‘সিনিয়রদের পারফর্ম করার জন্য বাড়তি টাকা দেওয়া হয় না, দায়িত্ব দলের সবার’, বাংলাদেশের ব্যর্থতায় মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর বাড়তি দায় দেখেন না জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাদ্দিন।
Published : 27 Feb 2025, 09:47 AM
অভিজ্ঞতা ২৫০ ম্যাচের হোক কিংবা ২৫ ম্যাচের, জাতীয় দলের ম্যাচের ক্ষেত্রে আলাদা করে দেখতে চান না মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। তার যুক্তি, ম্যাচ ফি তো সবারই সমান! কাজেই দায়িত্বও সবারই সমান দেখেন জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ। প্রবল সমালোচনায় থাকা দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর বিদায় নিয়েও কোনো কিছু জানা নেই বলে দাবি করলেন জাতীয় দলের কোচিং স্টাফের এই সদস্য।
প্রথম দুই ম্যাচ হেরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বিদায় নেওয়ার পর নানামুখী সমালোচনা চলছে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে। সেই সমালোচনার একটি বড় অংশ জুড়ে আছেন দলের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ। ওয়ানডে ম্যাচের সংখ্যা কিংবা বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের অভিজ্ঞতা, সব দিক থেকেই দারুণ সমৃদ্ধ এই দুজন। কিন্তু সেই অভিজ্ঞতার ছাপ পারফরম্যান্সে নেই।
বিশেষ করে, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যেভাবে দায়িত্বজ্ঞানের তোয়াক্কা না করে আউট হয়েছেন দুজন, সেটির সমালোচনা চলছে এখনও। প্রথম ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ খেলেননি চোটের কারণে, কিন্তু সেদিন মুশফিক আউট হয়েছিলেন প্রথম বলেই।
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে মাইকেল ব্রেসওয়েলের অফ স্পিনে যেভাবে আত্মহত্যা করেছেন দুজন, দলের সবচেয়ে সিনিয়র দুই ক্রিকেটারকে কাঠগড়ায় তোলার অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে শেষ ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন বললেন, জাতীয় দলে অভিজ্ঞ-অনভিজ্ঞর তফাত তিনি করেন না।
“যে ১৫ জন স্কোয়াডে আছে বা যে ১১ জন খেলে, সবাই কিন্তু ম্যাচ ফি সমানই পায়। এখানে বাড়তি টাকা দেওয়া হয় না সিনিয়রদেরকে, ঠিক কি না? এখান সবারই সমান পারফর্ম করতে হবে। এটা জাতীয় দল। এখানে সবারই সমান দায়িত্ব। প্রত্যেকের সমান ভূমিকা আছে। কারও জন্য বাড়তি নেই। আমার কাছে মনে হয়, তাদের সবাইকে সমান ভাবে পারফর্ম করতে হবে।”
“একটা টুর্নামেন্টে কেউ ভালো নাও খেলতে পারে। সুনির্দিষ্ট একজনের দোষ না ধরে পুরো দল হিসেবে আমরা খারাপ খেলেছি বলেই আমরা ম্যাচ হেরেছি। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স কখনোই আপনাকে কিছু দেবে না। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স করেও কোনো লাভ নেই।”
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের আশা শেষ হয়ে যাওয়ার পর মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়েও নানা আলোচনা চলছে। পরবর্তী বড় আসর ২০২৭ বিশ্বকাপ, যা অনুষ্ঠিত হবে যৌথভাবে দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ায় ওই বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে। ততদিনে মুশফিকের বয়স হবে ৪০, মাহমুদুল্লাহর ৪১। ওই বিশ্বকাপে দুজনের খেলার সম্ভাবনা সামান্যই। কাজেই তাদের খেলা চালিয়ে যাওয়ার যৌক্তিক কারণ খুব একটা নেই।
পাকিস্তানের বিপক্ষে বৃহস্পতিবারের ম্যাচটিই ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর শেষ ম্যাচ, এমন গুঞ্জন খানিকটা আছে। তবে তা উড়িয়ে দিলেন সালাউদ্দিন।
“গুঞ্জন যেহেতু আপনারাই শুনেছেন, আপনারা ফলাফল দিয়ে দিয়েন। আমরা তো কোনো কিছু শুনিনি, ঠিক না? আপনারা যেহেতু শুনেছেন, আপনাদের প্রত্রিকার জন্য আপনার লিখে দিয়েন। আমরা তো এখান থেকে কিছু বলতে পারব না। আমরা এরকম কিছু শুনিনি।”
এটি যদি তাদের শেষ ম্যাচ না-ই হয়, তাহলে দলে জায়গা নিয়েও প্রশ্ন আছে। বিশেষ করে, মুশফিক সবশেষ ১৪ ইনিংসে ফিফটি করতে পেরেছে স্রেফ একটি, সাত ইনিংসেই আউট হয়েছেন দু অঙ্ক ছোঁয়ার আগে। তাকে খেলিয়ে সৌম্য সরকারকে বাইরে রাখায় আগের ম্যাচে প্রশ্ন-সমালোচনা হয়েছে বিস্তর।
তবে শেষ ম্যাচেও দলীয় চিন্তাভাবনায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা সামান্য, ফুটে উঠল সালাউদ্দিনের কথায়।
“দেখুন, যেহেতু একটা টুর্নামেন্ট খেলতে এসেছি…দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নয়, সুযোগ দেওয়ার মতো অবস্থা… এটা নিয়ে এখনও কথা হয়নি। তবে এখানে আসলে সুযোগ দেওয়ার চেয়ে সুযোগ অর্জন করে নেওয়াই ভালো হবে আমাদের জন্য। টিম ম্যানেজমেন্ট যাদেরকে মনে করবে যে সেরা ১১ জন, যাদেরকে নিয়ে ম্যাচ জিততে পারব, তাদেরকে নিয়েই মাঠে নামা উচিত।”