বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ
হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর অভিযানে চার ব্যাটসম্যানের ষাটোর্ধ্ব ইনিংসে ৩২১ রান করল বাংলাদেশ।
Published : 13 Dec 2024, 12:03 AM
সৌম্য সরকার ও মেহেদী হাসান মিরাজের গড়ে দেওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে শেষটা দুর্দান্ত করলেন মাহমুদউল্লাহ ও জাকের আলি। ষষ্ঠ উইকেটে চোখের পলকে দুজন গড়লেন রেকর্ড জুটি। এর সৌজন্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর পেল বাংলাদেশ।
সেন্ট কিটসে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর অভিযানে প্রথমভাগে নিজেদের কাজটা ভালোভাবেই সেরেছে বাংলাদেশ। ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তারা করেছে ৩২১ রান।
ক্যারিবিয়ানে খেলা ২৯ ওয়ানডেতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। ২০১৮ সালে ৬ উইকেটে করা ৩০১ রান ছিল এত দিনের সর্বোচ্চ।
আগেই সিরিজ নিশ্চিত করা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এবার দিতে হবে কঠিন পরীক্ষা। ঘরের মাঠে ৩২০ রানের বেশি লক্ষ্য তাড়া করে মাত্র একবার জিতেছে তারা। আর সেন্ট কিটসে তিনশ রান তাড়া করে জয়ের নজির নেই কোনো।
বাংলাদেশকে রেকর্ড পুঁজি এনে দেওয়ার কারিগর চারজন- সৌম্য, মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ ও জাকের। সবাই ৬০ পেরোলেও তিন অঙ্ক ছুঁতে পারেননি কেউ। ৬৩ বলে সর্বোচ্চ ৮৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ। ৭ চারের সঙ্গে মারেন ৪টি ছক্কা।
এছাড়া মিরাজ ৭৭, সৌম্য ৭৩, জাকের ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন। এই প্রথম ওয়ানডেতে এক ইনিংসে বাংলাদেশের চার ব্যাটসম্যান ৬০ রানের বেশি করলেন।
অথচ টস হেরে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল হতাশাজনক। রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন তানজিদ হাসান ও লিটন কুমার দাস। খালি হাতে ফিরতে পারতেন সৌম্যও। শূন্য রানে জীবন পেয়ে তিনি জুটি গড়েন মিরাজের সঙ্গে।
পাল্টা আক্রমণে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন মিরাজ। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন সৌম্য। ৫৬ বলে চলতি সিরিজে নিজের দ্বিতীয় ও সব মিলিয়ে ষষ্ঠ ফিফটি করেন মিরাজ। একই ওভারে পঞ্চাশ ছুঁতে সৌম্য খেলেন ৫৮ বল।
সৌম্য ও মিরাজের জুটিতে আসে ১২৭ বলে ১৩৬ রান। ৬ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা মেরে আউট হন সৌম্য। ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৩ বলের ইনিংস সাজান মিরাজ। দুজনের চমৎকার ব্যাটিংয়ে ২৫ ওভারে দেড়শ করে ফেলে বাংলাদেশ।
এরপর কিছুটা থমকে যায় রানের চাকা। তবে শেষ দশ ওভারে দারুণভাবে সামলে নেন দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান। কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ পায় ১০৪ রান।
চলতি সিরিজে তৃতীয় ও সবমিলিয়ে টানা চতুর্থ ফিফটি করতে মাহমুদউল্লাহ খেলেন ৪৮ বল। ওয়ানডেতে টানা চার ফিফটি করা বাংলাদেশের চতুর্থ ব্যাটসম্যান তিনি। আগের তিনজন- তামিম ইকবাল (দুইবার), সাকিব আল হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
সেন্ট কিটসে ছয় ইনিংসে মাহমুদউল্লাহর এটি পঞ্চম ফিফটি। ম্যাচে নিজের প্রথম ছক্কায় তামিম ইকবালকে টপকে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ছক্কা মারা ব্যাটসম্যান হয়ে যান তিনি। পরে মারেন আরও ৩টি ছক্কা।
ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করতে জাকের খেলেন ৫৩ বল।
ইনিংসের শেষ ওভারে দুটি বাউন্ডারিসহ ১০ রান নেন মাহমুদউল্লাহ। এর সৌজন্যে পূর্ণ হয় জুটির দেড়শ রান, মাত্র ১১৫ বলে।
শেষ দুটি বলে কোনো রান নিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। জাকেরের সঙ্গে তার অবিচ্ছিন্ন ১১৭ বলের বন্ধনের অর্জন ১৫০ রান।
ষষ্ঠ উইকেটে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। ২০১৮ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮৭ রানে ৫ উইকেট পড়ার পর ১২৮ রান যোগ করেছিলেন ইমরুল কায়েস ও মাহমুদউল্লাহ।