চট্টগ্রামে টেস্টের দ্বিতীয় দিন বড় সংগ্রহের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কা।
Published : 31 Mar 2024, 10:02 AM
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৫৩১
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫ ওভারে ৫৫/১
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন দাপট দেখিয়েছে শ্রীলঙ্কা। বড় স্কোরের ভিত গড়ে ৪ উইকেট হারিয়ে তারা করেছে ৩১৪ রান। জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে রোববার লঙ্কানদের দ্রুত অলআউট করার অভিযানে নামবে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার প্রথম তিন ব্যাটসম্যান খেলেন পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। কাছে গিয়েও সেঞ্চুরি ছুঁতে পারেননি দিমুথ কারুনারাত্নে (৮৬) ও কুসাল মেন্ডিস (৯৩)। দিনেশ চান্দিমাল ৩৪ ও ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা ১৫ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন।
ব্যাটসম্যানদের যা একটু অস্বস্তিতে ফেলতে পেরেছেন হাসান মাহমুদ। টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকের দিন তার শিকার ২ উইকেট। এছাড়া তরুণ পেসারের বোলিংয়ে আরও ২টি ক্যাচ ছেড়ে দেন ফিল্ডাররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে):
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ৩১৪/৪ (মাদুশকা ৫৭, কারুনারাত্নে ৮৬, কুসাল ৯৩, ম্যাথিউস ২৩, চান্দিমাল ৩৪*, ধানাঞ্জয়া ১৫*; খালেদ ১০-১-৪১-০, হাসান ১৭-৫-৬৪-২, সাকিব ১৮-২-৬০-১, মিরাজ ২৮-৪-৯৫-০, তাইজুল ১৭-৪-৪৮-০)
দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরুর আগে ৯৩ রানে আউট হওয়া কুসাল মেন্ডিস বলেছেন, 'আমরা ভালো অবস্থানে আছি। এই পিচে যদি ৪৫০ থেকে ৫০০ রান করতে পারি তাহলে ভালো হবে। আমাদের তিন পেসার আছে। গত ম্যাচে বোলাররা ভালো বোলিং করেছে। উইকেটে কিছু টার্ন আছে। তাই বোলারদের জন্যও ভালো সুযোগ আছে।'
দিনের শুরুর আধঘণ্টায় কোনো সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। ভাগ্যকেও পাশে পায়নি তারা। কিছুটা সৌভাগ্যের ছোঁয়া নিয়ে পঞ্চাশ রানের জুটি গড়েছেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা ও দিনেশ চান্দিমাল।
৯৭ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৪০ রান। দিনের ৭ ওভারে তারা করেছে ২৬ রান। অষ্টম ওভারে প্রথমবার স্পিন আক্রমণে আনা হয়েছে। বোলিংয়ে এসেছেন সাকিব আল হাসান।
প্রায় প্রতি ওভারেই ধানাঞ্জয়া ও চান্দিমালের ব্যাটের বাইরের কানা খুঁজে নেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও হাসান মাহমুদ। কোনোটিই স্লিপ পর্যন্ত পৌঁছায়নি। তাই হেলমেট পরে কিছুটা সামনে এগিয়ে আসেন স্লিপের ফিল্ডাররা। তাতেও কাজ হয়নি। কখনও গতির কারণে, কখনও আলতোভাবে খেলায় বিপদ ঘটেনি লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের।
চান্দিমাল ৮০ বলে ৪৬ ও ধানাঞ্জয়া ৪৭ বলে ৩০ রানে অপরাজিত।
প্রথম টেস্টের ব্যর্থতা ঝেড়ে চট্টগ্রামে রানের দেখা পেলেন দিনেশ চান্দিমাল। ৮৭ বলে পূর্ণ করলেন পঞ্চাশ।
বাংলাদেশের বিপক্ষে তার চতুর্থ ফিফটি এটি। এর সঙ্গে সেঞ্চুরি আছে ৫টি। সব মিলিয়ে তার ২৬তম ফিফটি।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই কিছুটা ভাগ্যের সহায়তা পেয়েছেন চান্দিমাল। সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও হাসান মাহমুদের বলে অন্তত তিনবার তার ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়েছে বল। কিন্তু স্লিপ পর্যন্ত না পৌছানোয় বিপদ ঘটেনি চান্দিমালের।
