দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা সিরিজ
তিনশর পথে ছুটছে দক্ষিণ আফ্রিকা, পেসারদের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা।
Published : 05 Dec 2024, 10:21 PM
দ্রুত প্রথম উইকেট পতনের পর ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে উইকেটে যেতে হয় রায়ান রিকেলটনকে। টেস্টে সাধারণত পাঁচে ব্যাটিং করা ব্যাটসম্যানকে তিন নম্বরে দেখে অবাক হন অনেকেই। টপ অর্ডারে ব্যাটিংয়ের সুযোগটা অবশ্য দারুণভাবে কাজে লাগালেন তিনি। দৃঢ়তাপূর্ণ ব্যাটিংয়ে করলেন দারুণ সেঞ্চুরি। তবে শেষ বেলায় দুই উইকেট হারিয়ে স্বস্তিতে দিন শেষ করতে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা।
সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৬৯ রান।
গেবেখায় উইকেটে ঘাস আছে যথেষ্ট। ম্যাচের শুরুতে পেসারদের জন্য ছিল সহায়তা। তারপরও ব্যাটিংয়ের জন্য উইকেট বেশ ভালো।
দিনের আলোচিত নাম অবশ্যই রিকেলটন। ক্যারিয়ারে প্রথম সাত টেস্টের ১২ ইনিংসে ২২.৪০ গড়ে তার রান ছিল কেবল ২২৪, সর্বোচ্চ ইনিংস ৪২।
সিরিজের প্রথম টেস্টে অলরাউন্ডার ভিয়ান মুল্ডার চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায় এই ম্যাচে একাদশে সুযোগ পান তিনি। মূলত কিপার হলেও বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে নেওয়া হয় তাকে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ১১ চারে ২৫০ বলে ১০১ রানের ইনিংস খেলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
তার সঙ্গে শতরানের জুটির পথে ১০৯ বলে ৭৮ রান করেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ফিফটির দুয়ারে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন কিপার-ব্যাটসম্যান কাইল ভেরেইনা।
প্রথম দিন শ্রীলঙ্কার সফলতম বোলার লাহিরু কুমারা। টেস্টে একশ উইকেটের মাইলফলক ছোঁয়ার দিন এই পেসারের প্রাপ্তি তিনটি।
সেন্ট জর্জেস পার্কে বৃহস্পতিবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই টনি ডি জর্জিকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচে নিজের প্রথম বলে তাকে এলবিডব্লিউ করে দেন আসিথা ফার্নান্দো।
প্রথম ঘন্টায় বিদায় নেন আরেক ওপেনার এইডেন মার্করামও। তাকে বোল্ড করে শততম টেস্ট উইকেটের দেখা পান কুমারা। একটু পর তার বলেই কিপারের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ট্রিস্টান স্টাবস।
তখন ৪৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকেই প্রতিরোধ গড়েন রিকেলটন ও বাভুমা। বাভুমা ফিফটি করেন ৫৭ বলে। পঞ্চাশ ছুঁতে রিকেলটনের লাগে ১২১ বল।
চা-বিরতির একটু আগে বাভুমাকে ফিরিয়ে ১৩৩ রানের জুটি ভাঙেন আসিথা। বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে আসেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান।
দুইবার জীবন পেয়েও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ডেভিড বেডিংহ্যাম। স্পিনার প্রাবাথ জায়াসুরিয়ার বলে বোল্ড হন তিনি।
ষষ্ঠ উইকেটে ভেরেইনার সঙ্গে আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ জুটিতে দলকে টানেন রিকেলটন। ৯৮ রানে আসিথার বলে তাকে এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে বাঁচেন তিনি বল ব্যাটে লাগায়।
ওই ওভারেই দুই রান নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি ২৩১ বলে। তিন সংস্করণ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার প্রথম সেঞ্চুরি এটি।
এই বছরে টেস্ট সেঞ্চুরি করা দক্ষিণ আফ্রিকার অষ্টম ব্যাটসম্যান রিকেলটন। এক পঞ্জিকাবর্ষে তাদের সবচেয়ে বেশি ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরির নজির এটি। ২০০৪, ২০০৮ ও ২০১২ সালেও তাদের ছিল আট সেঞ্চুরিয়ান।
সেঞ্চুরির পর আর বেশিক্ষণ টেকেননি রিকেলটন। কুমারার বলে গালিতে ক্যাচ দেন তিনি। দিনের খেলা শেষ হতে তখন বাকি নেই মিনিট দশেকও।
পরের ওভারে ভিশ্ব ফার্নান্দোর বলে বোল্ড হন মার্কো ইয়ানসেন। দিনের খেলা শেষ হয়ে যায় সেখানেই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৮৬.৩ ওভারে ২৬৯/৭ (মার্করাম ২০, ডি জর্জি ০, রিকেলটন ১০১, স্টাবস ৪, বাভুমা ৭৮, বেডিংহ্যাম ৬, ভেরেইনা ৪৮*, ইয়ানসেন ৪; ভিশ্ব ১৬.৩-৫-৪৬-১, আসিথা ১৯-১-৬৭-২, কুমারা ১৩-২-৫৪-৩, জায়াসুরিয়া ২৯-৪-৭৪-১, ধানাঞ্জয়া ৯-১-২৬-০)