পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ২১ রানে জিতে সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে গেছে স্বাগতিকরা।
Published : 14 Jan 2024, 03:04 PM
আগের ম্যাচে ভালো শুরু পেয়েও বড় ইনিংস খেলতে না পারার আক্ষেপ এবার ঘুচালেন ফিন অ্যালেন। তার ঝড়ো ইনিংস ও বাকিদের টুকটাক অবদানে বড় সংগ্রহ গড়ল নিউ জিল্যান্ড। রান তাড়ায় শুরুতে ধাক্কা খেলেও বাবর আজম ও ফাখার জামানের ব্যাটে ভালোভাবেই লড়াইয়ে ছিল পাকিস্তান। এই জুটি ভাঙার পর আর পেরে উঠল না তারা।
হ্যামিল্টনে রোববার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে নিউ জিল্যান্ডের জয় ২১ রানে। ১৯৪ রানের পুঁজি গড়ে প্রতিপক্ষকে তারা থামিয়ে দিয়েছে ১৭৩ রানে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে কেন উইলিয়ামসনের দল এগিয়ে ২-০ ব্যবধানে।
প্রথম ম্যাচে ৩৪ রান করা অ্যালেন এবার ৭৪ রান করে জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। এই ওপেনারের ৪১ বলের ইনিংসটি সাজানো ৫ ছক্কা ও ৭ চারে।
কিউইদের এই জয়ে অবদান কম নয় অ্যাডাম মিল্নের। ৩৩ রানে ৪ উইকেট নেন এই পেসার। স্বাগতিকদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ানো বাবর ও ফাখারের ৪৯ বল স্থায়ী ৮৭ রানের জুটি ভাঙেন তিনি। ২ ছক্কা ও ৭ চারে ৬৬ রান করেন বাবর। ফাখারের ২৫ বলে ৫০ রানের খুনে ইনিংসটি গড়া ৫ ছক্কা ও ৩ চারে।
সেডন পার্কে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নিউ জিল্যান্ডকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন অ্যালেন। দ্বিতীয় ওভারে হারিস রউফকে চার ও ছক্কায় ডানা মেলে দেন তিনি। এরপর নিয়মিত বিরতিতে তার ব্যাট থেকে আসতে থাকে বাউন্ডারি।
ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস লম্বা করতে না পারা ডেভন কনওয়ের বিদায়ে ভাঙে ৫৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে ৬৫ রান তোলে নিউ জিল্যান্ড।
পাকিস্তানের বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দিয়ে ২৪ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন অ্যালেন। জমে ওঠে উইলিয়ামসনের সঙ্গে তার জুটি। দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে ১০ ওভার শেষে কিউইদের স্কোর ছিল ১ উইকেটে ১১১। তাদের জুটিতে ফাটল ধরে উইলিয়ামসন হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়ে মাঠ ছাড়লে।
ত্রয়োদশ ওভারে উসামা মিরকে ছক্কা মারার পরের বলে বোল্ড হয়ে যান অ্যালেন। ড্যারিল মিচেল, গ্লেন ফিলিপস, মার্ক চ্যাপম্যান পারেননি তেমন কিছু করতে। দলে ফেরা মিচেল স্যান্টনারের ২ ছক্কা ও ৩ চারে ২৫ রানের ক্যামিও ইনিংসে দুইশর কাছে যায় দলটির রান।
লক্ষ্য তাড়ায় পঞ্চম বলে সাইম আইয়ুবকে হারায় পাকিস্তান। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে ছক্কা মেরে পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ৭৭ ছক্কার রেকর্ড গড়েন মোহাম্মাদ রিজওয়ান। টপকে যান মোহাম্মাদ হাফিজের ৭৬ ছক্কার কীর্তি, যিনি প্রধান কোচ ও টিম ডিরেক্টর হিসেবে এই সফরে দলের সঙ্গে আছেন।
দলীয় ১০ রানে মিল্নের বলে কট বিহাইন্ড হন রিজওয়ান। শুরুর ধাক্কা সামাল দেয় দলটি বাবর ও ফাখারের ব্যাটে। একবার করে জীবন পাওয়া দুই ব্যাটসম্যানই করেন ফিফটি।
বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৫ ছক্কা ও ৩ চারে ২৫ বলে পঞ্চাশ করে মিল্নের বলে বোল্ড হন ফাখার। দশম ওভারে দলীয় ৯৭ রানে বাবর-ফাখারের জুটি ভাঙার পরই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে পাকিস্তান। ইফতিখার আহমেদ, আজম খান পারেননি দলকে টানতে।
১৮তম ওভারে বিদায় নেন ৩৬ বলে ফিফটি করা বাবরও। আগের ম্যাচেও পঞ্চাশের স্বাদ পেয়েছিলেন পাকিস্তানের তারকা ব্যাটসম্যান। শাহিন শাহ আফ্রিদির ১৩ বলে ২২ রানের ইনিংসে কমে কেবল হারের ব্যবধান। নেতৃত্বের শুরুতে টানা দুই ম্যাচ হারলেন আফ্রিদি।
আগামী বুধবার সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৯৪/৮ (অ্যালেন ৭৪, কনওয়ে ২০, উইলিয়ামসন ২৬ আহত অবসর, মিচেল ১৭, ফিলিপস ১৩, চ্যাপম্যান ৪, স্যান্টনার ২৫, মিল্ন ০, সোধি ০, সাউদি ৫, সিয়ার্স ১*; আফ্রিদি ৪-০-৩০-০, রউফ ৪-০-৩৮-৩, আব্বাস ৪-০-৪৩-২, জামাল ৪-০-৪২-১, উসামা ৪-০-৩৯-১)
পাকিস্তান: ১৯.৩ ওভারে ১৭৩ (সাইম ১, রিজওয়ান ৭, বাবর ৬৬, ফাখার ৫০, ইফতিখার ৪, আজম ২, জামাল ৯, আফ্রিদি ২২, আব্বাস ৭, উসামা ০, রউফ ২*; সাউদি ৩.৩-০-৩১-২, মিল্ন ৪-০-৩৩-৪, স্যান্টনার ৪-০-৪৭-০, সিয়ার্স ৪-০-২৮-২, সোধি ৪-০-৩৩-২)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ২১ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ফিন অ্যালেন
সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে নিউ জিল্যান্ড