‘দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা ঢাকা’, 'আগরতলায় হামলা কেন/হাই কমিশনে হামলা কেন? দিল্লি তুই জবাব দে', ‘গোলামি না আজাদী? আজাদী আজাদী'– ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা।
Published : 03 Dec 2024, 01:11 AM
ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
সোমবার রাত ৯ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে এ প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর প্রদক্ষিণ করে এসে আবার রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
এ সময় তারা, ‘দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা ঢাকা’, 'আগরতলায় হামলা কেন/হাই কমিশনে হামলা কেন? দিল্লি তুই জবাব দে', ‘গোলামি না আজাদী? আজাদী আজাদী'– ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মিছিল শেষে সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আশরেফা খাতুন বলেন, "রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়াতে হয় কখনো হাসিনার বিরুদ্ধে, কখনো ভারতের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের সময় আমরা দেখেছি তারা সবসময় দালালি করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার দিল্লির দাবার গুটি ছিল।"
তিনি বলেন, "দিল্লির ক্ষমতা এত বেশি ছিল যে একটা পোস্টের কারণে একটা মানুষকে প্রাণ দিতে হয়। এখন নতুন বাংলাদেশ। আমরা কারো আধিপত্য চাই না। বাংলাদেশের মানুষ শরীরে রক্ত থাকতে ভারতের আধিপত্য মেনে নেবে না।"
ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "আপনারা যদি মনে করেন বাংলাদেশ নতজানু হয়ে থাকবে, আপনারা ভুল করছেন। আপনারা কখনো বাংলাদেশের বন্ধু ছিলেন না। আমাদের বিষয়ে নাক গলাবেন না। যদি সীমানা পেরিয়ে পা বাড়ানোর চেষ্টা করেন, মনে রাখবেন বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ সজাগ আছে।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী বলেন, "আমরা কখনোই দিল্লির গোলামী মানি না, মানব না, ভারতকে নতুন করে সভ্যতা শেখাতে হবে। তারা আমাদেরকে জ্ঞান দিতে আসে। ভারতকে স্পষ্ট বার্তা, তোমরা নিজেদেরকে বাঁচাও।
"আমরা এই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বলতে চাই, প্রত্যেকের পরিচয় এক। আমরা সবাই বাংলাদেশি। এইখানে বারবার সংখ্যালঘু কার্ড খেলা চলবে না।"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার ভারতের উদ্দেশে বলেন, "এদেশে আর আওয়ামী লীগের ক্ষমতা নেই৷ সুতরাং তারা যেন আওয়ামী লীগ আমলের মত করে এদেশে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা না করে।
“আমরা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়েছি, পাকিস্তানের বৈষম্যনীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। দেশের প্রশ্নে আমরা আবারও লড়াইয়ে নামতে রাজি আছি। শরীরে এক ফোটা রক্ত থাকা পর্যন্ত আমরা ভারতের আধিপত্য মেনে নেব না। যেভাবে আমরা হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি সেভাবেই আমরা দিল্লির আগ্রাসনও রুখে দেব।"
সমাবেশের এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল থেকে এক দল শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হয়।
ভারতকে সমর্থনের প্রশ্নে জগন্নাথ হল নিয়ে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগ নাকচ করে হলের শিক্ষার্থী জয় পাল বলেন, "আমরা সবাই বাংলাদেশি। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা জাত পাত সব ভুলে আমাদের পরিচয়, আমরা বাংলাদেশি।
“আমরা দেখেছি বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় সনাতনীদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ভারতে বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনের ওপর যে ন্যক্কারজনক হামলা হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা শুধু জগন্নাথ হলই নয়, সারা বাংলাদেশের মানুষকেই জানাতে হবে।”
তিনি বলেন, "ভারত ইস্যুতে জগন্নাথ হল নিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন কথা বলা হয়। আমরা নাকি ভারতের দালাল। কিন্তু এই মিছিলে আজ জগন্নাথ হল থেকে সবচেয়ে বেশি লোক এসেছে। আমাদের একটাই পরিচয়, আমরা বাংলাদেশি।"