ফিফটির দুয়ারে দাঁড়িয়ে ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। ৬৬ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত লঙ্কান অধিনায়ক।
প্রথম ঘণ্টায় কোনো সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। দিনের ১৩ ওভারে ৫৫ রান করেছে শ্রীলঙ্কা। সব মিলিয়ে ১০৩ ওভারে তাদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৬৯ রান।
সিলেট টেস্টের ছন্দ চট্টগ্রামেও ধরে রাখলেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। সিরিজে টানা তৃতীয়বার পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেললেন লঙ্কান অধিনায়ক।
টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪তম ফিফটি ছুঁতে ৭০ বল খেলেছেন ধানাঞ্জয়া। বাংলাদেশের বিপক্ষে তার দ্বিতীয় ফিফটি এটি। এর সঙ্গে সেঞ্চুরি আছে ৪টি।
পুরো ইনিংসে তেমন কোনো সুযোগই দেননি ধানাঞ্জয়া। শুরু থেকে সাবলীল ব্যাটিং করেছেন ৩২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। ক্রিজের দারুণ ব্যবহারে অনায়াসে রান তুলেছেন তিনি।
১০৫ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৭৫ রান।
পানি বিরতির পর দ্বিতীয় ঘণ্টার শুরুতেই দলকে সাফল্য এনে দিলেন সাকিব আল হাসান। দারুণ এক ডেলিভারিতে ফেরালেন দিনেশ চান্দিমালকে।
অফ স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথে ঝুলিয়ে করেন সাকিব। সামনের পায়ে এসে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলার চেষ্টা করেন চান্দিমাল। উইকেটে গ্রিপ করে বেরিয়ে যাওয়ার মুখে ছুঁয়ে চান্দিমালের ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে যায় বল। ক্যাচ নিতে কোনো ভুল করেননি লিটন কুমার দাস।
চান্দিমালের বিদায়ে ভাঙল ৮৯ রানের জুটি। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান কামিন্দু মেন্ডিস। অধিনায়ক ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গী হলেন তিনি। সিলেট টেস্টের দুই ইনিংসেই দেড়শ ছোঁয়া জুটি গড়েন ধানাঞ্জয়া ও কামিন্দু।
১০৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩৭৫ রান। ৭৩ বলে ৫১ রানে অপরাজিত ধানাঞ্জয়া।
দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনও নিজেদের করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ২৮ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে তারা করেছে ৯৭ রান। সব মিলিয়ে ১১৮ ওভারে সফরকারীদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৪১১ রান।
আরও একটি সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ১০৮ বলে ৭০ রানে অপরাজিত ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। কামিন্দু মেন্ডিস ৪১ বলে করেছেন ১৭ রান। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির সংগ্রহ ৩৬ রান।
দিনের শুরুতে দিনেশ চান্দিমালকে অস্বস্তিতে ফেলেন দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ। বেশ কয়েকবার ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে যায় বল। কিন্তু স্লিপ পর্যন্ত পৌঁছায়নি সেগুলো।
সেই ধাপ পার করে পঞ্চাশ করেন চান্দিমাল। দ্বিতীয় ঘণ্টার শুরুতে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে ফেরান সাকিব আল হাসান। দারুণ ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হন ৫৯ রান করা চান্দিমাল।
এরপর আর বিপদ ঘটতে দেননি সিলেট টেস্টের দুই ইনিংসেই দেড়শ ছাড়ানো জুটি গড়া ধানাঞ্জয়া ও কামিন্দু। শেষ দিকে আলগা শটে বল হাওয়ায় ভাসিয়েছিলেন কামিন্দু। কিন্তু ফিল্ডারের আয়ত্বের ভেতরে না পড়ায় বেঁচে যান তিনি।
