অস্ট্রেলিয়া সফরে দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচে জয়ের জন্য শেষ দিনে বাংলাদেশ এইচপি দলের প্রয়োজন ৬ উইকেট, পাকিস্তান ‘এ’ দলের দরকার ১৬০ রান।
Published : 28 Jul 2024, 04:15 PM
প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা দুই ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান জয় ও আইচ মোল্লা দ্বিতীয় ইনিংসেও করলের ফিফটি। তবে অন্য ব্যাটসম্যানরা ভালো না করায় বড় হলো না দলের স্কোর। রান তাড়ায় পাকিস্তান শাহিনসের শুরুটা হলো দুর্দান্ত। সেই উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর অবশ্য দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) দল।
সব মিলিয়ে চার দিনের ম্যাচের তৃতীয় দিনের শেষটা হলো উত্তেজনাময়। অপেক্ষা এখন শেষ দিনের রোমাঞ্চের
অস্ট্রেলিয়ার সফরে দ্বিতীয় চারদিনের ম্যাচটিতে জয়ের জন্য শেষ দিনে বাংলাদেশ এইচপি দলের প্রয়োজন ৬ উইকেট, পাকিস্তান শাহিনসের (পাকিস্তান ‘এ’) প্রয়োজন ১৬০ রান।
ডারউইনে রোববার বাংলাদেশ এইচপি দল দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ২১৬ রানে। অধিনায়ক জয়ের ব্যাট থেকে আসে ৬৫ রান। লড়িয়ে ব্যাটিংয়ে আইচ করেন ৫৮। এই নিয়ে সফরের চার ইনিংসের তিনটিতেই ফিফটি করলেন ২১ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।
প্রথম ইনিংসের ৭৯ রানের লিড মিলিয়ে পাকিস্তান শাহিনসের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৯৬। রান তাড়ায় ৯৬ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়া পাকিস্তানিরা পরে পথ হারিয়ে দিন শেষ করে ৪ উইকেটে ১৩৬ রান নিয়ে। দুই ব্যাটসম্যানকে শূন্য রানে ফেরান রেজাউর।
ডারউইনের মারারা ওভালে ৩ উইকেটে ৮৪ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ এইচপি। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জয় ও আইচ দলকে টেনে নেন আরও কিছুটা দূর। সাবধানী ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকেন দুজন।
এই জুটি ভাঙে মুহাম্মদ আলির বলে জয় বোল্ড হলে। ১১৮ বলে ১১ চারে ৬৫ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
এমনিতে ওপেনার হলেও এ দিন ছয়ে নেমে সাদমান ইসলাম আউট হয়ে যান শূন্য রানেই।
সেই জোড়া ধাক্কা সামলে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন আইচ ও শাহাদাত হোসেন। ষষ্ঠ উইকেটে ৬৩ রানের বন্ধন গড়ে তোলেন তারা।
৩৩ রান করা শাহাদাতকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন খুররাম শাহজাদ।
এরপর আইচ ও মাহিদুল ইসলাম আরেকটি জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু মুহাম্মদ আলির বোলিং তোপে এই জুটি ভাঙার পর দ্রুতই গুটিয়ে যায় ইনিংস।
১২৩ বলে ৯ চারে ৫৮ করে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন আইচ। ৯ রানের মধ্যে শেষ ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এই চারটিসহ ৬৩ রানে ছয় উইকেট নেন আলি। ৩১ বছর বয়সী পেসারের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নবম পাঁচ উইকেটের কীর্তি এটি।
প্রায় তিনশ রানের লক্ষ্যে পাকিস্তানিদের দারুণ সূচনা এনে দেন সাহিবজাদা ফারহান ও হাসিবউল্লাহ খান। ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকেন অধিনায়ক সাহিবজাদা। এক প্রান্ত আগলে রাখেন হাসিবউল্লাহ।
হাসান মুরাদের বাঁহাতি স্পিনে ছক্কা মেরে ৫৪ বলে ফিফটি করেন সাহিবজাদা। এরপরও তিনি এগিয়ে যেতে থাকেন সাবলিল গতিতে।
জুটি ভাঙতে বল হাতে নেন অধিনায়ক জয়। শেষ পর্যন্ত কার্যকর হন তিনিই। তার দ্বিতীয় ওভারে স্টাম্পড হয়ে যান সাহিবজাদা। ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৭০ বলে ৬৮ করেন ২৮ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
সেখান থেকেই শুরু বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর। এই সিরিজে দারুণ ফর্মে থাকা কামরান গুলাম ও অভিজ্ঞ উমার আমিনকে টানা দুই ওভারে ফেরান রেজাউর রহমান রাজা। দুজনের কেউ রান করতে পারেননি।
মুহাম্মাদ ইরফান খান এসে তিনটি চার মারলেও তাকে এলবিডব্লিউ করে দেন হাসান মুরাদ।
ওপেনিং থেকে টিকে থাকা হাসিবউল্লাহ দিনের বাকি সময় পার করে দেন তাইয়াব তাহিরকে সঙ্গী করে।
বাংলাদেশ এইচপি ১ম ইনিংস: ২৫৮
পাকিস্তান শাহিনস ১ম ইনিংস: ১৭৯
বাংলাদেশ এইচপি ২য় ইনিংস: ৭০.১ ওভারে ২১৬ (আগের দিন ৮৪/৩) (পারভেজ ৭, জয় ৬৫, অমিত ২৫, মুরাদ ০, আইচ ৫৮, সাদমান ০, শাহাদাত ৩৩, মাহিদুল ১৩, রেজাউর ৪, রিপন ২, মারুফ ৩*; শাহজাদ ২০-৪-৬৭-৩, আলি ২৪.১-৯-৬৩-৬, উমার ৬-১-১৬-০, আকরাম ১৩-৩-৫১-১, গুলাম ৭-২-১৩-০)।
পাকিস্তান শাহিনস ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৯৬) ৩৭ ওভারে ১৩৬/৪ (আগের দিন ৩৯/২) (সাহিবজাদা ৬৮, হাসিব ৪৪*, গুলাম ০, উমার ০, ইরফান ১৫, তাহির ৪*; রিপন ১২-২-৩৬-০, মারুফ ৫-১-২২-০, রেজাউর ৯-১-৪৭-২, মুরাদ ৮-১-২৫-১, জয় ৩-০-৪-১)।