টাকার, হ্যারি টেক্টর ও অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের ব্যাটে স্বপ্নের মতো একটি দিন কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল আয়ারল্যান্ড। ইনিংস পরাজয়ের চোখ রাঙানি এড়ানোর পর স্বপ্ন দেখছিল জয়ের। অভাবনীয় কিছুর জন্য স্কোর বোর্ডে ১৭০-১৮০ রান চেয়েছিল সফরকারীরা। কিন্তু তাদের আগেভাগেই থামিয়ে স্বস্তির জয়ে মাঠ ছাড়ল বাংলাদেশ।
চতুর্থ দিন সকালে ৩৬ মিনিট টেকে আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস। ৯ ওভার ব্যাট করে যোগ করতে পারে কেবল ৬ রান। দুটি উইকেটই নেন গতিময় পেসার ইবাদত হোসেন।
১৩৭ রানের পুঁজি নিয়ে লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। কিন্তু লম্বা সময় পর ওপেনিংয়ে ফিরে লিটন দাসের ঝড়ো শুরুর পর মুশফিকুর রহিমের অপরাজিত ফিফটিতে সহজেই জিতেছে সাকিব আল হাসানের দল। শেষটায় উইকেট বিলিয়ে এলেও দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে অনেকটা সময় মুশফিককে সঙ্গ দেন তামিম ইকবাল।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ২৭.১ ওভারে লক্ষ্য ছুয়ে ফেলে বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রান তাড়ায় স্বাগতিকদের এটি কেবল দ্বিতীয় জয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২১৪
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৬৯
আয়ারল্যান্ড ২য় ইনিংস: ২৯২
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৩৮) ২৭.১ ওভারে ১৩৮/৩ (তামিম ৩১, লিটন ২৩, শান্ত ৪, মুশফিক ৫১*, মুমিনুল ২০*; অ্যাডায়ার ৬-০-৩০-১, ম্যাকব্রাইন ১৩.১-০-৫২-১, হোয়াইট ৭-০-৪৩-১, টেক্টর ১-০-৫-০)
২০০৭ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে ৭৪ রানে হারে তারা।
দুই বছর পর প্রথমবারের মতো খেলে টি-টোয়েন্টিতে। ২০০৯ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে বাংলাদেশকে চমকে দিয়ে আয়ারল্যান্ড জেতে ৬ উইকেটে।
এবারই প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হলো দল দুটি। সেখানে শেষ হাসি হাসল বাংলাদেশ। নিজেদের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো দলের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম টেস্টে জিতল বাংলাদেশ।