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই উদযাপনের উপলক্ষ পেল বাংলাদেশ। মধ্যাহ্ন বিরতির পর প্রথম ওভারেই ড্রেসিং রুমে ফিরলেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা।
সৈয়দ খালেদ আহমেদের লেগ স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারি ভুল লাইনে খেলেন ধানাঞ্জয়া। বল তার প্যাডে আঘাত করতেই জোরাল আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নেন লঙ্কান অধিনায়ক।
রিপ্লেতে দেখা যায়, 'উইকেট' এর বেলায় এসেছে আম্পায়ার্স কল। অর্থাৎ মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকছে। মূল সিদ্ধান্ত 'নট আউট' হলে বেঁচে যেতেন ধানাঞ্জয়া।
৬ চার ও ২ ছক্কায় ১১১ বলে ৭০ রান করে ফিরেছেন ধানাঞ্জয়া। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান প্রাবাথ জায়াসুরিয়া। ৪১ বলে ১৭ রানে খেলছেন কামিন্দু মেন্ডিস।
১২০ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৪১৭ রান।
নিজের পরের ওভারে আরও একটি উইকেটের সুযোগ তৈরি করলেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। কিন্তু ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় হাতছাড়া হলো সেটি। ৬ রানে জীবন পেলেন প্রাবাথ জায়াসুরিয়া।
খালেদ অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি ড্রাইভ করতে গিয়ে জয়াসুরিয়ার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চলে যায় প্রথম স্লিপে। কিন্তু সেটি নিতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। তার হাতে লেগে বল যায় দ্বিতীয় স্লিপের কাছে। এবার ব্যর্থ হন শাহাদাত হোসেন। তার হাতে লেগে বল যায় তৃতীয় স্লিপের কাছাকাছি। সামনে ঝাপিয়েও নিতে পারেননি জাকির হাসান।
১২২ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৪২২ রান। কামিন্দু মেন্ডিস ৫০ বলে ২২ ও জায়াসুরিয়া ১২ বলে ৮ রানে খেলছেন।
মেহেদী হাসান মিরাজের অফ স্টাম্পের বাইরে ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলার চেষ্টায় পরাস্ত কামিন্দু মেন্ডিস। উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে বল জমা পড়তেই জোরাল আবেদন। আঙুলও তুলে দেন আম্পায়ার।
রিভিউ নিতে একদমই সময় নেননি কামিন্দু। রিপ্লেতে দেখা যায়, ব্যাট অতিক্রম করার সময় বলের সঙ্গে দূরত্ব অনেকটাই স্পষ্ট। তাই বদলে যায় মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। রিভিউয়ের সৌজন্যে ৩৫ রানে বেঁচে যান কামিন্দু।
পরের বলেই রিভার্স সুইপে বাউন্ডারি মারেন তিনি। এর এক বল পর সুইপ করে নেন ৩ রান।
১৩৫ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৪৫৯ রান। কামিন্দু ৯৩ বলে ৪২ ও প্রাবাথ জায়াসুরিয়া ৪৭ বলে ২৩ রানে অপরাজিত।
সেশনের শুরুর আনন্দ ধরে রাখতে পারল না বাংলাদেশ। সপ্তম উইকেটেও পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি গড়ল শ্রীলঙ্কা। ১০১ বলে জুটির পঞ্চাশ রান পূর্ণ করেছেন কামিন্দু মেন্ডিস ও প্রাবাথ জায়াসুরিয়া।
ইনিংসে শ্রীলঙ্কার পঞ্চম পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি এটি।
অথচ মধ্যাহ্ন বিরতির পরপরই ধানাঞ্জয়া ডি সিলভাকে ফিরিয়ে লেজের সারির ব্যাটসম্যান জায়াসুরিয়াকে ক্রিজে আনে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ের শুরুর দিকে সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও হাসান মাহমুদের শর্ট ডেলিভারিতে অস্বস্তিতে পড়েন জায়াসুরিয়া। ওই ধাপ পেরিয়ে সাবলীল ব্যাটিং শুরু করেছেন তিনি।
