টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) দ্বিমুখী অবস্থান একদমই পছন্দ হচ্ছে না বাঁহাতি এই ওপেনারের।
Published : 24 Jun 2024, 06:39 PM
আফগানিস্তানে নারীদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে-এমন অভিযোগ তুলে দেশটির পুরুষ ক্রিকেট দলের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ স্থগিত করলেও তাদের বিপক্ষে বিশ্বকাপে ঠিকই খেলছে অস্ট্রেলিয়া। আফগান ক্রিকেটারদের বিগ ব্যাশেও খেলার অনুমতি দিয়ে রেখেছে তারা। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) এমন দ্বিমুখী অবস্থান মোটেও পছন্দ নয় উসমান খাওয়াজার। এই অস্ট্রেলিয়ান টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের মতে, আফগানদের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজও খেলা উচিত তাদের।
আফগানিস্তানে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর বন্ধ করে দেয় মেয়েদের ক্রিকেট। তখন থেকেই দেশটিতে নারীর অধিকার প্রসঙ্গে সরব অস্ট্রেলিয়া। এর জেরে আফগান পুরুষ দলের বিপক্ষে একের পর এক সিরিজ স্থগিত করে দেয় তারা।
২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলার কথা ছিল রাশিদ-নাবিদের। কিন্তু সেটা দেখেনি আলোর মুখ। গত বছরের মার্চে তাদের বিপক্ষে প্রস্তাবিত তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ও আগামী অগাস্টে নিরপক্ষ ভেন্যুতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটিও স্থগিত করে দেয় তারা।
অথচ সেই আফগানদের বিপক্ষেই টানা তিনটি বিশ্বকাপে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ে আলোড়ন ফেলে দেয় আফগানরা। এরপর দুই দলের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নিয়ে আলোচনায় যোগ হয় বাড়তি মাত্রা।
অস্ট্রেলিয়াকে রোববার ২১ রানে হারানোর পর আফগানিস্তান অধিনায়ক রাশিদ খান তো সরাসরিই প্রশ্ন তোলেন, “বিশ্বকাপ খেলতে পারলে, দ্বিপাক্ষিক সিরিজে কেন নয়?” তার সঙ্গে অনেকটা একমত খাওয়াজাও। মেলবোর্নে অ্যামাজন প্রাইমের একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আফগানিস্তানে নারীদের মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে সহানুভূতি আছে তার। তবে রাজনীতি থেকে ক্রিকেটকে আলাদা রাখার পরামর্শ দেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
“আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, হ্যাঁ, আমাদের আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা উচিত। এই ধাঁধার উভয় পক্ষের প্রতি আমি সহানুভূতিশীল। আফগানিস্তানে নারী ক্রিকেট নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার অবস্থানের সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত এবং তাদের ভাবনাকে সম্মান করি। তবে এর আরও একটি দিক রয়েছে, খেলাটির প্রচার ও বিকাশ।”
“(আফগানদের সঙ্গে)এই নিয়ে দ্বিতীয়বার অস্ট্রেলিয়া দ্বিপাক্ষিক সিরিজ থেকে সরে দাঁড়াল। আমি রাশিদ খানের সঙ্গে কথা বলেছি, সে সত্যিই হতাশ ছিল। কারণ আফগানিস্তানের মানুষ ক্রিকেট ভালোবাসে এবং তাদের জন্য ক্রিকেট অল্প কয়েকটি বিষয়ের একটি, যা তারা উপভোগ করে এবং এই খেলা তাদের জীবনে আনন্দ নিয়ে আসে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার অপেক্ষায় ছিল তারা, যা তাদের জন্য ছিল বিশাল ব্যাপার, কিন্তু এখন তারা সেটা দেখতে পাবে না। এটা আসলে মানুষকে আঘাত করে, আর জনগণ তো সরকার থেকে আলাদা।”
অস্ট্রেলিয়া সিরিজ স্থগিত করায় দেশটির ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে না খেলার হুমকিও দিয়েছিলেন রাশিদ। যদিও পরে নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন অ্যাডিলেইড স্ট্রাইকার্সে লম্বা সময় খেলা তারকা এই লেগ স্পিনার।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলা নিয়ে নিজের ভাবনায় খাওয়াজা টেনে আনেন বিগ ব্যাশে আফগান ক্রিকেটারদের খেলার বিষয়টিও।
“আমরা যদি আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে অস্বীকৃতি জানাই এরপর আফগান ক্রিকেটারদের বিবিএলে খেলার অনুমতি দেই, তাহলে সেটা কিছুটা ভণ্ডামির মতো। (বিবিএলে) তাদের শতভাগ খেলা উচিত, কিন্তু এরপর আপনি কীভাবে একটা করবেন, আরেকটা করবেন না?”