১০৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের জয়ের নায়ক ইরফান শুক্কুর, ছন্দ ধরে রেখে নাহিদ রানার শিকার এবার ৩ উইকেট।
Published : 18 Apr 2024, 07:08 PM
ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিলেন ইরফান শুক্কুর। বল হাতে আরও একবার গতির ঝড় তুললেন নাহিদ রানা। দশ নম্বরে নেমে আব্দুল হালিম ফিফটি করলেও বড় পরাজয় এড়াতে পারল না লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে বৃহস্পতিবার ৬৭ রানে জিতেছে শাইনপুকুর। ২৫৭ রানের লক্ষ্যে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রানের বেশি করতে পারেনি রূপগঞ্জ।
এ নিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতল আকবর আলির নেতৃত্বাধীন দল। প্রাথমিক পর্বে ৮ জয়ে দুই নম্বরে থেকে সুপার লিগ শুরু করবে তারা। ৬ জয়ে ১২ পয়েন্ট পাওয়া রূপগঞ্জের সুপার লিগের টিকেট এখনও অনিশ্চিত। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের শেষ ম্যাচে তাকিয়ে থাকতে হবে তাদের।
শাইনপুকুরের জয়ের নায়ক ইরফান। আগের দশ রাউন্ডে দুটি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান এবার পেলেন চলতি লিগে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ। পাঁচ নম্বরে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ১০৬ রান করেন ইরফান। তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
আগের দুই ম্যাচে ৯ উইকেট নেওয়া নাহিদ এদিনও গতি দিয়ে কাঁপিয়েছেন রূপগঞ্জের ব্যাটসম্যানদের। ৮ ওভারে ৩ মেইডেনসহ স্রেফ ১১ রানে নিয়েছেন ৩টি উইকেট। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ১০ ওভারে ৩ মেইডেনসহ ৩১ রানে ধরেছেন ২ শিকার।
রান তাড়ায় শুরুতেই রূপগঞ্জের ইনিংসে ধাক্কা দেন নাহিদ। প্রথম ৩ ওভারে কোনো রানই দেননি তরুণ পেসার। তার গতি ও বাউন্সের জবাব দিতে পারেননি তৌফিক খান, সাদমান ইসলামরা।
তৃতীয় ওভারে তৌফিকের পর মুমিনুল হককেও ফেরান নাহিদ। পঞ্চাশের আগে সাদমানও ড্রেসিং রুমের পথ ধরে চাপে পড়ে যায় রূপগঞ্জ। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। পাঁচ নম্বরে নামা আমিনুল ইসলাম করেন ৩৪ রান।
১১১ রানে নবম উইকেট হারিয়ে বড় পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে যায় রূপগঞ্জ। সেখান থেকে শেষ উইকেটে ৭৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন আব্দুল হালিম ও আল আমিন হোসেন। দুই পেসারই খেলেন নিজেদের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস।
৫টি করে চার-ছক্কায় ৬৭ বলে ৬০ রান করেন হালিম। ১ চার ও ২ ছক্কায় আল আমিনের ব্যাট থেকে আসে ৩৭ বলে ২২ রান।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই তানজিদ হাসানের উইকেট হারায় শাইনপুকুর। তবে দলের ওপর চাপ পড়তে দেননি আরেক ওপেনার জিসান আলম। সহজাত আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৩৫ বলে ৪২ রান করেন তরুণ ব্যাটসম্যান।
জিসানের বিদায়ের পর রানের গতি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। তৃতীয় উইকেটে ৩৯ রানের জুটি গড়তে ৭৬ বল খেলেন খালিদ হাসান ও মার্শাল আইয়ুব। ৫২ বলে ৩২ রান করে ফেরেন খালিদ। মার্শালের ব্যাট থেকে আসে ৬৩ বলে ৩৫ রান।
পরে অন্য ব্যাটসম্যানদের থেকে তেমন সহায়তা পাননি ইরফান। তবু বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করতে থাকেন তিনি। ৪৪ বলে তিনি করেন পঞ্চাশ রান। সেখান থেকে লিস্ট 'এ' ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি ছুঁতে খেলেন আর ৩৭ বল। সব মিলিয়ে ৮৮ বলের ইনিংসে ১২ চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা মারেন তিনি।
শাইনপুকুরের ইনিংসে রান আউট হন ৪ ব্যাটসম্যান। এর মধ্যে রবিউল হক ডাইভ দিয়ে নিজের উইকেট বাঁচানোর চেষ্টায় আঘাত পান মাথায়। তার কনকাশন বদলি হিসেবে নামেন মুকিদুল ইসলাম। ৮ ওভারে স্রেফ ১১ রানে ১ উইকেট নেন এই পেসার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৫৬/৯ (তানজিদ ২, জিসান ৪২, খালিদ ৩২, মার্শাল ৩৫, ইরফান ১০৬*, আকবর ৫, রবিউল ১৪, রিশাদ ০, মুরাদ ৮, নাঈম ২*; আল আমিন ১০-০-৫৪-১, হালিম ৯-১-৩৭-০, শুভাগত ১০-০-৫২-১, শহিদুল ৮-১-৩৯-১, মাশরাফি ১০-০-৫২-১, মুমিনুল ৩-০-১৮-১)
লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৫০ ওভারে ১৮৯/৯ (তৌফিক ১৯, সাদমান ৫, মুমিনুল ০, ইমরানউজ্জামান ১৪, আমিনুল ৩৪, শামীম ৪, শুভাগত ৯, শহিদুল ২, মাশরাফি ৯, হালিম ৬০*, আল আমিন ২২*; নাহিদ ৮-৩-১১-৩, নাঈম ১০-১-৬১-২, মুরাদ ১০-১-৩৬-১, মুকিদুল ৮-১-১১-১, রিশাদ ১০-৩-৩১-২, তানজিদ ১-০-৮-০, জিসান ৩-০-২৪-০)
ফল: শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ৬৭ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ইরফান শুক্কুর