অন্য প্রান্তে আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করছেন প্রথম ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি করা কামিন্দুও। আরেকটি ফিফটির দুয়ারে দাঁড়িয়ে তিনি।
১৩৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৪৬৫ রান। ৯৬ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত কামিন্দু। ৫০ বলে ২৪ রানে খেলছেন জায়াসুরিয়া।
আরও একবার জীবন পেলেন প্রাবাথ জায়াসুরিয়া। ক্রিজে গিয়ে শুরুতেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে যাওয়া বেঁচে যাওয়া ব্যাটসম্যান এবার সুযোগ দেন উইকেটরক্ষককে। কিন্তু নিতে পারেননি লিটন কুমার দাস।
তাইজুল ইসলামের খানিক টেনে করা ডেলিভারি অফ সাইডে খেলার চেষ্টায় জায়াসুরিয়ার ব্যাটের ভেতরের কানায় লাগে। যথাযথভাবে নিচু না থাকায় সেটি গ্লাভসে জমাতে পারেননি লিটন। ৬ রানের পর ২৪ রানে বেঁচে যান জায়াসুরিয়া।
পরের ওভারেই নিজের আগের সর্বোচ্চ ২৫ ছাড়িয়ে যায় আট নম্বরে ব্যাটসম্যান।
১৩৮ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৪৭০ রান। কামিন্দু মেন্ডিস ৯৭ বলে ৪৯ ও জায়াসুরিয়া ৫৫ বলে ২৭ রানে অপরাজিত।
দুর্দান্ত ছন্দে থাকা কামিন্দু মেন্ডিসের ব্যাট থেকে এলো আরেকটি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। তার ব্যাটে ধীরে ধীরে পাঁচশ রানের পথে শ্রীলঙ্কা।
টেস্ট ক্যারিয়ারে চার ইনিংসে কামিন্দুর চতুর্থ পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস এটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ইনিংসে তৃতীয়। প্রথম ম্যাচের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছিলেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
চলতি ইনিংসে শ্রীলঙ্কার ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে পঞ্চাশ করলেন তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও সব মিলিয়ে তৃতীয়বার এক ইনিংসে শ্রীলঙ্কার অন্তত ছয় ব্যাটসম্যান পেলেন ফিফটির দেখা।
১৩৯ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৪৭১ রান। কামিন্দু ৯৯ বলে ৫০ ও প্রাবাথ জায়াসুরিয়া ৬৫ বলে ২৭ রানে খেলছেন।
প্রথম সেশনের তুলনায় দ্বিতীয়টিতে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ। মধ্যাহ্ন বিরতির পরের সেশনে ২৬ ওভারে তারা নিয়েছে ২ উইকেট। শ্রীলঙ্কা করেছে ৬৫ রান।
১৪৪ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৪৭৬ রান। ১১২ বলে ৫৪ রানে খেলছেন কামিন্দু মেন্ডিস। রানের খাতা খোলার অপেক্ষায় ভিশ্ব ফার্নান্দে।
সেশনের শুরুটা দারুণ করেছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় বলেই ধানাঞ্জয়া ডি সিলভাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। তার পরের ওভারে আউট হতে পারতেন প্রাবাথ জায়াসুরিয়াও। স্লিপে তিন জন মিলে ছেড়ে দেন এক ক্যাচ।
শুরুতেই জীবন পেয়ে কামিন্দুর সঙ্গে ৬৫ রানের জুটি গড়েন জায়াসুরিয়া। মাঝে ২৪ রানের মাথায় আরও একবার তার ক্যাচ ছাড়েন লিটন কুমার দাস। সেশন শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ বাকি থাকতে জায়াসুরিয়ার উইকেট নেন সাকিব আল হাসান।
কামিন্দুর বিদায়ঘণ্টাও অবশ্য বাজিয়ে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে কট বিহাইন্ডের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তার ব্যাটেই পাঁচশ ছাড়ানোর আশা এখনও বাঁচিয়ে রেখেছে শ্রীলঙ্কা।
ফিল্ডিং ব্যর্থতা যেন পিছু ছাড়ছে না বাংলাদেশকে। এবার কামিন্দু মেন্ডিসের ক্যাচ ছাড়লেন হাসান মাহমুদ। ইনিংসে বাংলাদেশের হাত থেকে পড়া পঞ্চম ক্যাচ এটি।
