ইংল্যান্ডের আগ্রাসী টেস্ট ক্রিকেটকে গুঁড়িয়ে দিতে ভারত মরিয়া থাকবে বলেই মনে করেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেইন।
Published : 15 Jan 2024, 05:51 PM
প্রতিপক্ষ যে-ই হোক না কেন, লাল বলের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের মাঠে নামা মানেই আলোচনার কেন্দ্রে ‘বাজবল।’ উপমহাদেশের উইকেট ও কন্ডিশনে এই কৌশল কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে অবশ্য সংশয়ের অবকাশ আছে যথেষ্ট। হয়তো সেই সংশয়ের জায়গা থেকেই ভারত সফরের আগে উত্তরসূরিদের সতর্ক করে দিতে চাইলেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক নাসের হুসেইন।
ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে ভারতের স্পিন ট্র্যাকে সফরকারী দলগুলোর, বিশেষ করে উপমহাদেশের বাইরের দলগুলোর ভরাডুবি প্রায়ই দেখা যায়। দিন দশেক পর শুরু হতে যাওয়া ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজেও স্বাগতিক দর্শকরা এমন কিছুর প্রত্যাশা করছে বলে মনে করেন হুসেইন।
নিউ জিল্যান্ডের সাবেক ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ২০২২ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর এবং অধিনায়ক বেন স্টোকসের হাত ধরে নতুন এই ঘরানার টেস্ট খেলা শুরু করে ইংল্যান্ড। ম্যাককালামের ডাক নাম ‘বাজ’ অবলম্বনে এটি নাম পেয়ে গেছে ‘বাজবল।’
টেস্ট ক্রিকেটেও মারমুখী ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার এই ধরণে গত কয়েক বছরে দারুণ সব সাফল্য পেয়েছে ইংল্যান্ড। পাশাপাশি কিছু ব্যর্থতাও সঙ্গী হয়েছে তাদের।
সবশেষ অ্যাশেজেই যেমন, ঘরের মাঠে প্রথম দুই টেস্ট হেরে বসে তারা। তাতে ভড়কে না গিয়ে নিজেদের ধরনে আস্থা রেখে এগিয়ে যায় বেন স্টোকসের দল। পরের তিন টেস্টের দুটি জিতে ও একটি ড্র করে সিরিজ হার এড়ায় স্বাগতিকরা।
জুন-জুলাইয়ের সেই সিরিজের পর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে আবার টেস্ট খেলতে নামছে ইংল্যান্ড। আগামী ২৫ জানুয়ারি হায়দরাবাদে শুরু হবে ভারতের বিপক্ষে তাদের পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে কোনোমতে উৎরাতে পেরেছিল তারা, এবারের পরীক্ষাটা তার চেয়েও কঠিনতর হতে পারে বলে মনে করছেন হুসেইন। স্কাই স্পোর্টস ক্রিকেট পডকাস্ট-এ সেই আশঙ্কার কথাই স্মরণ করিয়ে দিলেন তিনি।
“ভারতীয় ক্রিকেট সম্পর্কে ও বাজবল নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। বিশ্বকাপের সময় সেখানে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, বাজবলের মিইয়ে যাওয়া দেখার অপেক্ষায় আছে ভারতীয়রা।”
ভারতের মাটিতে ইংল্যান্ড সবশেষ টেস্ট সিরিজ জিতেছিল ২০১২-১৩ মৌসুমে, অ্যালেস্টার কুকের নেতৃত্বে। ২-১ ব্যবধানে স্মরণীয় ইংলিশদের ওই জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল দুই স্পিনার গ্রায়েম সোয়ান ও মন্টি পানেসারের।
সম্ভাব্য স্পিন স্বর্গের কথা ভেবে ইংল্যান্ডও তাদের স্কোয়াডে বেশ কয়েকজন স্পিনার রেখেছে। জ্যাক লিচ ও রেহান আহমেদের সঙ্গে ডাক পেয়েছেন অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা টম হার্টলি ও শোয়েব বাসির।
প্রথম দুই টেস্টের জন্য চারজন মূল স্পিনার নিয়ে দল ঘোষণা করেছে ভারত; অভিজ্ঞ রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে আছে কুলদিপ ইয়াদাভ ও আকসার প্যাটেল।
অবশ্য সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক হুসেইনের মতে, অতিরিক্ত স্পিন সহায়ক উইকেট গড়লে উল্টো বিপদে পড়তে পারে ভারত।
“আমার মতে, ভারতের উচিত হবে ভালো পিচ চাওয়া, যেখানে বল একটু স্পিন করবে। আমার মনে হয়, ওইরকম পিচ হলে তাদের স্পিনার ও ব্যাটাররা আমাদেরকে ব্যাট ও বল হাতে উড়িয়ে দিতে পারবে।”
“তারা যদি এমন পিচ চায় যেখানে অনেক বেশি স্পিন হবে, তাহলে লড়াইটা হয়ে যাবে অনেকটা ভাগ্য পরীক্ষার মতো। কারণ তখন ইংল্যান্ডের স্পিনাররাও ম্যাচে প্রভাব বিস্তার করবে। যেভাবে বাজবল কৌশল কাজ করে, তাতে খুব সহজেই এটা ব্যর্থ হবে না।”