“আবাসন সমস্যা সমাধানে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এগিয়ে এসেছে; শর্ত মোতাবেক আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও একমত হয়েছি,” বলেন উপাচার্য।
Published : 10 Dec 2024, 07:02 PM
শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আবাসন সমস্যা সমাধানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অস্থায়ী উদ্যোগের পরিকল্পনায় এগিয়ে এসেছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
প্রাথমিকভাবে ৭০০ শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করতে এ ফাউন্ডেশন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে। কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে স্থায়ী হল নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সেখানে আবাসিক সুবিধা পাবেন।
মঙ্গলবার সকালে উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সাব্বির আহমাদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন ওই এমওইউতে সই করেন। আস-সুন্নাহর চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ ও উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
পরে আহমাদুল্লাহ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০০ শিক্ষার্থীর জন্য প্রাথমিকভাবে আবাসনের ব্যবস্থা করব। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার-দাবারসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করবে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
“শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ১০০ কম্পিউটার নিয়ে একটি ল্যাব থাকবে। আগামী বছরের এপ্রিল মাস থেকেই আমরা পুরোদমে কাজ শুরু করব।”
প্রাথমিকভাবে ছেলেদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা অচিরেই মেয়েদের জন্যেও হলের ব্যবস্থা করব। কারণ ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের অভিভাবকরা বেশি দুশ্চিন্তায় থাকেন।
“আমরা একটা সময় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করছি। সেক্ষেত্রে অন্যান্য দাতা প্রতিষ্ঠান আমাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করলে বিষয়টি আরও সহজ হবে।”
অস্থায়ী আবাসনে সব ধর্মের শিক্ষার্থীরাই জায়গা পাবে জানিয়ে আহমাদুল্লাহ বলেন, “হলের ভেতরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে আমরা বিরত রাখার চেষ্টা করব।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক ভবন থেকে শুরু করে হল সংকটসহ নানা সমস্যা রয়েছে। এগুলো সমাধানে ঢাকার কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা ঝুলে আছে।
ছয় বছরেও নির্মাণ কাজের তেমন অগ্রগতি না থাকায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীকে দেওয়ার দাবি জানায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাতে সায় দিলেও এখনও বিষয়টি সুরাহা হয়নি। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা সমাধানে অস্থায়ী উদ্যোগের পথে হাঁটার কথা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলে আসছে।
বাসা ভাড়া নিয়ে আবাসন সংকটের সমাধান ও পুরনো জেলখানার পাশের জমিতে ভবন নির্মাণে দাতা খোঁজার পরিকল্পনার কথাও এর আগে বলেছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম।
আস-সুন্নাহর সঙ্গে এমওইউ সইয়ের পর উপাচার্য বলেন, “আমাদের অন্যতম পরিকল্পনা ছিল কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়া। অর্থাৎ তাদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যার সমাধান করা যায় কিনা।
“আজকে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এগিয়ে এসেছে। তাদের সঙ্গে চুক্তির শর্ত মোতাবেক আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও একমত হয়েছি। এই মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”
জগন্নাথের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিয়ে আন্দোলনের সংগঠক শিক্ষার্থী একেএম রাকিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আবাসনের যে ব্যবস্থা করছে, তা প্রশংসার। তবে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিয়ে প্রশাসনের তেমন কোনো অগ্রগতি দেখছি না।”
এমওইউ সইয়ের অনুষ্ঠানে জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক আনোরুস সালাম, ছাত্র উপদেষ্টা এবং প্রক্টর অধ্যাপক মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক উপস্থিত ছিলেন।
পুরনো খবর-
জগন্নাথের পথে তবু অনিশ্চয়তার কাঁটা
জগন্নাথের নতুন ক্যাম্পাসের 'কাজ পাচ্ছে' সেনাবাহিনী
জগন্নাথের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরের দাবি শিক্ষার্থীদের