তাইজুল ইসলামের বলে স্লগ সুইপ করেন কামিন্দু। ডিপ মিড উইকেটে প্রস্তুত ছিলেন হাসান। কিন্তু দুই হাত দিয়ে চেষ্টা করেও পারেননি ক্যাচটি নিতে। ৬০ রানে বেঁচে যান কামিন্দু।
একই ওভারে দুটি চার মেরে শ্রীলঙ্কাকে পাঁচশ রানের আরও কাছে নিয়ে যান ভিশ্ব ফার্নান্দো।
১৫০ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৪৯২ রান। কামিন্দু ১৩৪ বলে ৬২ ও ভিশ্ব ২১ বলে ৮ রানে খেলছেন।
একের পর এক ক্যাচ ছাড়ার মহড়ার মাঝে দারুণ ফিল্ডিংয়ের প্রদর্শনী মেলে ধরলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট করলেন ভিশ্ব ফার্নান্দোকে।
সাকিব আল হাসানের স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারি অন সাইডে ঠুকেই রানের জন্য ছোটেন কামিন্দু মেন্ডিস। সাড়া দেন ভিশ্ব। শর্ট মিড উইকেট থেকে দৌড়ে এসে বল ধরে ডাইভ করা অবস্থায়ই থ্রো করেন শান্ত। ভিশ্ব ক্রিজে ঢোকার আগেই এলোমেলো হয়ে যায় স্টাম্প।
২ চারে ২৬ বলে ১১ রান করে ফিরেছেন ভিশ্ব। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান লাহিরু কুমারা।
১৫২ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৪৯৭ রান। কামিন্দু মেন্ডিস ১৪০ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত।
কামিন্দু মেন্ডিসের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে পাঁচশ ছাড়াল শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রায় দুই বছর ও ৯ টেস্ট পর কোনো দল করল পাঁচশ বা তার বেশি রান।
সবশেষ ২০২২ সালের মে মাসে মিরপুর টেস্টে শ্রীলঙ্কাই করেছিল ৫০৬ রান। এবার চট্টগ্রামে এলো তাদের পাঁচশ রান।
১৫৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৫১৬ রান। কামিন্দু মেন্ডিস ১৫৫ বলে ৭৮ ও লাহিরু কুমারা ১০ বলে ৬ রানে অপরাজিত। দুজন মিলে নবম উইকেটে যোগ করেছেন ২০ রান।
নিজের ৪৬তম ওভারে অবশেষে উইকেটের দেখা পেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। স্লগ সুইপ করার চেষ্টায় বোল্ড হয়ে ফিরলেন লাহিরু কুমারা।
৫১৮ রানে নবম উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যাওয়ার দুয়ারে শ্রীলঙ্কা। ১৫৬ বলে ৭৯ রানে অপরাজিত কামিন্দু মেন্ডিস। তাকে সঙ্গ দিতে নেমেছেন শেষ ব্যাটসম্যান আসিথা ফার্নান্দো।
ওভারের শেষ বল হওয়ায় এক রানের চেষ্টা ছিল কামিন্দু মেন্ডিস। তাইজুল ইসলাম বল করার সঙ্গে সঙ্গেই নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে বেরিয়ে যান আসিথা ফার্নান্দো। কামিন্দুর স্ট্রেইট ড্রাইভ ধরে স্টাম্প ভাঙেন তাইজুল। বিদায়ঘণ্টা বাজে আসিথার।
৭ চার ও ২ ছক্কায় ১৬৭ বলে ৯২ রানে অপরাজিত থেকে যান কামিন্দু। শ্রীলঙ্কার ইনিংস থামে ৫৩১ রানে। টেস্ট ক্রিকেটে কোনো সেঞ্চুরি ছাড়া এটিই সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর।
শ্রীলঙ্কার হয়ে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগান অন্তত তিন ব্যাটসম্যান। প্রথম দিন ৮৬ রানে আউট হন দিমুথ কারুনারাত্নে। আরেকটু এগিয়ে কুসাল মেন্ডিস থামেন ৯৩ রানে। তার চেয়ে এক রান কমে অপরাজিত রইলেন কামিন্দু।
বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিলেন সাকিব আল হাসান। অভিষিক্ত পেসার হাসান মাহমুদের শিকার ২ উইকেট।
দ্বিতীয় দিনের বাকি আছে আর ১৯ ওভার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩১৪/৪ ) ১৫৯ ওভারে ৫৩১ (চান্দিমাল ৫৯, ধানাঞ্জয়া ৭০, কামিন্দু ৯২*, জায়াসুরিয়া ২৮, ভিশ্ব ৬, আসিথা ০; খালেদ ২০-২-৭১-১, হাসান ২৪-৫-৯২-২, সাকিব ৩৭-৫-১১০-৩, মিরাজ ৪৬-৭-১৪৬-১, তাইজুল ৩২-৬-১০৬-০)
