আজানের সেঞ্চুরির পর ইসমাইলের তোপে পর্যদুস্ত বাংলাদেশ

পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশের যুবারা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2023, 12:52 PM
Updated : 8 May 2023, 12:52 PM

শুরুতেই বড় সাফল্য। আগের দুই ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাট করা শাহজাইব খানকে এবার দ্রুতই ফেরাল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই রেশ দীর্ঘায়িত হলো না বেশিক্ষণ। দারুণ সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানকে এগিয়ে নিলেন আজান আওয়াইস। রান তাড়ায় আরও একবার মুখ থুবড়ে পড়ল বাংলাদেশের ব্যাটিং। আরেকটি বড় জয়ে সিরিজে আরও এগিয়ে গেল পাকিস্তান। 

পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় যুব ওয়ানডেতে চট্টগ্রামে ৭৮ রানে জিতেছে পাকিস্তান। ২৭১ রানের পুঁজি নিয়ে তারা বাংলাদেশকে আটকে দেয় ১৯৩ রানে। 

অনায়াস জয়ে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল পাকিস্তান। প্রথম ম্যাচে ৯ উইকেটে জিতেছিল তারা।  

আগের ম্যাচে দলের সহজ জয়ে ৬৯ রানে অপরাজিত ছিলেন আজান। দ্বিতীয়টিতে পেলেন তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া। ১৫ চারে ১২৫ বলে ১০৫ রান ম্যাচের সেরা এই বাঁহাতি ওপেনারই। 

বল হাতে পাকিস্তানের ইসমাইল নেন ৩ উইকেট। আসফান্দ, আইমাল খান ও আরাফাত মিনহাস ধরেছেন ২টি করে শিকার। 

জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সোমবার টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। ফর্মে থাকা ওপেনার শাহজাইব খানকে চতুর্থ ওভারে ফেরান ইকবাল হোসেন। আগের ম্যাচে ৮৩ রান করেছিলেন তিনি, একমাত্র যুব টেস্টে খেলছিলেন ১৭৪ রানের ইনিংস। এবার ফেরেন মাত্র ৬ রানে। 

প্রাথমিক ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৭ রান যোগ করেন আজান ও শামিল হোসেন।  

৩৩ রান করে আউট হন শামিল। তৃতীয় উইকেট জুটিতে নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেন আজান ও অধিনায়ক মির্জা সাদ বেগ। দুজন মিলে ১৩২ বলে যোগ করেন ১২৬ রান। 

পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরপরই ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন সাদ। ৪ চার ও ১ ছয়ে ৬৪ বলে করেন ৫১ রান।  

অধিনায়কের বিদায়ের পর সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় যুব ওয়ানডে খেলতে নামা আজান। ১৪ চারে ১২২ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ১৮ বছর বয়সী ওপেনার। 

এরপর তাকে বেশি দূর যেতে দেননি ইকবাল। রাফিউজ্জামান রাফির হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন আজান।

৪০ ওভার শেষে পাকিস্তানের রান ছিল ১৯৩। শেষ ১০ ওভারে ঝড় তোলার মঞ্চ ছিল প্রস্তুত। কিন্তু এই সময়ে উল্টো একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে তারা। ৪২ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে তারা। ২৪০ রান হওয়া নিয়েই তখন টানাটানি! 

কিন্তু শেষ জুটিতে ১৯ বলে ৩৬ রান যোগ করেন আমির হাসান ও আইমাল খান। দুটি করে চার-ছক্কায় ১৮ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলে দলের রান ২৭০ পার করিয়ে নেন আমির। 

বাংলাদেশের পেসার ইকবাল ৪ উইকেট নিলেও ১০ ওভারে খরচ করেন ৭২ রান। 

রান তাড়ায় বাংলাদেশের প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের মধ্যে ছয় জন ভালো শুরুর পরও নিজেদের ইনিংস এগিয়ে নিতে পারেননি। তাদের পাঁচ জনই স্পর্শ করেন ২০, কিন্তু কেউ পারেননি ৪০ ছাড়াতে। 

শুরুতে রানের খাতা খোলার আগেই ইসমাইলের শিকার আশিকুর রহমান। দ্বিতীয় উইকেটে শাহরিয়ার সাকিবের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার আদিল বিন সিদ্দিক। তবে তা বড় হয়নি। 

সাকিব আউট হন ১৭ রান করে। ৬১ বলে ৬ চারে ৪০ রান করে বিদায় নেন কিপার-ব্যাটসম্যান আদিল বিন সিদ্দিক। 

এরপর একই পথের পথিক হন অধিনায়ক আহরার আমিন (২৩), জাকারিয়া ইসলামরাও (২৪)। কেউই পারেননি দলকে লড়াইয়ে ফেরাতে। 

ষষ্ঠ উইকেটে কিছুটা লড়াই করেন মোহাম্মদ শিহাব জেমস ও মাহফুজুর রহমান। দুজন মিলে গড়েন ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪৮ রানের জুটি। ২২ রান করা মাহফুজুরকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আসফান্দ।  

৪২ রানের ইনিংস খেলে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন শিহাব। দুই রানের মধ্যে শেষ তিন উইকেট হারিয়ে দুইশর আগেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা।

রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে আগামী বৃহস্পতিবার তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৫০ ওভারে ২৭১ (আজান ১০৫, শাহজাইব ৬, শামিল ৩৩, সাদ ৫১, আরাফাত ২, ওবাইদ ২, তৈয়ব ১৮, আসফান্দ ০, আমির ২৯*, ইসমাইল ০, আইমাল ১৩; রোহানাত ৭-০-৩৬-০, ইকবাল ১০-১-৭২-৪, পারভেজ ১০-১-৪১-১, ওয়াসি ১০-০-৩৮-১, মাহফুজুর ৯-০-৫২-৩, শিহাব ১-০-১২-০, জাকারিয়া ৩-০-১৯-০) 

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৪৭ ওভারে ওভারে ১৯৩ (আদিল ৪০, আশিকুর ০, সাকিব ১৭, আহরার ২৩, জাকারিয়া ২৪, শিহাব ৪২, মাহফুজুর ২২, পারভেজ ১, ওয়াসি ১৩, রোহানাত ১*, ইকবাল ০*; ইসমাইল ১০-০-৫০-৩, আমির ৮-১-৩৫-১, আইমাল ৯-০-৪৬-২, আসফান্দ ১০-২-১৮-২, আরাফাত ১০-১-৪৪-২) 

ফল: পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৭৮ রানে জয়ী। 

ম্যান অব দা ম্যাচ: আজান আওয়াইস। 

সিরিজ: পাঁচ ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল ২-০তে এগিয়ে।