বিপিএল
ব্যাটিং ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় কোচ শন টেইটের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন আলিস আল ইসলাম, দুই বল পরই নাটকীয়ভাবে মাঠে ফিরে শেষ বলে বাউন্ডারিতে চিটাগংকে জেতান তিনি।
Published : 06 Feb 2025, 08:09 AM
ফিজিওর সঙ্গে যখন মাঠ ছেড়ে যাচ্ছিলেন আলিস আল ইসলাম, চিটাগং কিংসের সম্ভাবনাও বেরিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছিল। পায়ের চোটের সঙ্গে তখন তার মনের চোটও অপেক্ষায়। কিন্তু নাটকীয়ভাবে দুই বল পরই তার সামনে সুযোগ এলো নায়ক হওয়ার। স্পিনার আলিস এ দিন দলকে জেতালেন শেষ বলের বাউন্ডারিতে।
খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে রান তাড়ায় যখন ক্রিজে যান আলিস, চিটাগংয়ের সামনে তখন বেশ কঠিন সমীকরন। তিন ওভারে তাদের প্রয়োজন ৩৪ রান। উইকেটে তখন তার সঙ্গী আরাফাত সানি। ব্যাটিং জানা তেমন কেউ বাইরে ছিলেন না অপেক্ষায়। দুই স্পিনার সানি আর আলিসই ব্যাট হাতে চমকপ্রদ লড়াইয়ে শেষ ওভারে নিয়ে যান ম্যাচের ভাগ্য।
শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৫ রানের। তরুণ পেসার মুশফিক হাসানের বলে আরাফাত সানির দুর্দান্ত ফ্লিকে বাউন্ডারিতে শুরু হয় ওভার। দ্বিতীয় বলে টাইমিং ঠিকঠাক না হলেও দুই রান পায় চিটাগং। তৃতীয় বলেও দুই রান হতে পারত। তবে সিঙ্গেল নেওয়ার পরই ক্রিজে পড়ে যান আলিস। চোট পান তিনি পায়ে। মাঠেই কিছুক্ষণ চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি চলে যান বাইরে।
নতুন ব্যাটসম্যান শরিফুল ইসলাম ক্রিজে নেমে প্রথম বলেই আদায় করে নেন বাউন্ডারি। তবে তার ইনিংসও শেষ দ্বিতীয় বলেই।
১১ নম্বর ব্যাটসম্যান বিনুরা ফার্নান্দো তৈরিই ছিলেন ব্যাট হাতে। তবে লঙ্কান এই পেসারকে নামতে হয়নি ব্যাটিংয়ের পরীক্ষায়। দ্রুত কোনোরকমে প্যাড পায়ে গলিয়ে আবার নেমে যান আলিস। শেষ বলটি বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে খ্যাপাটে উল্লাসে মেতে ওঠেন তিনি ও তার সতীর্থা।
শেষ ওভারে আলিসের চোট ঘিরে যা হচ্ছিল তখন চিটাগংয়ের ডাগআউটে, পরে তা খোলাসা করেন এই ম্যাচে ফিফটি করা ওপেনার খাওয়াজা নাফে।
“শন স্যার (কোচ শন টেইট) জিজ্ঞেস করছিলেন যে, ‘কেন তুমি ফিরে আসছো?’ আলিস বলছিলেন যে, ‘আমার পা মচকে গেছে।’ বেশ কষ্ট হচ্ছিল তার। দৌড়াতে পারছিলেন না, রান নিতে পারছিলেন না। এজন্য সে চলে আসে।”
“শরিফুল গিয়ে একটি চার মেরেই আউট হয়ে যায়। আলিস যেহেতু একটু-আধটু ব্যাটিং পারে, আমাদের কাছে এটাই ছিল একমাত্র উপায়। আলিসকে আমরা বলেছিলাম, ‘আপনি যান, (দৌড়ে) রান না হোক, চার হোক। শেষ বলে চার রানই দরকার ছিল, ডাবলস নেওয়ার ব্যাপার ছিল না।”
চিটাগং অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন যখন বিদায় নিলেন, ১৭ ওভার শেষে দলের রান তখন ৭ উইকেটে ১৩০। লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে তিন ওভারে ৩৮ রানের প্রয়োজন মেটানোকে কঠিন বললেও কম বলা হয়। তবে নাফের দাবি, আলিসের ব্যাটিং সামর্থ্যে আস্থা ছিল দলের।
“আলিসের ওপর পুরো ভরসা ছিল দলের। কারণ, আগের কিছু ম্যাচে উনি সিঙ্গল-ডাবলস নিয়েছেন। আমাদের এই ভরসা তাই ছিল যে, কোনো না কোনোভাবে সে চার মারতেও পারে, এমনকি ছক্কা মারতে পারে। কিছুটা ভরসা তাই ছিল যে, সে পারবে।”