আশা জাগিয়েও সেঞ্চুরি করতে পারেননি তিন ব্যাটসম্যান। পঞ্চাশ ছাড়িয়ে যান আরও তিনজন। কেউ তিন অঙ্ক ছুঁতে না পারলেও সম্মিলিত অবদানে ৫৩১ রান করল শ্রীলঙ্কা। আর এতেই হলো বিশ্ব রেকর্ড।
টেস্ট ক্রিকেটে সেঞ্চুরি ছাড়া এটিই সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। এত দিন রেকর্ডটি ছিল ভারতের। ১৯৭৬ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে ৬ ব্যাটসম্যানের ফিফটিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ৫২৪ রানের ইনিংস ঘোষণা করেছিল ভারত।
দিনের শেষ ভাগে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করেছেন জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসান জয়। প্রথম ৭ ওভারে দুজন মিলে করে ফেলেছেন ৩৬ রান। প্রায় প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি দেখা পেয়েছেন তারা।
এর মধ্যেই সপ্তম ওভারে অবশ্য বিপদ ঘটতে পারত। আম্পায়ার্স কলের সৌজন্যে বেঁচে গেলেন জাকির। আসিথা ফার্নান্দোর তীক্ষ্ণভাবে ভেতরে ঢুকে যাওয়া ডেলিভারি ব্যাটে লাগাতে পারেননি বাঁহাতি ওপেনার।
বল প্যাডে লাগতেই জোরাল আবেদন করেন আসিথা। তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। কিছুক্ষণ আলোচনার পর রিভিউ নেয় শ্রীলঙ্কা। রিপ্লেতে দেখা যায়, 'উইকেটস' এর বেলায় আম্পায়ার্স কল। অর্থাৎ আম্পায়ার নট আউট দেওয়ায় বিপদ ঘটেনি জাকিরের।
জয় ১৭ বলে ১৫ ও জাকির ২৫ বলে ২০ রানে খেলছেন।
দিনের খেলা শেষ হওয়ার অল্প কিছু সময় বাকি থাকতে ধাক্কা খেল বাংলাদেশ। লাহিরু কুমারার দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরলেন মাহমুদুল হাসান জয়। তার বিদায়ে ভাঙল ৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটি।
টানা ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে জয়ের কঠিন পরীক্ষাই নিচ্ছিলেন কুমারা। দারুণ মেজাজে সেগুলোর মোকাবিলা করতে থাকেন জয়। তবে হুট করে একটি ডেলিভারি তীক্ষ্ণভাবে ভেতরে ঢুকে গেলে আর জবাব দিতে পারেননি ২১ রান করা ওপেনার।
তিন নম্বরে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামানো হয়েছে তাইজুল ইসলামকে। জাকির হাসান অপরাজিত ৩৩ বলে ২৪ রানে।
১৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৫১ রান।
শেষ ঘণ্টার ব্যাটিংয়ে নেমে ১ উইকেটের বেশি হারাল না বাংলাদেশ। ১৫ ওভারে ১ উইকেটে ৫৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করল তারা। শ্রীলঙ্কার চেয়ে ৪৭৬ রানে পিছিয়ে স্বাগতিকরা।
জাকির হাসান ৩৯ বলে ২৮ ও তাইজুল ইসলাম ৯ বলে ০ রানে তৃতীয় দিন সকালে ব্যাটিংয়ে নামবেন। আউট হওয়া একমাত্র ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান জয় করেন ৪২ বলে ২১ রান।
আগের দিন ৪ উইকেটে ৩১৪ রান করা শ্রীলঙ্কা রোববার বাকি ৬ উইকেটে যোগ করেন আরও ২১৭ রান। সেঞ্চুরি ছাড়া সর্বোচ্চ দলীয় স্কোরের রেকর্ড গড়ে ৫৩১ রানে অল আউট হয় তারা।
সঙ্গীর অভাবে ৯২ রানে অপরাজিত থেকে যান প্রথম টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি করা কামিন্দু মেন্ডিস। ৭০ রানের ইনিংস খেলেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার ছয় ব্যাটসম্যান খেলেন পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস।
দ্বিতীয় দিনেও ক্যাচ মিসের মহড়া অব্যাহত রাখে বাংলাদেশ। প্রথম দিনের মতো এবারও তাদের হাত থেকে পড়ে ৩টি ক্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৫৩১
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫ ওভারে ৫৫/১ (জয় ২১, জাকির ২৮*, তাইজুল ০*; ভিশ্ব ৩-১-১২-০, আসিথা ৪-০-২১-০, কুমারা ৪-৩-৪-১, জায়াসুরিয়া ৪-১-১৩-০)